ন্যাভিগেশন মেনু

বাংলাদেশ সংকট মোকাবিলায় যা যা চেয়েছে ভারত সবই দিয়েছে: কাদের


প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বর্তমান সংকট মোকাবিলা এবং জনগণকে বাঁচাতে ভারতের কাছে যা যা চেয়েছেন তার সবই দিয়েছে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

বুধবার (৭ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ সেক্রেটারিয়েট রিপোর্টার্স ফোরাম আয়োজিত সংলাপে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘আমরা যা যা চেয়েছি ভারত সব দিয়েছে। শেখ হাসিনা তিস্তার কথা বলতে ভুলে যাননি। পশ্চিমবঙ্গ থেকে কিছুটা আপত্তি আছে। আশা করি, সেটিও হয়ে যাবে। বিএনপির তো না পাওয়ার হতাশা। আমাদের না পাওয়ার হতাশা নেই।’

প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফর নিয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বক্তব্যের জবাবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘আপনারা ভারতের সঙ্গে দেয়াল তুলেছেন, আমরা সেই দেয়াল ভেঙে দিয়েছি। কোন দেশের ছিটমহল বিনিময় এতো শান্তিপূর্ণভাবে হয়নি। আপনারা তো ভুলেই যান আসল কথা বলতে। আমরা ভারতের সঙ্গে বন্ধুত্ব চাই। বন্ধুত্ব থাকলে সমস্যা যা আছে সেগুলো সমাধান হবে।’

প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী না যাওয়া প্রসঙ্গে সংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী সবসময় প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গী হবেন; এমন কোনো কথা নেই। পররাষ্ট্রমন্ত্রী সব সময় প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গী হবেন না। একটা মানুষ তো অসুস্থ হতে পারে। তার শরীর কিছুটা অসুস্থ।

‘ভারত সফরে শেখ হাসিনা খালি হাতে ফিরছেন’ বিএনপি মহাসচিবের এমন বক্তব্যের জবাবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, আমরা কয়েকটি সমঝোতা স্মারকে চুক্তিবদ্ধ হয়েছি। বর্তমান সংকটে জনগণকে বাঁচাতে সবই ভারত থেকে পাওয়া গেছে। তিস্তার পানি চুক্তি হয়নি, তবে কুশিয়ারা চুক্তি হয়েছে। অদূর ভবিষ্যতে হয়তো সেটিও সম্পন্ন হবে।

রোহিঙ্গা সংকটের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে ভারতের সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে, আশা করি তাদের প্রত্যাবর্তনে ভারত পাশে থাকবে।’

আগামী জাতীয় নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারের বিষয়ে কাদের বলেন, আওয়ামী লীগ আগের জাতীয় নির্বাচনেও ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহারের দাবি করেছিল; আগামী নির্বাচনেও তাই চায়। তবে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের স্বার্থে নির্বাচন কমিশন (ইসি) এ বিষয়ে যে সিদ্ধান্ত নেবে সেটাই চূড়ান্ত। নির্বাচন কমিশন কী সিদ্ধান্ত নেবে সেটা তাদের বিষয়।

রাজনীতিবিদদের অবসরের বয়সসীমা নির্ধারণ করে দেয়া উচিত কিনা; এমন প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, রাজনীতিবিদদের কোনো বয়সসীমা থাকা উচিত না। একটা মানুষ সারাজীবন রাজনীতি করে শেষ বয়সে এসে তা করতে না পারলে মরার আগে মরে যাবেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সময়ে মেগা প্রজেক্টগুলোর দায়িত্ব পালন করছি একথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, পদ্মাসেতু নির্মাণে অনেক বাধা-বিপত্তি ছিল; অনেকে হাল ছেড়ে দিয়েছিলেন; কিন্তু যারা কাজ করেছেন তাদের উৎসাহ দিতে ঈদের দিনেও সেখানে গেছি।

সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, আমার হাতে উদ্বোধনের অপেক্ষায় আছে আরও ২৭টি ছোট, বড় ও মাঝারি প্রকল্প। আগামী বছর ডিসেম্বরে মতিঝিল পর্যন্ত মেট্রোরেলের কাজ শেষ হবে।

দেশের সড়ক-মহাসড়কের সমস্যা চিহ্নিত করে দুর্ঘটনা নিরসনে কাজ চলছে জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, নিরাপত্তা নিশ্চিত করার ওপর সরকার জোর দিচ্ছে। দুর্ঘটনায় নতুন উপদ্রব হিসেবে এসেছে মোটরসাইকেল। সড়ক নিরাপত্তা এখন বড় দুর্ভাবনার বিষয়; দুর্ঘটনা কম হলেও মৃত্যুর সংখ্যা বেশি; এ নিয়ে বিশ্ব ব্যাংকের সহায়তা চাওয়া হয়েছে।

বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার বিষয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, শেখ হাসিনার মহানুভবতায় তিনি কারাগারের বাইরে আছেন। যে দলের মধ্যে কোনো গণতন্ত্র নেই, তাদের মুখে গণতন্ত্রের কথা মানায় না। বিএনপির দলে কবে কাউন্সিল হয়ে গেছে এই শব্দটি তারা ভুলে গেছে। রাতের আঁধারে দলের গঠনতন্ত্র থেকে সাত ধারাটি বাদ দেওয়া হয়েছে। এ ধারায় বলা ছিল, কোনো দন্ডপ্রাপ্ত বা দুর্নীতিবাজ দলের নেতা হতে পারবেন না। আগেই জেনেছিল এ কারণে ধারা বাদ দিয়েছে।

বিএসআরএফ’র সভাপতি তপন বিশ্বাসের সভাপতিত্বে সংলাপে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মাসউদুল হক।