ন্যাভিগেশন মেনু

ববি’র ৭২ শতাংশ শিক্ষার্থী জুম-গুগল মিটে ক্লাসে আগ্রহী


ওবায়দুর রহমান, ববি সংবাদদাতা:

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) ৭১.৯৪ শতাংশ শিক্ষার্থী জুম-গুগল মিটের মত সফটওয়্যার ব্যবহার করে অনলাইনে ক্লাস করতে আগ্রহী।

অনলাইন ক্লাসের পুরোপুরি ব্যয় বহন করতে সমর্থ মাত্র ১৮ দশমিক ৩৮ শতাংশ শিক্ষার্থী। খরচ বহনে সমর্থ নয় এমন শিক্ষার্থী ৪২ দশমিক ৪১ শতাংশ এবং আংশিক খরচ বহন করতে পারবে এমন শিক্ষার্থী ৩৯ দশমিক ১৯ শতাংশ।

ইয়ুথ এন্ডিং হাঙ্গার, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় ইউনিট কর্তৃক পরিচালিত ‘বর্তমান প্রেক্ষাপটে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রমের প্রতিবন্ধকতা ও উত্তরণের উপায়’ শীর্ষক গবেষণায় এ চিত্র ফুটে উঠেছে। এ গবেষণা জরিপে ৬২০জন শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেন।

জরিপে দেখা যায়, অধিকাংশ শিক্ষার্থীর (৪৫.৪৮%) এলাকা থ্রি-জি নেটওয়ার্কের অধীনে। এছাড়া ফোর-জি ২৬.৪৫ শতাংশ এবং ওয়াইফাই আছে ১২.৭৪ শতাংশ শিক্ষার্থীর এলাকায়। 

নেটওয়ার্কের আওতায় থাকলেও ৩১.৮ শতাংশ শিক্ষার্থী ক্লাস করার মত সুবিধাজনক স্থানে ইন্টারনেট কানেকশন পান না। ফলে তাদের জন্য ক্লাস করা কষ্টসাধ্য। অনলাইনে ক্লাস করার জন্য স্মার্টফোন/ল্যাপটপের সুবিধা রয়েছে ৭৮.৮৭ শতাংশ শিক্ষার্থীর এবং ২১.১৩% শিক্ষার্থীর এগুলো নেই।

আবার অনেকের স্মার্টফোন জুম বা গুগল মিটের মত সফটওয়্যার ব্যবহার করে ক্লাস করার উপযোগী নয় এবং ওয়াইফাই সংযোগ না থাকায় ল্যাপটপ দিয়েও ক্লাসে অংশগ্রহণ করা সম্ভব নয়।

৭১.৯৪ শতাংশ শিক্ষার্থী জুম/গুগল মিটের মত সফটওয়্যার ব্যবহার করে অনলাইনে ক্লাস করতে আগ্রহী হলেও প্রায় এক তৃতীয়াংশ শিক্ষার্থী (২৮.০৬) অনলাইনে ক্লাস করার ব্যাপারে আগ্রহী নয়।

এতে দেখা যায়, ৬৪.৮৪% শিক্ষার্থী পারবারিক বিভিন্ন সমস্যা থাকার কারণে নিয়মিত অনলাইন ক্লাসে অংশগ্রহণ করতে পারবেন না। সর্বোপরি ফ্রি ইন্টারনেট সুবিধা প্রদান করা হলেও ৫.৬ শতাংশ শিক্ষার্থী অনলাইনে ক্লাস করতে পারবেন না বলে জানিয়েছেন।

অনলাইন ক্লাসের  প্রতিবন্ধকতা উত্তরণকল্পে শিক্ষার্থীদেরকে শর্তসহ বা বিনাশর্তে স্মার্টফোন/ল্যাপটপ প্রদান করা, ফ্রি ইন্টারনেট সুবিধা প্রদান করার লক্ষ্যে শিক্ষার্থীদেরকে নিয়মিত আর্থিক সুবিধা প্রদান করা, জুম বা গুগল মিটের মত সফটওয়্যার ব্যবহার করে সরাসরি ক্লাস নেওয়ার পাশাপাশি লেকচারের ভিডিও রেকর্ড প্রদান প্রয়োজন।

এচাড়া পাওয়ার পয়েন্ট স্লাইড প্রদান, ইউটিউব বা ফেইসবুকের ক্লোজ গ্রুপে ক্লাশ নেওয়া এবং হ্যান্ড/ওয়ার্ডনোট প্রদান করা, যখন তখন ক্লাস না নিয়ে ক্লাস নেওয়ার ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট রুটিন অনুসরণ করা, বিশেষত রাতে ক্লাস না নেওয়া, শিক্ষার্থীদেরকে মানসিকভাবে অভ্যস্ত করতে মানসিক সেল গঠন দরকার।

তদুপরি তাদেরকে মানসিকভাবেসাপোর্ট দেওয়া, সিলেবাস কমিয়ে কন্টেন্ট ভিত্তিতে পড়ানো, এক্ষেত্রে কন্টেন্ট রিলেটেড বিভিন্ন অনলাইন কোর্স করতে দেওয়া এবং জার্নাল পেপার পড়তে দেওয়া যেতে পারে বলে মত দিয়েছেন গবেষক দলটি।

রিসার্চ টিমের নেতৃত্ব প্রদানকারী ইয়ুথ এন্ডিং হাঙার, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় ইউনিটের কো- অর্ডিনেটর অহিদুল ইসলাম বলেন, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে গত ১৫ জুলাই অনলাইনে শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হলেও আমরা লক্ষ্য করেছি অনেক শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন ধরনের প্রতিবন্ধকতার কারণে এই কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করতে পারছেন না।

অনলাইনে শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের প্রকৃত সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে সম্ভাব্য সমাধানগুলো যদি যথাযথ কর্তৃপক্ষের নিকট তুলে ধরা যায় তাহলে এই সমস্যাগুলোর সমাধান পূর্বক অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রমে আরো বেশী সংখ্যক শিক্ষার্থীকে সম্পৃক্ত করা সম্ভব হবে।

এই ভাবনা থেকেই ইয়ুথ এন্ডিং হাঙার বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় ইউনিটের সকল ইয়ুথ লিডারদের সাথে আলোচনা করে আমরা এই রিসার্চ প্রজেক্টটি পরিচালনা করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করি।

তিনি আরো বলেন, অবিলম্বে রিসার্চের কপি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের নিকট পাঠানো হবে। আমরা আশাবাদী, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ রিসার্চের ফলাফলগুলো আমলে নিয়ে শিক্ষার্থীদের সমস্যাসমূহ সমাধানের লক্ষ্যে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।

এস এস