ন্যাভিগেশন মেনু

বাংলাদেশি বিজ্ঞানী জাহিদ যুক্তরাষ্ট্রে ‘আর্নেস্ট অরল্যান্ডো লরেন্স’ অ্যাওয়ার্ডে ভূষিত


জ্বালানী নিরাপত্তা এগিয়ে নেয়ার মিশনে গবেষণা ও উন্নয়নে অসাধারণ অবদানের জন্যে বাংলাদেশি বিজ্ঞানী অধ্যাপক ড. এম জাহিদ হাসানকে যুক্তরাস্ট্রে ‘দ্য আর্নেস্ট অরল্যান্ডো লরেন্স’ অ্যাওয়ার্ডে ভূষিত করা হয়েছে।

ঢাকার সন্তান এবং ঢাকা কলেজ থেকে বিশেষ কৃতিত্বের সাথে এইচএসসি পাশের পর ইউনিভার্সিটি অব টেক্সাসে অংক ও পদার্থ বিজ্ঞানে উচ্চতর ডিগ্রি নেন জাহিদ হাসান।

২০০২ সালে স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটি থেকে ডক্টরেট করেছেন। আমেরিকান একাডেমি অব আর্টস এ্যান্ড সায়েন্সের নির্বাচিত ফেলো হাসান ২০১৪ সাল থেকেই ওয়াশিংটন ডিসিতে ‘অ্যাসপেন ইন্সটিটিউট’রও ফেলো। হাসানের গবেষণা এবং উদ্ভাবন সম্পর্কিত অনেক লেখা বিশ্বখ্যাত জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে।

জ্বালানী মন্ত্রী ড্যান ব্রাউইলেট ১২ জানুয়ারি এ সিদ্ধান্ত জানিয়েছেন। একইসাথে আরো ৭ জনকে এই পুরস্কার প্রদানের কথা জানানো হয়েছে। ভার্চুয়ালে এ পুরস্কার বিতরণ করা হবে ১৯ জানুয়ারি স্থানীয় সময় সকাল ১১টায়।

মধ্য-ক্যারিয়ারের আমেরিকান বিজ্ঞানী হিসেবে কয়েক বছর আগে ‘ওয়েল সেমিমেটাল’ আবিষ্কারের জন্যে ড. হাসান সম্মাননা লাভ করেন। কোয়ান্টাম ফিজিক্সে টপোলজি বিষয়ে বিশেষভাবে পারদর্শী নিউজার্সির প্রিন্সটন ইউনিভার্সিটিতে অধ্যয়নরত ড. হাসান আবিষ্কার ও গবেষণায় যুক্তরাষ্ট্র ফেডারেল সরকারের এই মর্যাদাসম্পন্ন অ্যাওয়ার্ডের জন্য মনোনীত হওয়ার সংবাদ জানান।

এ সংবাদ জানার পর ১৪ জানুয়ারি অনুভূতি প্রকাশ করে বলেছেন, “আমি এই সম্মাননা অর্জন করতে পেরে সম্মানিত এবং গৌরববোধ করছি। কারণ, ই ও লরেন্স হচ্ছেন আমার অন্যতম একজন শ্রদ্ধেয় বিজ্ঞানী, যাকে আমার হিরো হিসেবে বিবেচনা করি।

হাসান বলেন, "লরেন্সের সাইক্লোট্রন উদ্ভাবনের ফলে আধুনিক উচ্চ-শক্তিসম্পন্ন প্রযুক্তি সম্মুখে ধাবিত-যা আমি আমার গবেষণায় কোয়ান্টাম পদার্থের টপোলজিকাল অবস্থাগুলি অনুসন্ধান করতে ব্যবহার করি।

লরেন্স বার্কলে ন্যাশনাল ল্যাবরেটরি এবং এসএলএসি ন্যাশনাল এক্সিলারেটর ল্যাবরেটরির কাছেও আমার এই কৃতিত্বের জন্য আমি অত্যন্ত কৃতজ্ঞ।শীর্ষস্থানীয় কণা ত্বরক সাইক্লোট্রন উদ্ভাবনকারী এবং পদার্থবিদ্যায় ১৯৩৯ সালের নোবেল পুরস্কার বিজয়ী বিজ্ঞানী আর্নেস্ট অরল্যান্ডো লরেন্সকে সম্মান জানানোর জন্য ১৯৫৯ সালে এই অ্যাওয়ার্ড প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় লরেন্সও পারমাণবিক বোমা তৈরীতে অবদান রেখেছিলেন এবং দেশের জাতীয় রসায়নাগার ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠায় নেতৃত্ব দিয়েছিলেন।

‘উন্নত স্পিন-এঙ্গেল-সলিউড ফটোয়িমেশন স্পেকট্রোস্কোপি" ব্যবহারে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার ফলে হাসানকে বস্তু বিজ্ঞানের নতুন পর্যায় এবং নতুন ফর্মিওনিক কোয়াসি পার্টিকালগুলির অন্তিম আবিষ্কারের জন্য ইতিপূর্বে সম্মানিত করা হয়েছিল।’

জ্বালানী মন্ত্রণালয়ের এই পুরষ্কারের ঘোষণা অনুসারে, ‘হাসানের কাজ ঘনীভূত পদার্থবিজ্ঞানের নতুন ক্ষেত্র খুলেছে এবং পদার্থ বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে রূপান্তরকারী প্রয়োগের প্রতিশ্রুতি রেখেছে।

অ্যাব ডিগ্রি ও গণনার পূর্বাভাস অনুসারে তিনি নতুন কোয়ান্টামের অবস্থা এবং হেলিকাল ডাওয়ার্ক ফার্মিয়ন এবং ওয়েল ফার্মিয়েনের মতো টপোলজিক্যাল কোয়াসি পার্টিকেলগুলির সন্ধান এবং আবিষ্কারের দিকে মনোনিবেশ করেছেন।

প্রতিটি লরেন্স পুরষ্কার বিজয়ী জ্বালানি মন্ত্রীর স্বাক্ষরযুক্ত একটি প্রশংসাপত্র, আর্নেস্ট অরল্যান্ডো লরেন্সের অনুরূপ স্বর্ণপদক এবং নগদ ২০ হাজার ডলার পাবেন।

এর আগে পুরষ্কারপ্রাপ্তদের মধ্যে প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞানীদের মধ্যে রয়েছেন ১৯৬৮ সালে ভ্যাল ফিচ (১৯২৩-২০১৫), যিনি জেমস এস ম্যাকডনেল পদার্থবিজ্ঞানের বিশিষ্ট অধ্যাপক, এমেরিটাস; এবং ১৯৭৬ সালে জেমস ক্রোনিন (১৯৩১-২০১৬), যিনি ১৯৫৮-১৭১৭১১ সালে প্রিন্সটনের পদার্থবিজ্ঞানের অধ্যাপক ছিলেন।

দুজন পদার্থবিজ্ঞানীর জন্য ১৯৮০ এর নোবেল পুরস্কারও ভাগ করা হয়েছিল।

এস এস