ন্যাভিগেশন মেনু

প্রবীণদের চেয়ে শিশুরা কম আক্রান্ত হয় কোভিডে!


কোভিড-১৯-এ প্রবীণদের তুলনায় শিশু ও অল্পবয়সিরা কম আক্রান্ত হচ্ছে বলে সাম্প্রতিক এক গবেষণায় দেখা গেছে।

প্রবীণদের চেয়ে তুলনায় কেন কম সংখ্যায় শিশু ও অল্পবয়সিরা আক্রান্ত হচ্ছে কোভিডে, তার ব্যাখ্যা দিয়েছে এই গবেষণা। গবেষণাপত্রটি প্রকাশিত হয়েছে আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান-জার্নাল ‘জার্নাল অব ক্লিনিক্যাল ইনভেস্টিগেশন’-এ।

গবেষণায় একটি প্রশ্ন তুলে ধরেন গবেষকরা। সার্স-কোভ-২ ভাইরাসের সংক্রমণে সহায়ক বিশেষ ধরনের প্রোটিন শিশুদের শরীরে কম মাত্রায় আছে বলেই কি প্রবীণদের চেয়ে তুলনায় কম সংখ্যায় কোভিডে সংক্রমিত হয় শিশুরা? অল্পবয়সিরা?

গবেষণায় এই প্রশ্নের ব্যাখ্যা দিয়েছেন গবেষকরা। এই আন্তর্জাতিক গবেষকদলে রয়েছেন আমেরিকার ভ্যানডারবোল্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিক্যাল সেন্টারের অধ্যাপকরাও।

সে ক্ষেত্রে প্রবীণদের শরীরে এই বিশেষ ধরনের প্রোটিনকে বেঁধে বা আটকে (‘ব্লক’) ফেললে কোভিড সংক্রমণ কমানো যায় কি না, এই গবেষণা সেই পথেরও দিশা দেখালো বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞদের একাংশ। যা আগামী দিনে কোভিড রোগীদের চিকিৎসায় সহায়ক হয়ে উঠতে পারে।

বিশেষ ধরনের প্রোটিনটি থাকে আমাদের ফুসফুসের বাইরের কোষগুলিতে। এটা জানা ছিল; এই প্রোটিন প্রবীণদের চেয়ে কম মাত্রায় থাকে শিশুদের ফুসফুসের বাইরের কোষগুলিতে।

গবেষকরা দেখেছেন, ফুসফুসে সংক্রমণ ঘটানোর জন্য এই বিশেষ ধরনের প্রোটিনেরই সাহায্য নেয় কোভিড-১৯ ভাইরাস। বিজ্ঞানের পরিভাষায় যা সার্স-কোভ-২। এদের বলা হয় রিসেপ্টর প্রোটিন। এরাই কোভিড-১৯ ভাইরাসকে গোটা ফুসফুসে ছড়িয়ে পড়তে সাহায্য করে। শিশুদের শরীরে এই প্রোটিন কম মাত্রায় থাকে বলেই কেভিড-১৯ ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার জন্য প্রবীণদের ক্ষেত্রে যে সুবিধাটা পায়, তুলনায় তা অনেক কম পায় শিশু ও অল্পবয়সিদের ক্ষেত্রে।

‘‘তাই শিশুরা কম সংখ্যায় আক্রান্ত হচ্ছেন কোভিডে’’, দাবি গবেষকদের।

অনেক রকমের প্রোটিন থাকে আমাদের শরীরে। তাদের মধ্যে অন্যতম ‘টিএমপিআরএসএস-২’। এটাও এক ধরনের রিসেপ্টর প্রোটিন।

সার্স-কোভ-২ ভাইরাসের যে স্পাইকগুলি থাকে, গবেষকরা দেখেছেন, সেগুলির কিছুটা কাটছাঁট করে এই টিএমপিআরএসএস-২ রিসেপ্টর প্রোটিনটি কোভিড-১৯ ভাইরাসকে আমাদের ফুসফুসের বাইরের দিকের কোষগুলির প্রাচীর ভাঙতে সাহায্য করে। এই প্রোটিনও প্রবীণদের চেয়ে কম মাত্রায় থাকে শিশু ও অল্পবয়সিদের ফুসফুসে।

এই প্রোটিনটি আবার প্রস্টে়ট ক্যানসারেরও সহায়ক। তাই এই প্রোটিনটিকে কীভাবে আটকে দেওয়া যায় বা বেঁধে ফেলা যায় তা নিয়ে গবেষণা চালাচ্ছেন প্রস্টেট ক্যানসারের গবেষকরা।

ভ্যানডারবোল্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের দাবি, কোভিড সংক্রমণ রক্ষার ক্ষেত্রেও এবার এই প্রোটিনটিকে টার্গেট করতে পারবেন বিজ্ঞানীরা ও ওষুধ সংস্থাগুলিও।  সূত্র- আনন্দ বাজার

এস এ/এডিবি