ন্যাভিগেশন মেনু

ফাইজারের টিকা কবে মিলবে সিদ্ধান্ত হয়নি


করোনার বিরুদ্ধে কড়া লড়াই করে যাচ্ছে বাংলাদেশ। মধ্য মে অবধি এই সাফল্য ধরে রাখা গেলেও এ সময় মানুষ ঈদে বাড়ি যেতে বাস-ট্রেন-লঞ্চ না পেয়ে সামাজিক দূরত্ব না মেনে ছোট ছোট যানবাহনে করে গ্রামের বাড়ি গিয়েছেন।

এতে করে করোনা সংক্রমণ বেড়ে গিয়েছে আশঙ্কাজনকভাবে। দিনে মৃত্যুহার ১৫-এ নেমে আসলেও এখন ৩০ নীচে নামছে না মৃত্যুহার। শনিবার মারা গিয়েছেন ৩৮ জন। অর্থাৎ প্রতিদিনই মৃত্যু হার বাড়ছে। সেইসঙ্গে চলছে টিকা সংকট। ভারতের সেরাম থেকে বরাত অনুযায়ী টিকা না আসায় একটা সংকট সৃষ্টি হয়েছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সূত্রমতে, এ পর্যন্ত দেশে টিকা এসেছে সেরাম থেকে কেনা অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার ৭০ লাখ ডোজ। তাগিদ দেওয়া হয়েছিল তিন কোটি ডোজ টিকা।

একই প্রতিষ্ঠানে তৈরি একই টিকার আরও ৩৩ লাখ ডোজ ভারতের পক্ষ থেকে বাংলাদেশকে উপহার দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে চিন সরকারের পক্ষ থেকে উপহার পাওয়া গেছে সিনোফার্মের ৫ লাখ ডোজ টিকা। এরপর আরও ৬ লাখ ডোজ টিকা উপহার দেবে বলে জানিয়েছে চিন।

দেশে শনিবার (২৯ মে) পর্যন্ত করোনাভাইরাসের টিকার প্রথম ডোজ (অক্সফোর্ডের) দেওয়া হয়েছে ৫৮ লাখ ২০ হাজার ১৫ জনকে। একই টিকার দ্বিতীয় ডোজ নিয়েছেন ৪১ লাখ ৪২ হাজার ২৫৫ জন। এছাড়া চিনের সিনোফার্মের টিকার প্রথম ডোজ নিয়েছেন এক হাজার ২৩৯ জন।

সব মিলিয়ে এ পর্যন্ত দেশে টিকা দেওয়া হয়েছে ৯৯ লাখ ৬৩ হাজার ৫০৯ ডোজ। এখন টিকা হাতে আছে অক্সফোর্ড ও সিনোফার্মেরসহ মোট সাত লাখ ৩৫ হাজার ডোজের মতো।

এদিকে কোভ্যাক্স থেকে করোনা ভাইরাস প্রতিরোধী ফাইজার বায়োএনটেকের টিকার প্রথম চালান বাংলাদেশে আসছে আজ রবিবার (৩০ মে) রাত ১১টা ২০ মিনিটে। ফাইজারের এক লাখ ৬২০ ডোজ টিকা দেশে পৌঁছাবে কাতার এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে।তবে কবে নাগাদ এবং কাদের এই টিকা দেওয়া হবে সে বিষয়ে এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।

টিকাদান সংক্রান্ত জাতীয় কমিটি এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানাবেন। দরিদ্র দেশগুলোর টিকা প্রাপ্তি নিশ্চিত করতে গঠন করা হয়েছে আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্ম কোভ্যাক্স।বাংলাদেশ করোনাভাইরাস সংক্রমণ মোকাবিলায় ১৩ কোটির বেশি মানুষকে টিকাদান কর্মসূচির আওতায় আনার পরিকল্পনা নিয়েছে।

কোভ্যাক্স থেকে ছয় কোটি ৮০ লাখ ডোজ টিকা পাওয়ার আশা করছে বাংলাদেশ।চলতি বছরের জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারির মধ্যেই কোভ্যাক্স থেকে টিকা পাওয়া শুরু হওয়ার কথা থাকলেও করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে বিশ্বজুড়ে টিকার সংকট তৈরি হওয়ায় তা পিছিয়ে যায়।

এদিকে ভারতে সংক্রমণের হার বৃদ্ধির কারণে দেশটির সঙ্গে স্থলসীমান্ত বন্ধের সময়সীমা আরও বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ। আগের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ৩১ মে পর্যন্ত সীমান্ত বন্ধ থাকার কথা থাকলেও নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আগামী ১৪ জুন পর্যন্ত ভারতের সঙ্গে স্থলসীমান্ত বন্ধ থাকবে। বিশেষ করে ভারতে  করোনাভাইরাস বাড়বাড়ন্তের কারণে এ ঢাকা সিদ্ধান্ত নিয়েছে।  তদুপরি দেশেও করোনা সংক্রমণ ও মৃত্যুহার সম্প্রতি বেড়ে গিয়েছে।

এটা হয়েছে মূলত: গত ঈদের সময় ঢাকাত্যাগে নিরুৎসাহিত করতে সরকারি নির্দেশে বাস-ট্রেন-লঞ্চ বন্ধ থাকায় মানুষ সামাজিক দূরত্ব উপেক্ষা করে গাদাগাদি করে ছোট ছোট যানবাহনে গ্রামের বাড়িতে গিয়েছেন এবং ফিরেছেনও একইভাবে।

সরকারের এ সিদ্ধান্তের কারণে হিতে বিপরীত হয়েছে। বেড়ে গিয়েছে করোনার হানা।  এমন অবস্থায় করোনা সংক্রমণ রোধে শনিবার রাতে বিদেশ মন্ত্রক সূত্র জানায়, ‘ভারতের সঙ্গে স্থলসীমান্ত বন্ধ নিয়ে বৈঠকে শনিবার সিদ্ধান্ত হয়েছে, আরও ১৪ দিনের জন্য সীমান্ত বন্ধের মেয়াদ বলবৎ থাকবে।’

ওই বৈঠকে দেশের উত্তর জনপদ জেলা চাঁপাইনবাবগঞ্জের সোনামুখী বন্দর নিয়ে বাংলাদেশিদের ভারত থেকে ফেরা বন্ধের সিদ্ধান্ত হয়েছে।কেননা  চাঁপাইনবাবগঞ্জে করোনা সংক্রমণ বেশি দেখা যাচ্ছে। তাই আপাতত সোনামুখী বন্দর নিয়ে বাংলাদেশিদের দেশে ফেরা বন্ধের সিদ্ধান্ত হয়েছে। তবে ওই বন্দর দিয়ে এখন পর্যন্ত মাত্র ৮৮ জন দেশে ফিরেছেন। সবাই ওখানে কঠোর কোয়ারেন্টিনে রয়েছেন।

উল্লেখ্য, ভারতের করোনার পরিস্থিতি খারাপ হওয়ার জন্য গেলো ২৬ এপ্রিল দেশটির স‌ঙ্গে ১৪ দি‌নের জন্য সকল ধরণের স্থল-সীমান্ত বন্ধ ক‌রে বাংলা‌দেশ। এরপর পর্যায়ক্রমে বাড়ানো হয়।

এস এস