ন্যাভিগেশন মেনু

বাড়িতেই তৈরি করুণ রসগোল্লা


মিষ্টি খেতে কে না পছন্দ করে! যে কোনও খাবার খাওয়ার পর শেষ পাতে মিষ্টি না থাকলে যেনো খাওয়াটাই অসম্পূর্ণ থেকে যায়। রসোগোল্লা, পান্তুয়া, কমলাভোগ যেমন সবার প্রিয়, তেমন রসগোল্লা ছাড়াও যেকোনো শুভ কাজ অসম্পূর্ণ। আর এই লকডাউনে মিষ্টির দোকানে না গিয়ে বাড়িতেই তৈরি করুণ রসগোল্লা।

আসুন জেনে নিই যেভাবে তৈরি করবেন রসগোল্লা –

উপকরণ:

চিনি, দুধ, লেবু অথবা টকদই, পানি, ছাঁকনি এবং পাত্র।

প্রস্তুত প্রণালী:

ওভেনে একটি প্যান বসান। তাতে লিটারখানেক দুধ ঢেলে দিন। চুলা জ্বালিয়ে দুধ ফোটানো শুরু করুন। দুধ যতো ভালো মানের হবে, ছানা ততো খোলতাই হবে। এবার একটি বাটিতে টকদই রাখুন। এক লিটার দুধের জন্য মোটামুটি পোয়া খানেক (২৫০ গ্রাম) মতো টকদই-ই যথেষ্ট।

দুধ ফুটতে শুরু হলে টক দইটি ঢেলে দিন। এক্ষেত্রে কেউ লেবু বা ভিনেগারও ব্যবহার করতে পারেন। তবে তাতে রসগোল্লাতে গন্ধ থেকে যাওয়ার ক্ষীণ সম্ভাবনা থাকে। টক দইয়ের ক্ষেত্রে তাও থাকবে না। ফুটন্ত দুধে টক দই পড়ামাত্র ছানা কাটতে শুরু করবে। চামচ বা খুন্তির সাহায্যে ভাল করে নেড়ে নিন। একটু অপেক্ষা করুন। পুরো পানি কেটে গেলে বুঝবেন ছানা তৈরি হয়ে গেছে। মনে রাখবেন রসগোল্লার ছানা বেশিক্ষণ ওভেনে রাখা যাবে না।

এবার পুরো বস্তুটি ছাঁকনিতে ঢেলে দিন। পরিচ্ছন্ন কাপড় ব্যবহার করতে পারেন ছাঁকনি হিসেবে। পানি আর ছানা আলাদা হয়ে যাবে। ব্যস ছানা তৈরি হয়ে গেলো। 

এবার ছানা তুলে একটি থালায় রাখুন। অথবা কাপড়েই ঝুলিয়ে রাখুন, যাতে পানি ঝরতে থাকে এবং ধীরে ধীরে ঠাণ্ডা হয়। কিন্তু ছানা ঠাণ্ডা পানিতে ধোবেন না। মনে রাখবেন, পানি ঢুকলে স্পঞ্জ রসগোল্লা তৈরি হবে। তবে চিরায়ত রসগোল্লা তৈরির জন্য ঠাণ্ডা পানি না দেওয়াই ভাল। থালায় রাখলে বা কাপড়ে ঝুলিয়ে রাখলে বাকি যে পানি থাকবে সেটাও ঝরে যাবে।

রসগোল্লার জন্য ছানা লাগবে তা তৈরি। এবার রসের পালা। প্রথমে একটি পাত্রে পানি নিন। তাতে চিনি দিন। মোটামুটি পাঁচ কাপ পানির জন্য আড়াই কাপ চিনি দরকার। এবার ফোটানো শুরু করুন। মাঝে-মধ্যে চামচ দিয়ে নাড়তে থাকুন। অনেকে রসে এলাচের দানা দেন। অনেকে এই ফ্লেভার পছন্দ করেন। যদি আপনিও পছন্দ করেন তবে তা দিতেই পারেন। এই সময় আঁচ বাড়িয়ে নেবেন। মাথায় রাখবেন, রস যেন খুব ঘন না হয়ে যায়।

এইবার রসগোল্লা তৈরির সবথেকে শক্ত পর্ব। এতক্ষণে ছানা থেকে সব পানি ঝরে গেছে। সেটিকে থালায় তুলুন। এবার এক চা-চামচ মতো সুজি ও চিনি ওই ছানার সঙ্গে ভাল করে মাখিয়ে ফেলুন। অনেকে সুজির বদলে ময়দাও দেন। ছানা ঝুরঝুরে অবস্থায় থাকে। ঠাণ্ডা পানিতে ধুলে ছানা শক্ত হয়ে যেত। কিন্তু তাতে রসগোল্লাও শক্ত হতো। এবার ওই মিশ্রণ ভালো করে মাখাতে থাকুন। অনেকটা ময়দা মাখানোর কায়দায়। অনেকেই হাতের তালু দিয়ে জোরে জোরে ঘষতে থাকেন। তার দরকার নেই। সাধারণভাবেই মিনিট চারেক মাখানোর পরই মণ্ড তৈরি হয়ে যাবে। এবার সেগুলো থেকেই ছোট ছোট অংশ কেটে নাড়ুর মতো বল তৈরি করুন।

ওভেনের উপর রস তো বসানোই ছিল। ফুটন্ত সেই রসে এবার বলগুলি ছাড়তে থাকুন। এই সময় ওভেনের আঁচ যেন বাড়ানো থাকে, তা মাথায় রাখবেন। আর পাত্রের মাথায় একটা ঢাকনা দিয়ে দিন। পাত্রের ভেতর তৈরি হতে থাকুক রসগোল্লা। মিনিট সাত থেকে দশ পরে ঢাকনা খুললেই দেখবেন, ছানার বলগুলো রসে টইটম্বুর হয়ে গেছে। এবার একটু নাড়িয়ে চাড়িয়ে, উপরের পিঠগুলো ঘুরিয়ে দিয়ে ফের ঢাকা দিন। আঁচটা এইসময় একটু কমিয়ে দেবেন। ঢিমে আঁচে আরও বেশকিছুক্ষণ, প্রায় মিনিট পনেরো-কুড়ি রেখে দিন। এবার খুলে দেখুন, তৈরি আপনার রসগোল্লা। রসের মধ্যে থেকে একটা গোল্লা তুলে এক গ্লাস পানিতে ফেল দেখুন। যদি ডুবে যায় তবে আপনার রসগোল্লা তৈরি।

এসএ/এডিবি/