ন্যাভিগেশন মেনু

মানিকগঞ্জ মুক্ত দিবস ১৩ ডিসেম্বর


আজ ১৩ ডিসেম্বর, মানিকগঞ্জ পাক হানাদারমুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এইদিনে মানিকগঞ্জ সম্পূর্ণ শত্রুমুক্ত হয়েছিলো। বিজয়ের পতাকা হাতে নিয়ে বিজয় উল্লাস করেছিলেন মুক্তিযোদ্ধাসহ মানিকগঞ্জের মানুষ।

১৯৭১ সালের ৭ মার্চ রেসকোর্স ময়দানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আহ্বানে সাড়া দিয়ে ও ২৫ মার্চ রাতে ঢাকায় ক্র্যাকডাউনের খবর পাওয়ার পর পরই তৎকালীন অবসরপ্রাপ্ত ক্যাপ্টেন আবদুল হালিম চৌধুরীর নেতৃত্বে একটি বিপ্লবী পরিষদ গঠন করেন মানিকগঞ্জের রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ।

ওই রাতেই পরিষদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মানিকগঞ্জের ট্রেজারিতে রক্ষিত অস্ত্র ও গোলাবারুদ বের করে ছাত্র ও যুবকদের মাঝে বিতরণ করা হয়। পরেরদিন থেকে ক্যাপ্টেন হালিম চৌধুরীর আলুর গুদামের পেছনে শুরু হয় অস্ত্র প্রশিক্ষণ। এরপর থেকে মানিকগঞ্জের বিভিন্ন অঞ্চলে মুক্তিবাহিনীর সঙ্গে পাক বাহিনীর বেশ কয়েকটি যুদ্ধ হয়। এরমধ্যে গোলাইডাঙ্গা, সূতালড়ি, আজিমনগর, বায়রা, নিরালী সাটুরিয়া, নারচি, বালিরটেক, গাজিন্দা, মানরাসহ বিভিন্ন স্থানে যুদ্ধ হয়।

তবে গোলাইডাঙ্গার যুদ্ধ ছিলো মুক্তিযোদ্ধাদের সব চাইতে সফল যুদ্ধ। গোলাইডাঙ্গার খালের কুমে এই যুদ্ধে ৮২ জন পাক হানাদার ঘটনাস্থলে মারা যায়।

পাক বাহিনীর নির্মম অত্যাচারের আরেকটি দৃষ্টান্ত তেরশ্রী ট্রাজেডি। ঘিওর উপজেলার তেরশ্রী গ্রামে ১৯৭১ সালের ২২ নভেম্বর পাক হানাদার বাহিনী হামলা চালিয়ে তেরশ্রী কলেজের অধ্যক্ষ আতিয়ার রহমান এবং শিক্ষানুরাগী তেরশ্রী গ্রামের জমিদার সিদ্ধেশ্বর রায় প্রসাদ চৌধুরীসহ হত্যা করে ৪৩ জন গ্রামবাসীকে।

ডিসেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকেই মুক্তিবাহিনীর আক্রমণে পাক সেনারা মানিকগঞ্জের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে পিছিয়ে আসতে শুরু করে। ১৩ ডিসেম্বরের মধ্যে মুক্তিযোদ্ধাদের পাল্টা হামলায় পাক বাহিনী মানিকগঞ্জ ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়।

১৯৭১ সালের এই দিনে পাক বাহিনী মানিকগঞ্জের মাটি ছেড়ে পালিয়ে যায়। পরের দিন ১৪ ডিসেম্বর সকালে দেবেন্দ্র কলেজ মাঠে আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করেন তৎকালীন এমএনএ আওয়ামী লীগ নেতা খন্দকার মাযহারুল ইসলাম চাঁন মিয়া।

দীর্ঘ ৯ মাসের মুক্তিযুদ্ধে মানিকগঞ্জে শহীদ হন ৫৮ জন মুক্তিযোদ্ধা আর আহত হন অনেকে। এ সময় হত্যা করা হয় স্বাধীনতাকামী প্রায় কয়েক হাজার মানুষকে।

মুক্তিযুদ্ধে ৪ জন মুক্তিযোদ্ধা খেতাব পান। খেতাবপ্রাপ্তদের মধ্যে স্কোয়াড্রন লিডার (অবঃ) বদরুল আলম (বীর প্রতীক), ইব্রাহীম খান (বীর প্রতীক), শহীদ মাহফুজুর রহমান (বীর প্রতিক) এবং মোহাম্মদ আতাহার আলী খান (বীর প্রতীক)।

এস এ /এডিবি