ন্যাভিগেশন মেনু

বাণিজ্যিক সেতু গড়ে তুলে বিশ্ব অর্থনীতিতে চালিকাশক্তি যোগাবে চীন


বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থায় চীনের যোগদানের ২০তম বার্ষিকী এ বছর। গত ২০ বছরে চীন সার্বিক সংস্কার বেগবান করার এবং আরও বেশি উন্মুক্ত হওয়ার চেষ্টা করেছে। চীন বিভিন্ন দেশের সঙ্গে সুযোগ কাজে লাগিয়ে যৌথভাবে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করার এবং বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার সংস্কারের ক্ষেত্রে তার বুদ্ধি যুক্ত করেছে।

দশ নভেম্বর চতুর্থ চীন আন্তর্জাতিক আমদানি মেলা শেষ হয়েছে। এবারের ছয় দিনব্যাপী মেলায় ৭২০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। কোভিড-১৯ মহামারী বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়ার প্রেক্ষাপটে চতুর্থ বিশ্ব আমদানি মেলা সফলভাবে আয়োজন করা হয়। এর মধ্য দিয়ে বিশ্বের কাছে চীনা বাজারের সুযোগ ও উচ্চ মানের উন্মুক্তকরণের সংকল্প উপস্থাপিত হয়। বিশ বছর আগে এদিন অর্থাৎ ২০০১ সালের ১০ নভেম্বর কাতারে আয়োজিত বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার চতুর্থ মন্ত্রী পর্যায়ের সম্মেলনে সংস্থাটিতে চীনের যোগদানের অনুমোদন দেওয়া হয়। চীন বিশ্বের বৃহত্তম উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে ঘনিষ্ঠভাবে অর্থনীতির বিশ্বায়ন প্রক্রিয়ায় অংশ নিয়েছে।

চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং চতুর্থ চীন আন্তর্জাতিক আমদানি মেলায় তাঁর বক্তৃতায় বলেন, বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থায় অংশ নেওয়ার পর চীন অনবরত উন্মুক্তকরণ প্রচেষ্টা চালিয়ে গেছে। এর মধ্য দিয়ে চীনের উন্নয়ন জোরদার হয়েছে এবং বিশ্ব অর্থনীতিতে তা চালিকাশক্তি যুগিয়েছে।

বিশ বছর আগে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থায় যোগদানের প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করেছে চীন। চীনে শুল্কের হার ১৫.৩ শতাংশ থেকে ৭.৪ শতাংশে কমেছে। বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার পরিসংখ্যানে বলছে, চীনের আমদানি ও রপ্তানির মোট পরিমাণ ২০০১ সালের ৫০৯.৮ বিলিয়ন থেকে বেড়ে ২০২০ সালে ৪.৬৫ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌঁছেছে, যা বিশ্বে সর্বোচ্চ। বিশ বছরে চীনের সেবা-বাণিজ্যের পরিমাণ বিশ্বের একাদশ থেকে দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছে।

বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার মহাপরিচালক নগোজি ওকোঞ্জো ইওয়িলা গত ৫ নভেম্বরে অনলাইনে চতুর্থ চীন আন্তর্জাতিক আমদানি মেলায় বক্তৃতা করেন। তিনি বলেন, ত্রয়োদশ শতাব্দীতে মার্কোপোলো পূর্ব দিকে যাত্রার পর থেকে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থায় চীনের যোগদান চীন ও পশ্চিমের মধ্যে বৃহত্তম বাণিজ্যের সেতু হিসাবে দেখা হয়।

২০০১ সালের ১১ ডিসেম্বরে চীন আনুষ্ঠানিকভাবে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার ১৪৩তম সদস্য হিসেবে যোগ দেয়। চীনের বৈদেশিক অর্থনীতি ও বাণিজ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের চীনের বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার গবেষণালয়ের পরিচালক থু সিন ছুয়ান মনে করেন, চীন বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থায় অংশ নেওয়ার পর নিজস্ব উন্নয়ন জোরদার করেছে এবং বিশ্বের জন্য সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।

তিনি বলেন, চীন অর্থনীতির বিশ্বায়ন ব্যবস্থা ও বাজার ব্যবস্থায় অংশ নিয়েছে। উত্পাদনসহ সমগ্র বৈশ্বিক সংস্থাগুলোর একটি পুনর্বিন্যাস করেছে। ফলে এর কার্যকারিতা ব্যাপকভাবে উন্নত হয়েছে।

বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থায় অংশ নেওয়ার ২০ বছরে চীন বিশ্বের ৫০টিরও বেশি দেশ ও অঞ্চলের বৃহত্তম বাণিজ্যিক অংশীদার এবং ১২০টিরও বেশি দেশ ও অঞ্চলের শীর্ষ তিনটি ব্যবসায়িক অংশীদারের একটিতে পরিণত হয়েছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বিশ্ব অর্থনীতির প্রবৃদ্ধিতে চীনের অবদান ৩০ শতাংশ।  চীনে অবাধ বাণিজ্যের পরীক্ষামূলক অঞ্চলগুলো দ্রুত উন্নত হচ্ছে। ‘এক অঞ্চল, একপথ’ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে মানবজাতির অভিন্ন লক্ষ্যের সমাজ নির্মাণে চীনের উদ্যোগ আন্তর্জাতিক মহলে ব্যাপক সমর্থন পেয়েছে। চীন বিশ্বের শিল্প চেইন ও সরবরাহ চেইনের নিশ্চয়তা এবং বিশ্ব অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে। তথ্য: সিএমজি