ন্যাভিগেশন মেনু

মির্জাগঞ্জে জরাজীর্ণ আর শ্রেণিকক্ষ সংকটে ১০ প্রাথমিক বিদ্যালয়


পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জ উপজেলার ১৪২টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে দশটি বিদ্যালয় অধিক জরাজীর্ণ ও শ্রেনীকক্ষ সংকটে রয়েছে। ফলে এ সকল বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও ছাত্র-ছাত্রীদের অভিভাবকদের মধ্যে চরম হতাশা বিরাজ করছে।

করোনা মহামারিতে প্রায় দেড় বছর এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার ফলে ঝুঁকিপূর্ণ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো অভিভাবক ও কর্তৃপক্ষের কারও নজরে আসেনি। 

দীর্ঘদিন বন্ধ শেষে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হলে এসব ঝুঁকিপূর্ণ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিশুদের পাঠানো নিয়ে চিন্তিত অভিভাবকসহ শিক্ষকরা।

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের তথ্য মতে, জরাজীর্ণ শ্রেণীকক্ষ সংকট থাকা বিদ্যালয়গুলো হচ্ছে, উত্তর চত্রা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ভিকাখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, সুদ্রা কালিকাপুর হাইস্কুল সংলগ্ন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কিসমত ছৈলাবুনিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, দক্ষিণ মির্জাগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, দক্ষিণ গাবুয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, পূর্ব বাজিতা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, উত্তর গাবুয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, দক্ষিণ সুলতানাবাদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও করমজাবুনিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।

এসব বিদ্যালয়ের অভিভাবক ও শিক্ষকরা কোমলমতি শিক্ষার্থীদের পাঠদান নিয়ে আতঙ্কে রয়েছেন। অনেকে আবার ঝুঁকিপূর্ণ বিদ্যালয় ছেড়ে অন্যত্র চলে গেছে বলে অভিযোগ শিক্ষকদের।

সরেজমিনে সুদ্রা কালিকাপুর হাইস্কুল সংলগ্ন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে দখা যায়, বিদ্যালয় ভবনটি ২০১৯ সালে পায়রা নদীর ভাঙ্গনের কবলে পড়লে ভবনটি নিলামে বিক্রি করা হয়। পর বেড়িবাধেঁর বাইরে জনৈক গাজী আব্দুস সালামের একটি পরিত্যক্ত টিনশেড ঘরে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালিত হয়ে আসছে। 

বিদ্যালয়টি বাধেঁর বাইরে থাকায় জোয়ারের পানিতে তলিয়ে যায়। ক্লাসরুম পানিতে তলিয়ে গেছে। বৃষ্টির পানিতে বেঞ্চ ও মেঝে নষ্ট হয়ে গেছে। ঘরের ভেতর কয়েকটি বেঞ্চ ও ২টি টেবিল ছাড়া অন্য কােনও আসবাবপত্র দেখা যায়নি। নোংরা অবস্থার পাশাপাশি দীর্ঘদিন বন্ধ থাকায় বিদ্যালয়টিতে ভুতুড়ে পরিবেশের সৃষ্টি হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটিতে শিক্ষার পরিবেশ একেবারেই বিপন্ন। এমতাবস্থায় এখানে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনায় শিক্ষক-কর্মচারী ও শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা চরম দুশ্চিন্তায় রয়েছেন।

ওই বিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক গাজী মো. শাহাদৎ জানান, 'দীর্ঘ দেড় বছর পর বিদ্যালয়ের পাঠদান কার্যক্রম শুরু হবে। বিদ্যালয় ভবন না থাকায় অভিভাবকরা ছেলে-মেয়েদের নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছেন।'

তিনি আরও বলেন, বিদ্যালয়টি নদীর তীরে হওয়ায় কোমলমতি শিক্ষার্থীরা খেলার সময় নদীতে পড়ে গেলে ঘটতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা।

ওই বিদ্যালয়র প্রধান শিক্ষক দিল আফরোজা জানান, পায়রা নদীর গর্ভে পাকা ভবনটি বিলীন হয়ে যাওয়ায় বাধেঁর বাইরে অন্যের পরিত্যক্ত টিনশেড ঘরে বিদ্যালয়ের কার্যক্রম পরিচালনায় খুবই অসুবিধা হচ্ছে। প্রতিদিন জোয়ারের সময় বিদ্যালয়ের মেঝে পানি ওঠে, বৃষ্টি নামলে উপর থেকে পড়ে পানি। ঘরটির এমন নড়বড়ে অবস্থা, যে কোনও মুহূর্তে ভেঙ্গে পড়ে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। তাই খুব শীঘ্রই জমি অধিগ্রহণ করে বিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি।

উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা কে এম নজরুল ইসলাম বলেন, জরাজীর্ণ ভবনগুলো সংস্কারের জন্য ইতোমধ্যেই কিছু বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। যে সকল বিদ্যালয় পাকা ভবন নেই সে সকল বিদ্যালয়ের তালিকা প্রস্তুত করে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে পাঠানো হয়েছে।

এআরএস/এডিবি/