প্রথমে প্রেম, এরপর গোপনে বিয়ে। কিন্তু বিয়ের পর স্বামী তাকে বাড়িতে নিতে অপারগতা প্রকাশ করায় স্বামীর বাড়িতে অনশনে বসেছেন স্ত্রী।
ঘটনাটি পাবনার ভাঙ্গুড়ায়। স্ত্রীর অধিকার পেতে মেহরিন সুলতানা নামে এই কলেজছাত্রী দিয়ারপাড়ায় তার স্বামীর বাড়িতে অনশনে বসেছেন।
মঙ্গলবার (২৪ নভেম্বর) দুপুর থেকে ওই কলেজছাত্রী তার সহপাঠী ও স্বামী কলেজছাত্র খায়রুল ইসলামের বাড়িতে অনশন শুরু করেন। তারা দুজনেই এবছর ভাঙ্গুড়া হাজী জামাল উদ্দিন ডিগ্রী কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষার্থী ছিলেন।
কলেজছাত্রী স্ত্রীর অনশনের পর থেকেই স্বামী খাইরুল ইসলাম পালিয়ে গেছেন।
এ ঘটনায় মেহরিনের পরিবার থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন।
বিভিন্ন সুত্রে জানা যায়, গত বছরের নভেম্বরে এইচএসসি দ্বিতীয় বর্ষে অধ্যায়নের সময় উপজেলার মন্ডতোষ ইউনিয়নের দিয়ারপাড়া গ্রামের আকবর আলীর ছেলে খায়রুল ইসলামের সঙ্গে সদর ইউনিয়নের নৌবাড়ীয়া গ্রামের রবিউল ইসলামের মেয়ে মেহরিন সুলতানার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। একপর্যায়ে তাদের মধ্যে শারীরিক সম্পর্ক গড়ে উঠলে এ বছরের মার্চ মাসে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েন মেহরিন। বিষয়টি ধামাচাপা দিতে খাইরুল ইসলামের বিয়ের প্রতিশ্রুতিতে মেহরিন গর্ভের সন্তান নষ্ট করে ফেলেন।
পরে গত ৫ এপ্রিল দু'জনে পাবনার আদালতে প্রথমে নোটারি পাবলিকের মাধ্যমে এবং পরে একই দিনে ৭ লাখ টাকা দেনমোহরে কাজী অফিসের মাধ্যমে বিয়ে করেন। কিন্তু বিষয়টি তারা দু'জনেই তাদের পরিবারের কাছে গোপন রাখেন।
বিয়ের কিছুদিন পর থেকেই মেহরিন শ্বশুরবাড়ি যেতে খায়রুলকে চাপ দিতে থাকেন। এ অবস্থায় গত দেড় মাস ধরে খাইরুল কৌশলে মেহরিনকে এড়িয়ে চলতে থাকে। নিরুপায় হয়ে মেহরিন মঙ্গলবার দুপুরে খাইরুলের বাড়ি গিয়ে স্ত্রীর দাবি করেন। এ সময় খাইরুল বাড়ি থেকে পালিয়ে যায়। পরিবারের অন্য সদস্যরা মেহরিনকে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করলেও তিনি বাবার বাড়ি না ফিরে স্বামীর বাড়িতেই অবস্থান করে অনশন শুরু করেন।
অনশনকারী মেহরিন জানান, স্ত্রীর অধিকার না পেলে তিনি বাড়ি ফিরবেন না। স্বামী এবং তার বাড়ির কেউ মেনে না নিলে তিনি ওই বাড়ির বারান্দাতেই থাকবেন। তবুও তিনি কোনোভাবেই ফিরে যাবেন না।
এই ঘটনায় দিয়ারপাড়া গ্রামের ইউপি সদস্য স্বপন আলী সংবাদমাধ্যমকে বলেন, মেয়েটির অনশনের কথা শুনে আমি ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম। তবে সম্পূর্ণ বিষয়টি শুনে আমাদের পক্ষে সমাধান দেওয়া সম্ভব নয় বলে জানিয়েছি।
ভাঙ্গুড়া থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোদাচ্ছের হোসেন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, মেয়েটির পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে ছেলের বাড়ি গিয়ে সবার সঙ্গে কথা বলা হয়েছে। এখন বিষয়টি সামাজিকভাবে সমাধানের চেষ্টা করা হচ্ছে। সমাধান না হলে বিষয়টি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এডিবি/