ন্যাভিগেশন মেনু

গণহত্যার জন্য পাকিস্তানকে আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমা চাইতে হবে:একে মোমেন


মহান স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনের দ্বারপ্রান্তে বাংলাদেশ। মুক্তিযুদ্ধের ৪৯ বছর পরও সেই সময়ের গণহত্যা, নৃশংসতা ও ঘৃণ্য ভূমিকার জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে এখনও ক্ষমা চায়নি পাকিস্তান সরকার। বাংলাদেশের জোরালো দাবি থাকলেও পাকিস্তানের ক্ষমতাসীন সরকারগুলো বারবার বিষয়টি এড়িয়ে গেছে।

দেশের বিশিষ্টজনদের মতে, ক্ষমা চাওয়ার বিষয়ে পাকিস্তানকে বিভিন্নভাবে চাপ প্রয়োগ করতে হবে। দাবি জোরালো করার পাশাপাশি প্রয়োজনে বিষয়টি নিয়ে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক আদালতে যেতে পারে বলেও মন্তব্য করেন তারা।

তাদের মতে, বাংলাদেশের কাছে পাকিস্তানের ক্ষমা চাওয়ার বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং ক্ষমা চাইতেই হবে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আবদুল মোমেন বলেন, ১৯৭১ সালে পাকিস্তান আমাদের ওপর যে অত্যাচার-নির্যাতন চালিয়েছে তার জন্য দেশটির সরকারের অবশ্যই ক্ষমা চাওয়া উচিত। কারণ এটা তাদের জন্যও লজ্জাজনক।

তাদের কোনো কোনো বুদ্ধিজীবী দুঃখ প্রকাশ করলেও পাকিস্তান সরকারিভাবে আজ পর্যন্ত ক্ষমা চায়নি। আমরা আশা করব, তাদের শুভবুদ্ধির উদয় হবে। তারা জাতীয়ভাবে বাংলাদেশের কাছে ক্ষমা চাইবে। এটা স্বীকার করে মাফ চাইলে আগামীতে আর কোনো দিন এ ধরনের ঘৃণ্য কাজ তারা করতে পারবে না।

তিনি আরও বলেন, সামনে আমরা স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তি উদযাপন করব। আমি মনে করি, তারা যদি সৎ হয় তাহলে অবশ্যই দুঃখপ্রকাশ করা এবং ক্ষমা চাওয়া দরকার। আশা করি পাকিস্তান সরকার এটা করবে।

বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালের (বিইউপি) বঙ্গবন্ধু চেয়ার ইতিহাসবিদ অধ্যাপক ড. সৈয়দ আনোয়ার হোসেন বলেন, একাত্তরের ভূমিকার জন্য পাকিস্তানের ক্ষমা চাওয়ার বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। জাপান কোরিয়ার সঙ্গে যা করেছিল তার জন্য ক্ষমা চেয়েছে। আর একাত্তরে পাকিস্তানের নৃশংসতার প্রচুর দালিলিক প্রমাণ আছে।

পাকিস্তান সরকারের নিজেকে দায় মুক্ত করতে হলেও অন্তত নৈতিক দিক থেকেও তাদের ক্ষমা চাওয়া উচিত।তিনি আরও বলেন, এ ব্যাপারে বাংলাদেশ সরকারেরও জোরালো ভূমিকা থাকা দরকার। শিক্ষাবিদ অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, পাকিস্তানের ক্ষমা তো চাইতেই হবে।

এ দাবিটা তো আমরা কখনই ছাড়ব না। ইতিহাসে এমন ঘৃণ্য ও নৃশংস কাজ আগে কখনই হয়নি। তবে পাকিস্তানের জনগণের সঙ্গে আমাদের কোনো শত্রুতা নেই। তাই তাদের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক থাকতে পারে কিন্তু ক্ষমা তাদের চাইতেই হবে। না হলে ইতিহাসও তাদের ক্ষমা করবে না। একই সঙ্গে যে চিহ্নিত ১৯৫ জন যুদ্ধাপরাধী, তাদের বিচার একদিন আমরা করতে পারব বলে আমি বিশ্বাস করি। এদিকে বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকেও পাকিস্তানকে ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।

বাংলাদেশের কাছে পাকিস্তানের রাষ্ট্রীয়ভাবে ক্ষমা চাওয়ার দাবিতে মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ দেশটির প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে স্মারকলিপি দিয়েছে। পাকিস্তান দূতাবাসের মাধ্যমে সোমবার এটি দেয়া হয়।

এছাড়া মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান সেনাবাহিনীর নৃশংস গণহত্যার দায় স্বীকার করে ইসলামাবাদকে বাংলাদেশের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন লন্ডন প্রবাসী সাংবাদিকরা।

শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে সোমবার ব্রিটেনের বাংলা সংবাদ মাধ্যমকর্মীদের প্রতিনিধিত্বকারী সংগঠন ইউকে-বাংলা প্রেস ক্লাবের উদ্যোগে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে দেয়া এক স্মারকলিপিতে এ দাবি জানানো হয়।

এস এস