ন্যাভিগেশন মেনু

ফের জঙ্গীদের হামলার টার্গেট সিলেট মাজার, ভার্সিটির ছাত্রসহ আটক ৫


ফের জঙ্গিদের হামলার টার্গেট ছিল সিলেটে জেলার হযরত শাহজালাল (রহ.) মাজারটি।জঙ্গিরা এই মাজারে বছর ১৫ আগে গ্রেনেড হামলা চালিয়েছিল। 

সেবার তাদের লক্ষ্য ছির বাংলাদেশে নিযুক্ত বৃটিশ হাইকমিশনার আনোয়ার চৌধুরীকে খতম করা। অর্থাৎ দুই দেশের সম্পর্ক বিনষ্ট করা। আনোয়ার চৌধুরী মাজারে গিয়েছিলেন প্রার্থনা করতে। 

আর জঙ্গিরা সেটাকে টার্গেট করেছিল। তবে কয়েকজন মারা গেলেও আনোয়ার চৌধুরী সামান্য জখম হয়েছিলেন।  এবার জঙ্গিদের হামলার পরিকল্পনা ছিল দেশকে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি করা।বিশ্বে শেখ হাসিনা সরকারকে অপ্রিয় করা। 

এ জন্য তারা প্রস্তুতিও নিচ্ছিল। খুব শিগিগরই তারা এ হামলা চালাতে চেয়েছিল। হামলার জন্য জঙ্গিদের অপারেশনাল টিমও নির্ধারণ হয়েছিল। এর আগে গত ২৬ জুলাই এই টিম ঢাকায় গুলিস্তানে এক সার্জেন্টের মোটরসাইকেলের ঝুড়িতে গ্রেনেডসদৃশ বোমা রেখেছিল। 

এর পর ঘটনাস্থলের আশেপাশের সিসি ক্যামেরার ভিডিও ফুটেজ পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট (সিটিটিসি) সংগ্রহ করে তদন্তে নামে। তদন্তে দেখতে পায় যে চার-পাঁচ জন সদস্য সার্জেন্টের মোটরসাইকেলে কীভাবে বোমা রাখতে হয়, সেটা রেকি করছে। 

এর পরই পুলিশ সারাদেশে জঙ্গি হামলার ব্যাপারে সতর্কতা জারি করে। তদন্ত করে সিলেটে জঙ্গিদের এই টিমের অবস্থান শনাক্ত করে কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট।

সিটিটিসির একটি সূত্র জানায়, গত সোমবার দিবাগত রাত ১টা থেকে মঙ্গলবার ভোর পর্যন্ত সিটিটিসি এবং পুলিশ সদরদপ্তরের ‘ল ফুল ইন্টারসেপশন সেলে’র (এলআইসি) একটি দল সিলেটের নগরীর মিরাবাজারের উদ্দিপনের ৫১ নম্বর বাসা থেকে পাঁচ জনকে গ্রেফতার করে।

এদের মধ্যে এক জন হলেন, নব্য জেএমবির সিলেট আঞ্চলিক কমান্ডার ও শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। তার নাম নাইমুজ্জামান। 

তাকে গ্রেফতারের পর শহরতলির বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়ে আরো চার জনকে গ্রেফতার করা হয়। তাদের মধ্যে সাদি নামে অপর একজন শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। আর সায়েম লেখাপড়া করেন সিলেট সরকারি মদনমোহন চাঁদ কলেজে। অন্য দুই জনের পরিচয় গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত জানাতে পারেনি সিটিটিসি।

সিটিটিসির উপকমিশনার সাইফুল ইসলাম জানান, গুলিস্তানে সার্জেন্টের মোটরসাইকেলে বোমা রাখার ঘটনাটি তদন্ত করা হচ্ছে। এর পাশাপাশি গত বছর পল্টনে পুলিশের ওপর বোমা হামলার ঘটনায় দায়ের করা মামলার তদন্ত চলছে। 

এই দুই ঘটনা তদন্ত করতে গিয়ে বোমা হামলার ঘটনায় জড়িতদের বিষয়ে খোঁজ পায় সিটিটিসি। এরপর সিলেটে অভিযান চালানো হয়। পরে সিলেটের মিনাবাজার, টুকের বাজার এবং দক্ষিণ সুরমা এলাকায় পৃথক অভিযান চালিয়ে পাঁচ জনকে গ্রেফতার করা হয়।

উপকমিশনার আরো জানান, যাদের গ্রেফতার করা হয়েছে তাদের ঢাকায় আনা হচ্ছে। তাদের আদালতে তোলা হবে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ডের আবেদন করা হবে। 

পল্টন হামলাসহ আরো কোনো হামলায় তাদের সম্পৃক্ততা আছে কি না, সেটিও খতিয়ে দেখা হবে। সিটিটিসির একটি সূত্র জানায়, গ্রেফতার হওয়া নাইমুজ্জামান পুলিশকে জানিয়েছে, তাদের সিলেটে হযরত শাহজালাল (রহ.) মাজারে হামলার পরিকল্পনা ছিল। তারা ইতিমধ্যে প্রস্তুতিও নিয়ে রেখেছিল। ওই হামলা কখন হবে, কীভাবে করা হবে এর জন্য তাদের অপারেশনাল টিমও নির্ধারণ করা হয়েছিল। 

তবে গ্রেফতারের কারণে তাদের সহযোগীরা আত্মগোপনে চলে গেছে। তাদের কাছ থেকে আরো বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য মিলেছে। এসব তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশ নজরদারি বাড়িয়েছে।

এস এস