ন্যাভিগেশন মেনু

ব্রাসেলসে শহিদ ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালিত


বাংলা ভাষার অধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে সামনের সারির নেতৃত্ব দেওয়ার মধ্য দিয়ে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বাঙালি হিসেবে আত্মপরিচয়ের ধারণাটি দৃঢ়তর হয়। এই বাঙালি পরিচয়টিকে সমুন্নত রাখার প্রত্যয়েই তিনি জাতিকে চূড়ান্ত স্বাধীনতা অর্জনের পথে পরিচালিত করেছিলেন।

সোমবার (২২ ফেব্রুয়ারি) ব্রাসেলসে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাস কর্তৃক মহান শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ২০২১ উপলক্ষ্যে আয়োজিত প্যানেল আলোচনায় এসব কথা উঠে আসে।

রাষ্ট্রদূত মাহবুব হাসান সালেহ্ প্যানেল আলোচনাগুলো পরিচালনা করেন। অনুষ্ঠানটি দূতাবাসের ফেসবুক পেজে সরাসরি সম্প্রচার করা হয়।

রাষ্ট্রদূত মাহবুব হাসান সালেহ্-র স্বাগত বক্তব্যের মধ্য দিয়ে দিনব্যাপি অনুষ্ঠান শুরু হয়। এর আগে রাষ্ট্রদূত দূতাবাস প্রাঙ্গণে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত করেন এবং দূতাবাসের কর্মকর্তারা রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বাণী পাঠ করেন।

অনুষ্ঠানের উদ্বোধনী পর্বে আরও বক্তব্য দেন, ইউরোপীয় কমিশনের শিক্ষা, সংস্কৃতি, যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক মহাপরিচালক থেমিস ক্রিস্তোফেদু এবং বেলজিয়ামের ফ্লেমিশ ইউনেস্কো কমিশনের সভাপতি অধ্যাপক ড. মার্ক ভারবেন।

বেলজিয়াম ও ইউরোপীয় ইউনিয়নে নিযুক্ত ইউনেস্কোর পরিচালক আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ২০২১ উপলক্ষ্যে দেওয়া ইউনেস্কো মহাপরিচালকের বাণী পড়ে শোনান।

শহিদ আলতাফ মাহমুদের মেয়ে শাওন মাহমুদ ও অবসকিউর ব্যান্ডের যৌথ পরিবেশনায় ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি’ গানটির একটি পূর্ব-ধারণকৃত ভিডিও পরিবেশন করা হয়।

অনুষ্ঠানে কবি মাহবুব হাসান সালেহ্-র ‘একুশ আমার’ কবিতাটির মূল বাংলাসহ ইংরেজি, ফ্লেমিশ, ফরাসি ও জার্মান ভাষায় অনুবাদের আবৃত্তি শোনানো হয়।

‘ভাষা বিশ্ব জুড়ে মানুষের মুখ্য পরিচায়ক’ শীর্ষক প্রথম প্যানেল আলোচনায় বক্তারা বিশ্বায়নের কারণে জাতীয়তাবাদের পরিবর্তনশীল ধারণার প্রেক্ষাপটে ব্যক্তি পর্যায়ে আত্মপরিচয়ের ক্ষেত্রে মাতৃভাষার নিয়ামক ভূমিকা সম্পর্কে বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে আলোচনা করেন। এ প্যানেলে জার্মানির হাইডেলবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. হ্যান্স হার্ডার, বেলজিয়ামের ভ্রায়ি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. ভিম ভেনডেনবুশ, বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির সভাপতি ও কবি ড. রুবানা হক এবং কথা-সাহিত্যিক ও শিক্ষাবিদ কাজী আনিস আহমেদ অংশগ্রহণ করেন।

‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস: ভবিষ্যতের ভাবনা’ শীর্ষক দ্বিতীয় প্যানেল আলোচনায় সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও জীববৈচিত্র্য রক্ষার তাগিদে মাতৃভাষা শিক্ষার প্রসার এবং তথ্যপ্রযুক্তির ক্ষেত্রে নিজ ভাষা ব্যবহারের সুযোগ বৃদ্ধির বিষয়ে বক্তারা বিশেষ গুরুত্ব দেন।

এ প্যানেলে আলোচক হিসেবে ছিলেন বেলজিয়াম ও ইউরোপীয় ইউনিয়নে নিযুক্ত ইউনেস্কোর পরিচালক লুইস হ্যাক্সথাওসেন, চেক রিপাবলিকের চার্লস বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক ড. মার্টিন রিবেক, ব্রাকের লৈঙ্গিক অধিকার ও সমতা বিষয়ক পরিচালক নবনীতা চৌধুরী এবং বাংলাদেশের সামদানী আর্ট ফান্ডেশনের সহ-প্রতিষ্ঠাতা ও প্রেসিডেন্ট নাদিয়া সামদানী।

‘ভাষা আন্দোলন থেকে স্বাধীন বাংলাদেশের পথে বঙ্গবন্ধুর অভিযাত্রা’ শীর্ষক তৃতীয় প্যানেল আলোচনায় বক্তারা ঔপনিবেশিক সময়কাল থেকেই বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক মানস গঠনে বাংলা ভাষা ও কৃষ্টিভিত্তিক একটি উদার, গণতান্ত্রিক ও অসাম্প্রদায়িক চেতনার উন্মেষ বিষয়ে আলোকপাত করেন।

এ প্যানেলে আলোচক হিসেবে ছিলেন ওয়াশিংটন ডিসির হাডসন ইনস্টিটিউটের সিনিয়র ফেলো রাষ্ট্রদূত হুসেইন হাক্কানী, ওয়াশিংটন ডিসি ভিত্তিক লিবার্টি সাউথ এশিয়ার প্রতিষ্ঠাতা সেথ ওল্ডমিক্সন, ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস-এর ইংরেজি সাহিত্য ও মানবিকবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম এবং প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ও গবেষক ব্যারিস্টার শাহ্ আলী ফরহাদ।

সিবি/এডিবি