ন্যাভিগেশন মেনু

যানজট কবলে ২২০ কি:মি: রাস্তা পাড়ি দিতে সময় নিল ৩৬ ঘণ্টা


প্রতিবারের মতো এবারও মানুষ করোনাকে তুড়ি মেরে গ্রামে ছুটে গিয়েছেন ঈদ করতে। তবে করোনার মধ্যেও এবার ঈদ যাত্রা ছিল অন্যরকম। বাসে ট্রেনে মানুষের উপচেপড়া ভিড়। একসঙ্গে প্রচুর বাস মহাসড়কে নেমে পড়ার ফলে প্রচুর যানজটের সৃষ্টি হয়।

এই যানজটের আঁচ রক্ষা পায়নি রাজধান ঢাকাও। ঢাকা থেকে বের হওয়ার রাস্তাগুলো ছিল যানবাহনে ভরপুর। ঢাকা থেকে উত্তরবঙ্গগামী সড়কে যানজট এতোটাই ছিল যে অবর্ণনীয়।

২৫ ঘণ্টার আগে উত্তরবঙ্গ রংপুরে পৌঁছানো ছিল  অস্বাভাবিক। কারো কারো ৩৫ ঘণ্টা বা তারচেয়েও বেশি লেগেছে।

ঈদ করতে সাংবাদিক কেরামত উল্লাহ ঢাকা থেকে রংপুরের পীরগঞ্জে রওনা দিয়েছিলেন। কিন্তু ১৯ ঘণ্টায় সর্বশেষ তিনি রাস্তায় থেকে জানিয়েছেন এক অবর্ণনীয় অভিজ্ঞতা। বিপ্লব নিজের ফেসবুকে লিখেছেন, একদিন-একরাত রাস্তায়.. রংপুর যাওয়ার ২২০ কিলোমিটার মহাসড়ক থমকে আছে।

গাজীপুরের চন্দ্রা থেকে গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ পর্যন্ত। কেউ ২৪ ঘণ্টা কেউ ৩৬ ঘণ্টা বা তারও বেশি সময় ধরে রাস্তায় । নারী, শিশু, বয়স্করা অবর্ণনীয় দুর্ভোগে । বাথরুম করার সুযোগ নেই, খাবার নেই। রাস্তার পাশের কোনও দোকানে বিস্কুটও নেই।

বাস-ট্রাকে থাকা শিশুরা খাবারের জন্য কাঁদছে। হাজারে মানুষ গাড়ি থেকে নেমে হাঁটছেন। তাদের মাথায় ব্যাগ, কোলো শিশু।

কেরামত উল্লাহ বিপ্লব বলেন, যেন যুদ্ধলাগা কোনও দেশ থেকে অন্য কোথায় চলে যাচ্ছে লাখে মানুষ। গ্রাম, বাড়ি , স্ত্রী-স্বামী -সন্তান, প্রিয় বাবা মা বা সজনের জন্য ঘোর লাগা মানুষের ছুটছে। কোনও কোনও গাড়ির জ্বালানি ফুরিয়ে রাস্তায় পড়ে আছে।

তার কারণেও জ্যাম কয়েক মাইল। এ কোন ইদযাত্রা। গতকাল ভোর সকাল ৬ টা থেকে ১৯ ঘন্টা এই ঘোরে আছি .. অসহ্য ক্লান্তি- কষ্ট নিয়ে। ১৯ ঘণ্টা তিনি বগুড়া জেলায় আটকে ছিলেন।

তবে সবচেয়ে কঠিন অভিজ্ঞতা জানান কণ্ঠশিল্পী নাহিদ হাসান। তিনি জানান, আমরা একটা মাইক্রোবাস ভাড়া নিয়ে ঢাকা থেকে রওনা হয়েছি। এখনো গ্রামের বাড়ি ঠারগাঁওয়ে পৌঁছাতে পারিনি।' ঢাকার কল্যাণপুর থেকে মাইক্রোবাস নিয়ে পরশু সোমবার রাত ১১ টায় রওনা দেন নাহিদ।

মঙ্গলবার বিকেলে তিনি ফেসবুকের মাধ্যমে জানান টাঙ্গাইলের এলেঙ্গায় রয়েছেন। আজ ঈদের দিন সকালে ঈদের শুভেচ্ছা জানালেন রংপুর পেরিয়ে তারাগঞ্জ থেকে।

নাহিদ জানান পথে পথে এতো পরিমাণ ভোগান্তির মুখোমুখি তিনি। মানুষের এতো কষ্ট চোখে দেখেছি এটা আমার কাছে ছিল একদম নতুন। এমন অভিজ্ঞতা হয়নি। জ্যাম  'কোথায় ছিল না? কল্যাণপুর থেকে শুরু করে গাবতলী, চন্দ্রা, টাঙ্গাইল মহাসড়ক, এলেঙ্গা, বঙ্গবদনহু সেতু পেরিয়ে শেরপুর, মহাস্থান, গোবিন্দগঞ্জ। মানে পুরোটা পথ জুড়ে ছিল জ্যাম। তারাগঞ্জে আমাদের চাকা পাঙ্কচার হয়েছে। এখন নেমে নাবিলে পরিবহণ উঠলাম।'

এস এস