ন্যাভিগেশন মেনু

বার বার তিনবার পশ্চিমবঙ্গ মমতার


ঠিক ৫২ দিন পর তিনি উঠে দাঁড়ালেন। দীর্ঘ এই সময়ের সঙ্গী হুইলচেয়ার ছেড়ে এমন মুহূর্তে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হেঁটে সামনে এলেন, যখন নবান্ন দখলের লড়াইয়ে তিনি ডবল সেঞ্চুরি করেই (২১৩) জয়ী হয়েছেন।

গত ১০ মার্চ নন্দীগ্রামের বিরুলিয়ায় আহত হয়েছিলেন মমতা। তার পর হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়ে তার সঙ্গী হুইলচেয়ার। কিন্তু রবিবার তাকে দাঁড়িয়ে দলের নেতাকর্মীদের প্রতি সংক্ষিপ্ত বার্তা দিয়েছেন। হেঁটে গিয়েছেন দলীয় কার্যালয় ও কালীঘাট মন্দিরে পুজো দিতে।

নবান্নের লড়াইয়ে বলতে গেলে তিনি একা। অন্যদিকে, নরেন্দ্র মোদি, অমিত শাহ, জেপি নড্ডা, যোগী আদিত্যনাথ, ধর্মেন্দ্রপ্রসাদ, কৈলাস বিজয়বর্গীয়রা। সঙ্গে তাদের সহযোগী এ রাজ্যেরই দিলীপ ঘোষ, মুকুল রায়, শুভেন্দু অধিকারীরা।

নির্বাচনের মাঠে ‘খেলা হবে’ যখন বলছেন, ময়দানে তখন তিনি সত্যিই একা। তিনি অবশ্য বার বারই বলেছেন তার সঙ্গে আছে বাংলার অগণিত মানুষ। কিন্তু রবিবার যখন তিনি প্রকাশ্যে এলেন, ততক্ষণে সেই পদ্মচক্রব্যূহ ছারখার। মমতা বিজয়ী। ২৯৪ আসনে তিনিই প্রার্থী, আগে বহু বার বলেছেন। রবিবার সেই ‘বলা’কে সত্যি প্রমাণিত করেছেন যখন, সেই সময়ে নিজের দাঁড়ানো আসন নন্দীগ্রামে মাত্র কিছু ভোটে তিনি হেরে গেছেন। তা পরোয়া না করেই তিনি জানিয়ে দিলেন, নন্দীগ্রামের রায় মাথা পেতে মেনে নিচ্ছেন। যদিও একই সঙ্গে কারচুপির তত্ত্বও তুলেছেন তিনি। ফলাফল নিয়ে আদালতে যাওয়ার ইঙ্গিতও দিয়েছেন।

কোভিড-১৯ স্বাস্থ্যবিধি মেনে এবার আর মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে কর্মী-সমর্থকদের ভিড় করতে দেওয়া হয়নি। অতি উৎসাহীরা কিন্তু ততক্ষণে অল্প অল্প ভিড় জমিয়েছেন ৩০ বি হরিশ চ্যাটার্জি স্ট্রিটে। সেই খবর পেয়ে বাইরে এসেছিলেন মমতা। 

তার কিছু আগেই সংবাদ সংস্থা এএনআই জানায়, ১২০১ ভোটে নন্দীগ্রামে জয়ী হয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যদিও পরে জানা যায়, শুভেন্দু অধিকারীই ওই কেন্দ্রে জিতেছেন।

বাড়ির সামনের তৈরি অস্থায়ী মঞ্চে ওঠে মমতা দলের কর্মী-সমর্থকদের উদ্দেশে বলেন, ‘‘এই জয় আপনাদের জন্য এসেছে। করোনা পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখেই বলছি, কোনও ঝুঁকি না নিয়ে বাড়ি যান। ঠিক সময় কোভিড সংক্রমণ কমলে ঘোষণা করা হবে বিজয় মিছিলের দিন। ব্রিগেডে হবে।’’

তারপর সন্ধ্যায় সাংবাদিক বৈঠক শেষে কালীঘাট মন্দিরে পুজো দিতে যান মমতা।

দুই তৃতীয়াংশের বেশি আসন প্রাপ্তি এবং ভোট শতাংশের হিসেব কষে নির্বাচনী বিশ্লেষকদের একাংশের ব্যাখ্যা, বাম, কংগ্রেস এবং বিজেপিরও একটা অংশের সমর্থন গেছে মমতার ঝুলিতে। বিজেপি যখন রাজ্যে ধর্মীয় মেরুকরণের প্রচার চালাচ্ছে, মমতা তখন মধ্যবিত্ত, মহিলা এবং সংখ্যালঘু ভোটারদের একত্রিত করেছেন বলেই বিশ্লেষকদের একাংশের মত। তা না হলে এই জয় এবং ভোট শতাংশ তৃণমূলের ঝুলিতে আসা সম্ভব নয় বলেই তাদের ধারণা্ কারণ, তৃণমূলের ইতিহাসে এখনও পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি ভোট শতাংশপ্রাপ্তি এবারই।

বার বার তিন বার তার হাতেই গেলো রাজ্যের শাসনভার। সুত্র: আনন্দবাজার

এডিবি/