ন্যাভিগেশন মেনু

মেয়ের পাত্র বাছাই করতে গিয়ে গণধর্ষণের শিকার হলেন মা


ঘটকের সঙ্গে মেয়ের পাত্র বাছাই করতে গিয়ে গণধর্ষণের শিকার হলেন মা। এ কাণ্ড সাতক্ষীরা জেলার শ্যামনগর উপজেলায়।

মেয়ের জন্য ভাল পাত্র দেখানোর নাম করে এক ঘটক নারীকে ফাঁদে ফেলে তার চারসঙ্গী গণধর্ষণ করে। ধর্ষণের শিকার চার সন্তানের জননী থানায় মামলা করেছেন।

বুধবার রাতে স্থানীয় পাঁচ লম্পটের লালসার শিকার হন ওই বিধবা নারী। বৃহস্পতিবার  বিকেলে পাঁচ ধর্ষকের বিরুদ্ধে শ্যামনগর থানায় মামলা করেছেন।

মামলার আসামিরা হল, উপজেলার কুলতলীর অফেজউদ্দীনের ছেলে মহসীন হেসেন (৩০), রামচন্দ্রপুরের মুজিবর রহমানের ছেলে সফিকুল (২৪), মৃত আব্দুল দফাদারের ছেলে হান্নান (২৭), দক্ষিণ হাজীপুর দীঘির পাড় এলাকার আদম আলীর ছেলে সফিকুর রহমান বাবু (৩০) ও কাটাখালীর আব্দুস সাত্তার গাইনের ছেলে গোলাম রব্বানীর (২৩)।

উপজেলার শ্রীফলকাঠি গ্রামে বসবাসরত ওই নারী নিজের মেয়ের জন্য পাত্র দেখতে কদমতলা এলাকায় যাওয়ার পর ঘটক ও তার চার সহযোগী কৌশলে তাকে আটকে রেখে পাশবিক নির্যাতন চালায়।

শ্যামনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজমুল হুদা জানান, নির্যাতিতার লিখিত অভিযোগ মামলা হিসেবে রেকর্ড করা হয়েছে। আসামিদের গ্রেফতারে পুলিশ মাঠে নেমেছে।

এদিকে, অভিযোগ উঠেছে পাঁচ ধর্ষকের একজন স্থানীয় এক প্রভাবশালী নির্যাতিতা নারীর পরিবারের সঙ্গে আপোষরফার প্রাথমিক চেষ্টায় ব্যর্থ হয়ে দরিদ্র ওই নারীর পরিবারকে চাপ প্রয়োগ করছে।

নির্যাতনের শিকার নারী জানান, তার মেয়ের বিয়ের জন্য পাত্র দেখানোর কথা বলে ঘটক কুলতলী গ্রামের অফেজউদ্দীন গাজীর ছেলে মহসীন হোসেন তাকে কদমতলায় নিয়ে যায়। 

এরপর আরও একজন ভালো পাত্রের অভিভাবকের সঙ্গে কথা বলার অজুহাতে বুধবার বিকেলে তাকে ভাড়াটিয়া মোটরসাইকেল চালক (বাবু) এর সহায়তায় কুলতলী গ্রামে নিয়ে যায় মহসীন। 

বিধবা ওই নারী আরও জানান, পথিমধ্যে সন্ধ্যা হওয়ার সুযোগে একই এলাকার একটি চিংড়ি ঘেরে আটকে রেখে চার সহযোগীসহ মহসীন তাকে ধর্ষণ করে। 

নির্যাতনের শিকার নারীকে উদ্ধারকারী ঘের কর্মচারী আলমগীর হোসেন ও শুধাংসু মণ্ডল জানান, রাতে তারা পাহারার সময়ে অনতিদূরের একটি চিংড়ি ঘেরের বাসা থেকে ওই নারীর চিৎকার শুনতে পান। দ্রুত তারা ঘটনাস্থলে পৌঁছাতেই সফিকুল, মহসীন, বাবু, গোলাম রব্বানী ও হান্নানসহ আরও দুইজনকে হেঁটে যেতে দেখেন।

পরবর্তীতে নির্যাতনের শিকার নারীকে উদ্ধার করে রাতে স্থানীয় গ্রাম পুলিশ নজরুল ইসলামের বাড়িতে নিয়ে যান তারা।

তারা আরও জানান, ঘটনাস্থলে তারা না পৌঁছালে ধর্ষকদের অপক্ষেমান আরও কয়েকজন সহযোগীর দ্বারা নির্যাতিত হওয়ার শংকা ছিল ওই নারীর।

গ্রাম পুলিশ নজরুল ইসলাম জানান, রাতে স্থানীয়রা ধর্ষণের শিকার ঐ নারীকে তার (গ্রাম পুলিশ) বাড়িতে পৌঁছে দেয়। পরে রাত গভীর হওয়াতে নিজের বাড়িতে রাখার পর দুপুরে শ্যামনগর থানায় পৌঁছে দেওয়া হয়।

তিনি আরও জানান, ঘটনাটি জানাজানি হতেই ধর্ষক সফিকুল ইসলামের মামা রামচন্দ্রপুর গ্রামের আব্দুল খালেক ৫০ হাজার টাকায় বিষয়টির মীমাংসা করতে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেন।

ধর্ষণের শিকার নারীর বিষয়ে পুলিশকে রাতেই অবহিত করা মানবাধিকার কর্মী হাফিজুর রহমান নাইম জানান, ধর্ষণের শিকার নারীর কাছে বর্ণনা শুনে রাতেই স্থানীয়রা ঘটনাস্থলে যেয়ে সত্যতা পান।

হাফিজুর রহমান নাইম আরও জানান, অভিযুক্তরা প্রভাবশালী হওয়াতে দরিদ্র ও সহায় সম্বলহীন ওই নারীর জীবনে ঘটে যাওয়া এমন দুঃসহ ঘটনার বিচার পাওয়া নিয়ে শুরুতেই সংশয়ের সৃষ্টি হয়েছে।

এস এস