ন্যাভিগেশন মেনু

মোবাইলকোর্ট পরিচালনায় আরও সতর্ক হওয়া দরকার: হাইকোর্ট


বাল্যবিয়ের ঘটনায় নেত্রকোনার আটপাড়া উপজেলায় দুই শিশুকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে সাজা দেওয়ার ঘটনায় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের মোবাইলকোর্ট আইন প্রয়োগের ব্যাপারে আরও সতর্ক হওয়া দরকার বলে পর্যবেক্ষণ দিয়েছেন হাইকোর্ট। সংশ্লিষ্ট আইনের বিষয় যথাযথ প্রশিক্ষণ নিশ্চিত করা দরকার বলেও মন্তব্য করেছেন আদালত।

বৃহস্পতিবার (২ সেপ্টেম্বর) বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ মন্তব্য করেন।

আদালত বলেছেন, কার্যালয়ে বসে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা যাবে না। ঘটনাস্থলেই ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করতে হবে। সেইসঙ্গে বাল্যবিয়ের ঘটনাকে কেন্দ্র দুই শিশুকে সাজা দেওয়ায় ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারক সহকারী কমিশনার (ভূমি) রাজিয়া সুলতানা ভুল স্বীকার করে ক্ষমার আবেদনটি নেত্রকোনার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে (এডিএম) নিস্পত্তি করতে বলেছেন।

এর আগে বুধবার (১ সেপ্টেম্বর) বাল্যবিয়ের ঘটনাকে কেন্দ্র করে নেত্রকোনার আটপাড়া উপজেলায় দুই শিশুকে সাজা দেওয়ার ঘটনায় ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারক সহকারী কমিশনার (ভূমি) রাজিয়া সুলতানা ভুল স্বীকার করে ক্ষমা প্রার্থনা করেন। একইসঙ্গে ভবিষ্যতে আর এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি হবে না বলে অঙ্গীকার করে অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয়ের মাধ্যমে জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে দাখিল করা লিখিত ব্যাখ্যায় ভুল স্বীকার ও ক্ষমা চাওয়া হয়। এর একটি কপি হাইকোর্টে দাখিল করা হয়।

এদিকে হাইকোর্ট গত ৫ আগস্ট এক আদেশে সংশ্লিষ্ট ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারকের দেওয়া ব্যাখ্যার কপি আদালতে দাখিল করতে জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের প্রতি নির্দেশ দেন। নির্দেশে সংশ্লিষ্ট ম্যাজিস্ট্রেটের দাখিল করা লিখিত ব্যাখ্যার সত্যায়িত কপি হাইকোর্টে দাখিল করা হয়।

প্রসঙ্গত, গত ১ আগস্ট প্রেমের সম্পর্কের জেরে পারিবারিকভাবে নেত্রকোনার আটপাড়া উপজেলার শ্রীরামপাশা গ্রামের নবম শ্রেণির এক ছাত্রীর (১৫ বছর) সঙ্গে সমবয়সী মহেশ্বরখিলা গ্রামের একজনের বিয়ের আয়োজন করা হয়। এই বিয়ের খবর পেয়ে সহকারী কমিশনার (ভূমি) রাজিয়া সুলতানা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে পুলিশ পাঠিয়ে তাদের আটক করে নিজ কার্যালয়ে নিয়ে একমাস করে সাজা দেন। এরপর তাদের গাজীপুর শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়। 

এ ঘটনা নিয়ে গত ৪ আগস্ট একটি জাতীয় দৈনিকে ‘বাল্যবিবাহ নিরোধ আইনে দুই শিশুকে দণ্ড’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশের পর ইমেইলে চিঠি পাঠিয়ে বিষয়টি হাইকোর্টের বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিমের নজরে আনেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির। তাদের মুক্তির নির্দেশনা চাওয়া হয় ওই চিঠিতে। কারো মুক্তির জন্য কোনো বিচারপতির কাছে চিঠি দেওয়ার ঘটনা এই প্রথম। চিঠি পাওয়ার পরই গত ৪ আগস্ট হাইকোর্ট শিশু দুটিকে তাৎক্ষণিক মুক্তির নির্দেশ দেন।    

এসএ/এডিবি/