ন্যাভিগেশন মেনু

চিন ঝুঁকছে পাকিস্তানে, সৌদি আরব ঝুঁকছে ভারতে


চিন-পাকিস্তান সম্পর্ক নতুন নয়। পাকিস্তান সৃষ্টির পর থেকেই চিনের সঙ্গে সম্পর্ক অতি ঘনিষ্ঠ। কথায় আছে শত্রুর শত্রু- মিত্র। ভারতকে নিয়ে  চিন-পাকিস্তান সম্পর্ক তেমনই।

সম্প্রতি পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি হয়েছে মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সৌদি আরবের। সৌদির কাছ থেকে পাকিস্তান ৩৩০ কোটি ডলার ঋণ নিয়েছিল। সম্পর্কের অবনতি হওয়ায় সেই ঋণ ফেরত দিচ্ছে পাকিস্তান। সম্প্রতি দ্বিতীয় ধাপে ১০০ কোটি ডলার ফেরত দিয়েছে ইমরান খানের দেশ। এর আগে গত জুলাই মাসে দেশটি প্রথম ধাপে সৌদি আরবকে ১০০ কোটি ডলার ফেরত দেয় পাকিস্তান।

সৌদি আরবকে বাকি অর্থ পরিশোধ করার জন্য চিনের সহযোগিতা চেয়েছে ইসলামাবাদ। চিন থেকে বাণিজ্যিক ঋণ নিতে চায় পাকিস্তান।

পাকিস্তানকে যদি চিন এ ধরনের ঋণ দেয় তাহলে সেই অর্থ দিয়ে সৌদি আরবের বাকি ঋণ পরিশোধ করবে ইসলামাবাদ। আগামী মাসের মধ্যে পাকিস্তানকে সৌদি আরবের এ অর্থ পরিশোধ করতে হবে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে চিন হচ্ছে পাকিস্তানের অর্থ সহায়তাকারী সবচেয়ে বড় মিত্র দেশ।

অপরদিকে, ভারতে বড় অঙ্কের বিনিয়োগের পরিকল্পনা করছে সৌদি আরব। সৌদি রাষ্ট্রদূত ড. সৌদ বিন মোহাম্মদ আল সাতী এক সাক্ষাৎকারে পিটিআইকে বলেছেন, কিছু খাতে অগ্রাধিকারভিত্তিতে বড় ধরনের বিনিয়োগের সুযোগ নিয়ে দুই দেশ আলোচনা করছে।

সৌদি ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে ঘোষণা করেছিলেন, সৌদি আরব ভারতে পেট্রোকেমিক্যালস, পরিশোধন, অবকাঠামো, খনন ও উৎপাদন, কৃষি ছাড়াও অন্যান্য খাতে ১০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেশি বিনিয়োগ করবে।

আল সাতী বলেন, সৌদি আরব ভারতকে কৌশলগত অংশীদার এবং ঘনিষ্ঠ বন্ধু হিসেবে মূল্যায়ন করে । তিনি অংশীদারত্বের ক্ষেত্র হিসেবে প্রশিক্ষণ, জ্ঞান এবং সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলায় প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা ক্ষেত্রে চলমান সহযোগিতাকে চিহ্নিত করেন।

তিনি করোনা মহামারীতে অর্থনীতি পুনরুজ্জীবিত করতে ভারতের উদ্যোগের প্রশংসা করেন । তিনি বলেন, উভয় দেশের অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার এই অঞ্চলের অন্যান্য অর্থনীতিকেও উন্নত করতে সহায়তা করবে।

বহু বছর ধরে সৌদি আরবের ওপর ভারতের নির্ভরশীলতা মূলত তেলের কারণে, কারণ ভারত যে ক্রুড বা অপরিশোধিত তেল আমদানি করে থাকে তার প্রায় ২০ শতাংশই আসে সৌদি আরব থেকে।

সেদেশে কর্মরত ভারতীয় নাগরিকের সংখ্যা চল্লিশ লাখেরও বেশি, তারা প্রতি বছর দেশে রেমিট্যান্স পাঠান ১১শ’ কোটি ডলারেরও বেশি।

ভারত মনে করে, সাম্প্রতিককালে এই দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের একটা গুণগত উত্তরণ ঘটেছে।

অবশ্য সৌদি আরবের সঙ্গে পাকিস্তানের ঐতিহাসিকভাবে দীর্ঘদিনের সামরিক, অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ ছিল এবং রিয়াদ কখনও পাকিস্তানকে ঋণের অর্থ ফেরত দেওয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করেনি। কিন্তু চলতি বছরের প্রথম দিকে সৌদি আরব তার নীতি পরিবর্তন করে এবং ঋণের ৩৩০ কোটি ডলার ফেরত দেওয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করে।

এদিকে কাশ্মীরের মুসলমানদের ওপর দিল্লি নীপিড়ন চালাচ্ছে বলে পাকিস্তানের অভিযোগ। সৌদি আরব তা নিয়ে নিন্দা না করায় পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মেহমুদ কোরেশি রিয়াদের সমালোচনা করেছিলেন। এরপরই সৌদি আরব পাকিস্তানের প্রতি রুষ্ট হয়। পরিস্থিতি শান্ত করতে পাকিস্তান তার সেনাপ্রধান জেনারেল কামার জাভেদ বাজওয়াকে সৌদি সফরে পাঠায় কিন্তু সে প্রচেষ্টা সফল হয়নি।

এস এস