ন্যাভিগেশন মেনু

বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের ভার্চুয়াল সমাবেশে পররাষ্ট্রমন্ত্রী


বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসকে ঢাকায় না পেলেও শীঘ্রই তাদের শুভেচ্ছা বার্তা পাওয়া যাবে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে এ মোমেন।

রবিবার (২১ মার্চ ) বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে যুক্তরাষ্ট্র বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের ভার্চুয়াল সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে একথা বলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

এ উপলক্ষে ইতোমধ্যেই মার্কিন কংগ্রেসে একটি রেজ্যুলেশন উত্থাপিত হয়েছে। বেশ ক'টি স্টেটের গভর্ণর এবং পার্লামেন্টের প্রক্লেমেশন, ঘোষণাপত্র এবং রেজুলেশনে বাঙালি জাতিকে স্বাধিকার প্রদানে বঙ্গবন্ধুর অসাধারণ নেতৃত্বের প্রশংসা করেছে।

বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা রচনায় তাঁর কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে অদম্য গতিতে এগিয়ে চলছে বাংলাদেশ-সে কথাও উচ্চারিত হয়েছে । এ জন্যে মার্কিন রাজনীতিক এবং প্রবাসীদের ধন্যবাদ জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেন।

উল্লেখ্য, ইতোমধ্যেই জর্জিয়া, নিউ হ্যামশায়ার এবং নিউজার্সি স্টেট পার্লামেন্ট এবং স্টেট গভর্ণররা বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে ঘোষণাপত্র, সম্মাননাপত্র এবং রেজ্যুলেশন করেছে। নিউইয়র্ক, ইলিনয়, লুইজিয়ানা স্টেটের রেজ্যুলেশন প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। সম্মিলিতভাবে এসব উদ্যোগে রয়েছে বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন, যুক্তরাষ্ট্র সেক্টর কমান্ডারস ফোরাম, বঙ্গবন্ধু পরিষদ এবং বাংলাদেশ লিবারেশন ওয়ার ভেটার্ন্স’ ৭১ । সহায়তা দিচ্ছেন নিউইয়র্কে বাংলাদেশের কনসাল জেনারেল সাদিয়া ফয়জুননেসা। এজন্যে এ সমাবেশ থেকে সাদিয়াকে ধন্যবাদ জানানো হয়।

২১ মার্চ রাতে অনুষ্ঠিত এ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে পররাষ্ট্রমন্ত্রী রোহিঙ্গা প্রসঙ্গে উল্লেখ করে বলেন,  নিজ বসতভিটায় স্বেচ্ছায় রোহিঙ্গাদের ফিরে যাবার পরিবেশ তৈরীর জন্যে মায়ানমার প্রশাসনের ওপর আন্তর্জাতিক চাপ বৃদ্ধি কল্পে প্রবাসীদের সোচ্চার থাকতে হবে। নিজ নিজ এলাকার সিনেটর, কংগ্রেসম্যানসহ হোয়াইট হাউজের নীতি-নির্দ্ধারকদের সাথে দেন-দরবার চালাতে হবে বাংলাদেশের সামগ্রিক উন্নয়ন ও কল্যাণে।

ড. মোমেন বিশেষভাবে উল্লেখ করেন, মায়ানমার বাংলাদেশের শত্রু নয়, বরং বন্ধু। সেজন্যেই সবসময় চেষ্টা চালাচ্ছি শান্তিপূর্ণভাবে রোহিঙ্গাদের নিজ বসতভিটায় ফিরে যেতে।

ড. মোমেন বাংলাদেশের উন্নয়ন-অগ্রগতির কথা উল্লেখ করে বলেন, ‘আমরা সার্থক নেতৃত্ব পেয়েছি। যিনি ( শেখ হাসিনা) বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের পরিপূরক দেশ গড়তে নিরন্তরভাবে চেষ্টা করছেন। বাংলাদেশ এখন ‘ল্যান্ড অব অপরচ্যুনিটি’ হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। ইতোমধ্যেই অনেক প্রবাসী ফিরে গেছেন বিভিন্ন প্রকল্পে বিনিয়োগের জন্যে। বাংলাদেশ তাদেরকে নানা সুযোগ দিচ্ছে।’

হোস্ট সংগঠনের সভাপতি ড. মনসুর খন্দকার স্বাগত বক্তব্যে বলেন, স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তির মধ্য দিয়ে শেখ হাসিনার হাত ধরেই বাংলাদেশ আজ উন্নয়নশীল রাষ্ট্রে উন্নীত হয়েছে।

বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাদের মিয়া বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের উন্নয়ন-অগ্রগতির জয়ধ্বনি উঠেছে। এটি প্রবাসী হিসেবে আমাদেরকে মুগ্ধ করেছে।

নিউইয়র্কে বাংলাদেশের কনসাল জেনারেল সাদিয়া ফয়জুননেসা বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের মূলধারায় যত জোরালোভাবে সম্পৃক্ত হওয়া যাবে, ততোবেশি মাতৃভূমি বাংলাদেশের কল্যাণে অবদান রাখতে সক্ষম হবেন প্রবাসীরা। সিনেটর শেখ রহমান, স্টেট রিপ্রেজেনটেটিভ আবুল খান, সিটি কাউন্সিলম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা ড. নূরুন্নবীর পথ অনুসরণ করতে হবে সকল প্রবাসীকে। ’

শিকাগোতে বাংলাদেশের অনরারি কন্সাল জেনারেল মনির চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশের ইমেজ মহিমান্বিত করতে আমরা নানা কর্মসূচি নিয়েছি।

কাউন্সিলম্যান, বিজ্ঞানী এবং একুশে পদকপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা ড. নূরুননবী বলেন, বঙ্গবন্ধুর দেখানো পথে দিপ্ত প্রত্যয়ে হাঁটছে আজকের বাংলাদেশ। আর এটি সম্ভব হচ্ছে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার বিচক্ষণতাপূর্ণ নেতৃত্বের গুনে। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে প্রবাসীদের পক্ষ থেকে অভিবাদন রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনাকে।

যুক্তরাষ্ট্র সেক্টর কমান্ডারস ফোরামের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা রাশেদ আহমেদ বলেন, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের বাংলাদেশ রচনায় চলমান কার্যক্রমে প্রবাসীদের অকুণ্ঠ সমর্থন অব্যাহত রাখতে হবে।

যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক এম এ সালাম বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ এবং ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেওয়ার পাশাপাশি বাংলাদেশকে খাদ্যে উদ্বৃত্ত রাষ্ট্রে পরিণত করার কার্যক্রমের কথা শেখ হাসিনা ঘোষণার সময় যারা বিদ্রুপ করেছেন, এসব সংকল্পকে তামাশা হিসেবে উড়িয়ে দিতে চেয়েছেন, সময়ের ব্যবধান এবং সততায় উদ্ভাসিত শেখ হাসিনার নেতৃত্ব এখন সবকিছুকে বাস্তব করেছে। অবাক বিস্ময়ে তাকিয়ে অবলোকন করছে গোটাবিশ্ব।

নিউঅর্লিন্স ইউনিভার্সিটির ভাইস চ্যান্সেলর এবং মার্কিন রাজনীতির বিশ্লেষক ড. মোস্তফা সরোয়ার বলেন, বঙ্গবন্ধুর যোগ্য দৌহিত্র হিসেবে সজীব ওয়াজেদ জয় আবির্ভূত হয়েছেন বঙ্গবন্ধুর অনুপস্থিতিতে বাঙালির ত্রাণকর্তা হিসেবে। পাশে থেকে মা শেখ হাসিনাকে ডিজিটাল বিপ্লবের যুগোপযোগী পরামর্শ দিয়ে বাংলাদেশের উন্নয়ন-পরিকল্পনাকে বাস্তবায়নের পথ সুগম করছেন।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন, বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের সাংগঠনিক সম্পাদক আশরাব আলী খান লিটন, সাংগঠনিক সম্পাদক জিয়া করিম, প্রচার সম্পাদক লিটন চৌধুরী, দপ্তর সম্পাদক এ টি এম মাসুদ, ফাউন্ডেশনের খালেদা আকতার, সেক্টর কমান্ডারস ফোরামের কোষাধ্যক্ষ ও বিশ্ববাংলা টোয়েন্টিফোর টিভির চেয়ারম্যান আলিম খান আকাশ প্রমুখ।

নিউইয়র্কভিত্তিক সঙ্গীত শিক্ষার বিদ্যালয় ‘বহ্নিশিখা সঙ্গীত নিকেতনের প্রতিষ্ঠাতা ও সিইও সবিতা দাসের সুললিত কণ্ঠে বঙ্গবন্ধুকে নিবেদিত সঙ্গীত পরিবেশনের মাধ্যমে অনুষ্ঠান শেষ হয়।

সিবি/এডিবি