ন্যাভিগেশন মেনু

ব্যাংক হিসাব খোলা যাবে ৫ মিনিটে


ই-কেওয়াইসি পাইলট প্রকল্পের মাধ্যমে ৫ মিনিটে খোলা যাবে ব্যাংক হিসাব। এ জন্য লাগবে না কোনো কাগজপত্র, পুরো বিষয়টি অবাক করার মত নতুন গ্রাহকদের জন্য।

মূলত আঙুলের ছাপ নিয়ে স্বয়ংক্রিয়ভাবে নির্বাচন কমিশনের তথ্যভান্ডার থেকে গ্রাহকদের তথ্য-পরিচিতি সংগ্রহ করে থাকে এজেন্টরা।

বর্তমানে ব্যাংক হিসাব খুলতে বাধ্যতামূলক নো ইওর কাস্টমার ফরম পূরণ বা গ্রাহককে বিস্তারিত তথ্য জমা দিতে হয়।

ব্যাংকভেদে এই ফরমে ৫০ থেকে ৭০টি প্রশ্নের জবাব দিতে হয়। এতে ৩০ মিনিট পর্যন্ত সময় লেগে যায়। ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের যাচাই-বাছাই শেষে কয়েক দিন পর চালু হয় হিসাব।

এবার থেকে অবসান হচ্ছে এ পরিস্থিতি। আগামী জানুয়ারি থেকে ই-কেওয়াইসি চালু করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এর ফলে ব্যাংকগুলো তাদের শাখা, এজেন্ট ও বুথগুলোতে হিসাব খুলতে এই সুবিধা পাবে।

বর্তমানে পাইলট প্রকল্প হিসেবে ৩৩ জেলার ৫০ এলাকায় ব্যাংক হিসাব খুলতে ই-কেওয়াইসি ব্যবহৃত হয়েছে। বর্তমানে বাংলাদেশ ছাড়াও ভারত, মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ডসহ বিভিন্ন দেশে চালু আছে ডিজিটাল এ সেবা।

২০১৬ সালের অক্টোবরে বাংলাদেশ ব্যাংক ই-কেওয়াইসি বিষয়ে কমিটি গঠন করে। মূলত সরকারি বিভিন্ন কর্মসূচির ভাতা প্রদানের জন্য হিসাব খুলতে ই-কেওয়াইসির বিষয়টি সামনে আসে।

চলতি অর্থবছরে এ খাতে বরাদ্দ ৭৪ হাজার ৩৬৭ কোটি টাকা। আগে থেকে এ কর্মসূচির সুবিধাভোগী ছিল প্রায় ৭৬ লাখ মানুষ। এবার তা বেড়ে হবে ৮৯ লাখ।

যেভাবে চলবে ই-কেওয়াইসি

মূলত চারটি ধাপে সম্পন্ন হবে পুরো ই-কেওয়াইসি প্রক্রিয়া। প্রথমে হিসাব খুলতে আসা ব্যক্তিদের জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর, জন্মতারিখ বায়োমেট্রিকের (আঙুলের ছাপ, মুখমণ্ডলের ছবি বা আইরিশ) মাধ্যমে পরিচয় নিশ্চিত করা হবে।

জাতীয় পরিচয়পত্রে থাকা তথ্য স্বয়ংক্রিয়ভাবে কেওয়াইসি ফরমে চলে আসবে। পরে গ্রাহকের ছবি তোলা হবে। এরপর হিসাব খোলার বিষয়ে গ্রাহককে মোবাইল ফোনে খুদে বার্তা পাঠাবে ব্যাংক। কাগজপত্র ছাড়াই পুরো কাজটি হবে অনলাইনে।

যেসব সেবা পাওয়া যাবে

ই-কেওয়াইসি দিয়ে মোবাইলে আর্থিক সেবা তথা বিকাশ, রকেট সেবা নেওয়া যাবে। এজেন্ট ব্যাংকিং হিসাবে বছরে সর্বোচ্চ লেনদেন হবে এক লাখ টাকা। ঋণ নেওয়া যাবে সর্বোচ্চ পাঁচ লাখ টাকা। পাঁচ লাখ টাকা পর্যন্ত টাকা জমা রাখা যাবে। পাঁচ লাখ টাকা পর্যন্ত সঞ্চয়পত্র ও অন্যান্য সরকারি বন্ডে বিনিয়োগও করা যাবে।

খোলা হয়েছে ১ হাজার ৭৫০টি হিসাব

গত সেপ্টেম্বরে ১৬টি ব্যাংক, একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান, বিকাশ ও রকেট মিলে ১ হাজার ৭৫০টি ব্যাংক হিসাব ই-কেওয়াইসির মাধ্যমে খুলেছে।

এতে দেখা যায়, প্রতিটি ই-কেওয়াইসি সম্পন্ন করতে সময় লেগেছে পাঁচ মিনিট। মূলত এজেন্ট ব্যাংকিং সেবা ব্যবহার করে এসব হিসাব খোলে ব্যাংকগুলো।

হিসাব খোলা ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো হলো সোনালী, অগ্রণী, জনতা, রূপালী, ব্যাংক এশিয়া, এনআরবি কমার্শিয়াল, ইসলামী, মার্কেন্টাইল, ট্রাস্ট, মিউচুয়াল ট্রাস্ট, ওয়ান, ব্র্যাক, ফার্স্ট সিকিউরিটি, ইউসিবিএল, দি সিটি, আইএফআইসি ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান আইডিএলসি।

কমবে অবৈধ লেনদেন

সারা বিশ্বে কতসংখ্যক মানুষ ব্যাংকিং সেবার আওতায় আছে, তা নিয়ে গত বছর গ্লোবাল ফিনডেক্স সূচক-২০১৭ শীর্ষক প্রতিবেদন প্রকাশ করে বিশ্বব্যাংক।

প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, ২০১১ সালে বাংলাদেশের প্রাপ্তবয়স্ক ৩০ শতাংশ মানুষের ব্যাংক হিসাব ছিল। ২০১৭ সালে তা বেড়ে হয়েছে ৪০ শতাংশ। তবে মোবাইল ব্যাংকিং সেবার কারণে সব মিলিয়ে ৫০ শতাংশ মানুষ আর্থিক সেবার আওতায় এসেছে।

এমআইআর / এস এস

বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুনঃ https://www.ajkerbangladeshpost.com