ন্যাভিগেশন মেনু

মুন্সীগঞ্জে অস্ত্র ও স্বর্ণালঙ্কারসহ গ্রেপ্তার ৮


মুন্সীগঞ্জের মেঘনা তীরের চিতলিয়ায় দুটি স্বর্ণের দোকানে দুর্ধর্ষ ডাকাতির রহস্য উদঘাটন হয়েছে।

সোমবার (২০ সেপ্টেম্বর) ডাকাতির লুন্ঠিত স্বর্ণালংকার, ব্যবহৃত স্পিডবোট ও অস্ত্রসহ ৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

সোমবার দুপুরে মুন্সীগঞ্জের পুলিশ সুপার আব্দুল মোমেন এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান।

গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে রয়েছে ৭ ডাকাত ও ডাকাতির মাল কেনা এক ব্যবসায়ী। এ সময় উদ্ধার করা হয়েছে ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত পিস্তল, ১ রাউন্ড পিস্তলের গুলি, ৪ রাউন্ড শর্টগানের গুলি, ১টি চাপাতি, ৬৯ ভরি স্বর্ণালংকার ও নগদ ১৫ হাজার টাকা।

এছাড়া নারায়ণগঞ্জের বন্দর থেকে জব্দ করা হয় ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত স্পিডবোট। 

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, শরিয়তপুর জেলার জাজিরা থানার সোনার দেউল গ্রামের মৃত মোসলেম পেদার ছেলে মো. সাব্বির হোসেন (৪৯), মাদারীপুর জেলার শিবচর থানার চর চান্দা গ্রামের আরব আলী হাওলাদারের ছেলে আরিফ হাওলাদার (২৫), চাঁদপুর জেলার মতলব উত্তর থানার দূর্গাপুরের মৃত বাহর আলী প্রধানের ছেলে মোহাম্মদ আলী (৪০), শরিয়তপুরের নড়িয়া থানার রাজারিশ্বা গ্রামের মো. জুলমত আলী মোল্লার ছেলে মো. বিল্লাল মোল্লা (৩০), চাঁদপুর জেলার ফরিদগঞ্জ থানার উত্তর বিষ্ণুবন্দর গ্রামের মৃত অলি আহম্মেদ বেপারীর ছেলে মো. আনোয়ার হোসেন (৩২), মাদারীপুরের শিবচর থানার আ. রব মিয়া খাঁর ছেলে মো. ফারুক খাঁ (২১), শরিয়তপুরের নড়িয়া থানার পশ্চিম নওপাড়া গ্রামের মৃত আসমত কবিরাজের ছেলে মো. আফজাল হোসেন (৪৭)।

এছাড়া ডাকাতির অবৈধ স্বর্ণ কেনার দায়ে শরিয়তপুরের ডামুড্যা থানার বাহেরচর গ্রামের মো. ইদ্রিস বেপারীর ছেলে স্বর্ণ ব্যবসায়ী মো আক্তার হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে ঘটনার ৫ দিনের মধ্যেই মুন্সীগঞ্জ, মাদারীপুর, শরীয়তপর, নারায়ণগঞ্জ এবং ঢাকা থেকে ডাকাতি কাজে ব্যবহৃত স্পিডবোট, লুন্ঠিত ৬৯ ভরি স্বর্ণালংকার, সংঘবদ্ধ ডাকাত চক্রের ৭ সদস্য এবং লুণ্ঠিত স্বর্ণের ক্রেতাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

পুলিশ সুপার জানান, ডাকাতির পরই অভিযানে নামে জেলা পুলিশ। জেলা পুলিশ ও ডিবি পুলিশ যৌথ অভিযানে রবিবার দিনভর বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়ে ও তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে মুন্সীগঞ্জ, মাদারীপুর, শরিয়তপুর ও ঢাকা থেকে ডাকাতদের গ্রেপ্তার করা হয়। ডাকাতির পরই ডাকাতদল মালামাল বিক্রি করে দেয় এক দোকানদারের কাছে।

তিনি বলেন, গ্রেপ্তারের সময় ডাকাত কাটা সাব্বির ও স্বপনের কাছ থেকে একটি ম্যাগাজিনসহ পিস্তল ও এক রাউন্ড পিস্তলের গুলি, ডাকাত মোহাম্মদ আলীর কাছ থেকে চার রাউন্ড শর্টগানের গুলি, ডাকাত আনোয়ার হোসেনের কাছ থেকে একটি চাপাতি, ডাকাত ফারুকের কাছ থেকে ১০ হাজার,আরিফের কাছ থেকে ৫ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়।

পুলিশ সুপার আরও জানান, গ্রেপ্তারকৃতরা পেশাদার ডাকাত, আন্তঃজেলা ডাকাত দলের সদস্য। এর আগেও তারা লঞ্চডাকাতিসহ নানা অপরাধের সাথে জড়িত ছিল। ডাকাতচক্রটি মুন্সীগঞ্জ, চাঁদপুর, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জসহ নদীসংলগ্ন বিভিন্ন জেলায় ডাকাতি করে আসছিল। চক্রের বাকি সদস্যদের গ্রেপ্তার ও স্বর্ণালংকার উদ্ধারের চেষ্টা চলছে।

সিসি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা যায়, গত ১৫ সেপ্টেম্বর বুধবার রাত আড়াইটায় চিতলিয়ায় দুটি স্বর্ণের দোকানে প্রায় ২০ জনের ডাকাতদল নদী পথে চিতলিয়া বাজারে এসে অস্ত্রের মুখে নিখিল বনিক এবং মনু নাগ স্বর্ণ শিল্পালয় থেকে অলংকার ও টাকা লুট করে নিয়ে যায়। ডাকাতরা ১০০ ভরি স্বর্ণ, নগদ ৩৫ লাখ টাকা ৪টি মোবাইল ফোন লুট করে স্পিডবোট যোগে রজতরেখা নদী হয়ে স্পিডবোটে মাদারীপুরের শিবচর চলে যায়। পরে ডাকাতদের ধরতে মাঠে নামে পুলিশ।

এ বিষয়ে নিখিল বনিক স্বর্ণশিল্পালয়ের মালিক রিপন বনিক বাদি হয়ে মুন্সীগঞ্জ সদর থানায় অজ্ঞাত ১৮/২০ জনের নামে ডাকাতির মামলা করেন। ঘটনার ৫ দিনের মধ্যেই ডাকাতদের গ্রেপ্তার করা হলো।

সিবি/এডিবি/