ন্যাভিগেশন মেনু

রবিবার রাতে কালী পূজা


সনাতন বাঙালি হিন্দু সম্প্রদায়ের দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্মীয় উৎসব শ্যামা পূজা। প্রতিবছরের মতো এবারও বাংলাদেশের সর্বত্র হিন্দু সম্প্রদায় রবিবার (২৭ অক্টোবর) রাতে উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে কালী পূজা উদযাপন করবেন। পূজা শুরু হবে রাত ৯টার পর। এ দিন হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন স্বর্গীয় পিতা-মাতা, আত্মীয়-স্বজনদের উদ্দেশ্যে প্রতিটি বাড়ি-ঘরে প্রদীপ প্রজ্জ্বলন করবেন।

নারীকে মাতৃরূপে পূজা করা তথা নারীকে সর্বদা পূজনীয় শক্তিরূপে ভূষিত করা সনাতন শাস্ত্রে স্পষ্টভাবে পাওয়া যায়। ‘সনাতন’ শব্দের মানে যার আদি ও অন্ত নেই, তেমনি জগতের আদি ধর্মশাস্ত্রও সনাতন শাস্ত্র। ব্রহ্মা, বিষ্ণু, মহেশ্বর ‘ওম’ শব্দে একে একাত্ম ত্রিমূর্তি।

 এই ত্রিমূর্তি বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের সৃষ্টিকর্তা, জগতের প্রাণের সঞ্চারক, ‘আদ্যাশক্তি’ দেবীরূপিনী ত্রিমূর্তির সম্মিলিত প্রকৃতি রূপ। কার্তিক মাসের অমাবস্যা তিথিতে সাধারণত শ্যামা পূজা বা কালী পূজা অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে।

হিন্দু পূরাণ মতে, কালী দেবী দুর্গারই একটি শক্তি। সংস্কৃত ভাষার ‘কাল’ শব্দ থেকে কালী নামের উৎপত্তি। কালী পূজা হচ্ছে শক্তির পূজা।

জগতের সকল অশুভ শক্তিকে পরাজিত করে শুভশক্তির বিজয়ের মধ্যেই রয়েছে কালীপূজার মাহাত্ম। কালী দেবী তার ভক্তদের কাছে শ্যমা, আদ্য মা, তারা মা, চামুন্ডি, ভদ্রকালী, দেবী মহামায়াসহ বিভিন্ন নামে পরিচিত।

কালী পূজার দিন হিন্দু সম্প্রদায় সন্ধ্যায় তাদের বাড়িতে ও শ্মশানে প্রদীপ প্রজ্জ্বলন করে স্বর্গীয় বাবা-মা ও আত্মীয়-স্বজনদের স্মরণ করেন। এটিকে বলা হয় দীপাবলী।

দুর্গাপূজার মতো কালীপূজাতেও গৃহে বা মণ্ডপে মৃন্ময়ী প্রতিমা নির্মাণ করে পূজা করা হয। মন্দিরে বা গৃহে প্রতিষ্ঠিত প্রস্তরময়ী বা ধাতুপ্রতিমাতেও কালীপূজা করা হয়। মধ্যরাত্রে তান্ত্রিক পদ্ধতিতে মন্ত্রোচ্চারণের মাধ্যমে পূজা অনুষ্ঠিত হয়। দেবীকে ছিন্নমস্তকসহ বলির পশুর রক্ত, মিষ্টান্ন, অন্ন বা লুচি, মাছ ও মাংস উৎসর্গ করা হয়।

তবে গৃহস্থ বাড়িতে সাধারণত অতান্ত্রিক ব্রাহ্মণ্যমতে আদ্যাশক্তি কালীর রূপে কালীর পূজা অনুষ্ঠিত হয়। লোকবিশ্বাস অনুযায়ী, কালী শ্মশানের অধিষ্ঠাত্রী দেবী। এ কারণে বিভিন্ন অঞ্চলে শ্মশানে মহাধুমধামসহ শ্মশানকালী পূজা অনুষ্ঠিত হয়।

আরো পড়ুনঃ

রবিবার রাতে কালী পূজা

চ্যানেলে চ্যানেলে দূর্গাপূজার আয়োজন

রাজধানীতে ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির, রাম কৃষ্ণ মিশন ও মঠ, সিদ্বেশ্বরী কালী মন্দির, সবুজবাগ থানাধীন শ্রী শ্রী বরদেশ্বরী কালীমাতা মন্দির, পুরান ঢাকার ঐতিহাসিক ৮৪ নম্বর বনগ্রাম রোডের পাঁচ শত বছরের প্রাচীন রাধাগোবিন্দ জিঁও ঠাকুর মন্দির, পোস্তাগোলা মহাশ্মশান, রামকৃষ্ণ মিশন, ঢাকেশ্বরী বাড়ী, সূত্রাপুরের বিহারীলাল জিঁও মন্দির, গৌতম মন্দির, রামসীতা মন্দির, ঠাটারী বাজারে শিব মন্দির, তাঁতী বাজার, শাঁখারী বাজার, বাংলা বাজারসহ বিভিন্ন মণ্ডপ ও মন্দিরে শ্যামা পূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

ঢাকার ঐতিহাসিক জাতীয় মহাশ্মশান পোস্তগোলায় এদিন লক্ষ লক্ষ লোকের সমাগম ঘটে। পোস্তগোলায় শ্মশান কালী পূজা অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে।

মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটি সূত্রে জানা গেছে, এবার রাজধানীতে পাঁচ শতাধিক মণ্ডপে কালী পূজা অনুষ্ঠিত হবে। 

এস এস