ন্যাভিগেশন মেনু

রায়হানের মৃত্যু: ১১১ আঘাতের মধ্য ১৪টি ছিল গুরুতর


‘পুলিশের হেফাজতে নির্যাতনে নিহত’ যুবক রায়হান উদ্দিনের দ্বিতীয় ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টে  তার শরীরে ১১১ টি আঘাতের চিহ্ন পেয়েছেন ময়নাতদন্তকারী  চিকিৎসকরা। যার মধ্যে ১৪টি গুরুতর ছিলো বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

রিপোর্টে বলা হয়, রায়হানের ডান হাতের কনিষ্ঠ আঙুল আর বাম হাতের অনামিকার নখ উপড়ানো ছিল। অসংখ্য আঘাতের কারণে হাইপোভলিউমিক শক ও নিউরোজেনিক শকে মস্তিষ্ক, হৃৎপিণ্ড, ফুসফুস, কিডনিসহ গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গগুলো কর্মক্ষমতা হারানোর কারণে তার মৃত্যু হয়েছে।

রিপোর্টে বলা হয়েছে, মৃত্যুর ২ থেকে ৪ ঘণ্টা আগে তার উপর নির্যাতন চালানো হয়। তবে মৃত্যুর পূর্ণাঙ্গ কারণ ভিসেরা প্রতিবেদন পাওয়ার পর বলা যাবে বলে প্রাথমিক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।

পিবিআই, সিলেট-এর পুলিশ সুপার (এসপি) খালেদ উজ্জামান রিপোর্ট প্রাপ্তির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, রায়হানের ময়নাতদন্তের প্রাথমিক (প্রিলিমিনারি) রিপোর্ট তারা শুক্রবার রাতে হাতে পেয়েছেন। ময়নাতদন্ত রিপোর্টে তার শরীরে অসংখ্য আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। পাশাপাশি রায়হানের ভিসেরাও সংগ্রহ করা হয়েছে। রিপোর্টের জন্য ভিসেরা পাঠানো হবে চট্টগ্রামে। ভিসেরা রিপোর্ট (মতামত) আসার পর ময়নাতদন্তের রিপোর্টও একসাথে কম্পাইল (সংযুক্ত) করা হবে। এরপর পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে বলে জানান এ পিবিআই কর্মকর্তা।

রায়হানের দ্বিতীয় ময়নাতদন্তের জন্য আইনানুযায়ি সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. শামছুল ইসলামসহ তিন সদস্যের মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়। অন্যরা হচ্ছেন ডা. আবদুল্লাহ আল হেলাল ও ডা. দেবাশীষ পোদ্দার। গলিত লাশ হওয়ায় পুনরায় ময়নাতদন্ত শেষে নিহতের শরীর থেকে নেওয়া আলামত চট্টগ্রামে পাঠানো হয়েছে। এ রিপোর্ট আগামী ১৫ থেকে ২৫ দিনের মধ্যে তারা পাবেন। পরে পুলিশের কাছে সেটিও হস্তান্তর করা হবে।

সিসি ক্যামেরার ফুটেজ অনুযায়ি, ১০ অক্টোবর রাত ৩টা ৯ মিনিট ৩৩ সেকেন্ডে স্বাভাবিক অবস্থায় রায়হানকে সিলেটের বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে ধরে আনা হয়। পরে সকাল ৬টা ২৪ মিনিট ২৪ সেকেন্ডে ফাঁড়ি থেকে বের করা হয়। ৬টা ৪০ মিনিটে ভর্তি করা হয় সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। সেখানে সকাল ৭টা ৫০ মিনিটে তিনি মারা যান।

পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, মারা যাওয়ার পর রায়হানের শরীরে বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়। তার হাতের নখও উপড়ানো ছিল। ময়নাতদন্ত শেষে রবিবার আখালিয়া জামে মসজিদ সংলগ্ন কবরস্থানে রায়হানকে দাফন করা হয়। এ ঘটনায় রায়হানের স্ত্রীর দায়ের করা মামলার তদন্ত করছে পিবিআই।

ওয়াই এ/এডিবি