ন্যাভিগেশন মেনু

মাদরাসার মাঠ দখল করে ইউপি চেয়ারম্যানের বালুর ব্যবসা


খেলার মাঠজুড়ে বালির স্তুপ। সেই বালির সাথে উঠে আসা পানিতে শ্রেণিকক্ষের সামনে জলাবদ্ধাতা সৃষ্টি হয়েছে। কাদা পানিতে একাকার হয়েছে শ্রেণিকক্ষের বারান্দা। এতে মাদরাসায় পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে। শিক্ষার্থীরা খেলাধুলাও করতে পারছেনা। নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার নাজিরপুর আলিম মাদরাসার বর্তমান পরিস্থিতি এটি।

ওই মাদরাসার পরিচালনা কমিটির সভাপতি শওকত রানা লাবু প্রভাব খাটিয়ে মাদরাসার মাঠ দখল করে বালুর ব্যবসা করছেন। লাবু নাজিরপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান। 

সরকারি ঘর টাকার বিনিময়ে দরিদ্রদের দেওয়ায় এই চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে আদালতে মামলাও রয়েছে। হাজতবাসও হয়েছে তার।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিক্রির জন্য ট্রলারে করে আনা বালু ওই মাঠে স্তুপ করে রাখা হচ্ছে। স্তুপের এসব বালু ট্রলিতে করে বিভিন্ন স্থানে নেওয়া হচ্ছে। মাঠজুড়ে এভাবে বালু রাখায় মাদরাসার তিনটি ভবনের অন্তত ৫টি শ্রেণিকক্ষে পানি ঢুকে পড়ছে। কাদা-পানিতে একাকার শ্রেণিকক্ষে পাঠদানের ক্ষেত্রে ব্যপক দুর্ভোগ শুরু হয়েছে।

শুধু শ্রেণিকক্ষ আর বারান্দাতেই যে সমস্যা হচ্ছে তা নয়। মাদরাসার দুইটি প্রবেশ মুখও বালিতে বন্ধ হয়ে গেছে।

মাদরাসার আঞ্জুম তাসনিম, আকরাম আলী, রঞ্জু মোল্লাসহ অন্তত ১০জন শিক্ষার্থী জানান, মাদরাসা খোলা থাকা অবস্থাতেই বুধবার থেকে মাঠে বালু ফেলা শুরু করেন প্রতিষ্ঠানের সভাপতি নিজেই। মাঠজুড়ে বালুর বড় স্তুপের কারণে শ্রেণিকক্ষের সামনে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। শ্রেণিকক্ষে প্রবেশ করতে গিয়ে কাদাপানিতে নষ্ট হচ্ছে পোশাক।

শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের দুর্ভোগের কথা স্বীকার করে ওই মাদাসার অধ্যক্ষ আব্দুল হক জানান, মাঠজুড়ে বালু ফেলায় উত্তরপাশের প্রবেশ মুখ বন্ধ হয়ে গেছে। আবার দক্ষিণপাশের প্রবেশ মুখেও বালির স্তুপ থাকায় শিক্ষার্থীরা নির্বিঘ্নে মাদরাসায় প্রবেশ করতে পারছেনা। তাছাড়া মাদরাসার উত্তরপাশের ৫টি শ্রেণিকক্ষের বারান্দায় পানি জমে থাকায় পাঠদান এবং চলাচলে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

সভাপতি নিজেই মাদরাসার মাঠে বালু রাখায় তিনি অধ্যক্ষ হলেও কিছু বলতে পারছেন না, বলেন তিনি।

মাদরাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি ইউপি চেয়ারম্যান শওকত রানা লাবু বালু ফেলার কথা স্বীকার করে বলেন, 'শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সাময়িক দুর্ভোগ হলেও মাদরাসার মাঠেও কিছু বালু দেওয়া হবে।'

গুরুদাসপুর মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. এয়াহেদুজ্জামান জানান, দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা হয়েছে। এই দীর্ঘ বিরতির পরও যদি নানা কারণে শিক্ষার্থীদের দুর্ভোগ হয় তা দুঃখজনক। সভাপতি হয়ে মাদরাসা মাঠে বালু রাখা তিনি ঠিক করেননি। খোঁজ নিয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এএস/এডিবি/