ন্যাভিগেশন মেনু

রিয়া কারাগারে খাচ্ছেন ডাল–রুটি, মেঝেতে ঘুমাচ্ছেন চাটাই পেতে


আরাম-আয়েশ যার পিছু ছাড়তো না। তাকেই কিনা শীতাতপনিয়ন্ত্রিত কক্ষের নরম বিছানা ছেড়ে মেঝেতে চাটাই পেতে ঘুমাতে হচ্ছে। 

হ্যাঁ এমনই অবস্থা সামলাতে হচ্ছে বলিউডের নায়িকা রিয়া চক্রবর্তীকে। আপাতত জেলখানায় দিন কাটছে রিয়া চক্রবর্তীর। আদালত জামিনের আবেদন খারিজ করার পর এখন অন্তত ১৪ দিন তাঁকে জেলহাজতে থাকতে হবে।

বৃহস্পতিবারই সুশান্ত সিং রাজপুতের মামলার ‘ড্রাগ অ্যাঙ্গেল’–এর শুনানি ছিল মুম্বাইয়ের বিশেষ আদালতে। অভিনেত্রী রিয়া চক্রবর্তীর জামিনের আবেদন শুনানির দিন ধার্য ছিল। গতকাল সেই শুনানি হয়নি, আদালত কোনো সিদ্ধান্ত দেননি। আজ শুক্রবার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানানোর কথা ঘোষণা করেছিলেন আদালত। নির্ধারিত সময়ে আজ সকালে মামলার শুনানি হয়। 

রিয়া চক্রবর্তী ও তাঁর ভাই শৌভিক চক্রবর্তীর জামিনের আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন আদালত। ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বিচারকের সামনে রিয়া হাজির হয়েছিলেন।

রিয়াসহ আটক অন্য আসামিদের জামিনের আবেদনে আপত্তি জানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ ব্যুরো। বাদীর পক্ষ থেকে আদালতে জানানো হয়, রিয়া ও শৌভিক জামিন পেলে বাইরে বেরিয়ে তাঁরা অপরাধমূলক কাজ করবেন। বিশেষ করে, তথ্য ও প্রমাণ নষ্ট করার ঝুঁকি রয়েছে। ২২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত রিয়াকে পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

শুনানিতে বাদীর পক্ষের আইনজীবী জানিয়েছেন, এ মামলায় প্রায় ১ লাখ ৮৫ হাজার ২০০ টাকার মাদক উদ্ধার করা হয়েছে। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ ব্যুরোর কর্মকর্তাদের জেরার মুখে রিয়া স্বীকার করেছেন, তিনি ড্রাগ নিতেন। 

জামিনের পর তিনি আবার মাদক নিতে পারেন। তবে রিয়া এ–ও জানিয়েছেন, জোর করে তাঁর কাছ থেকে এ ধরনের জবানবন্দি নেওয়া হয়েছে। দুই পক্ষের কথা শুনে বিচারক জি বি গুরাও মূল আসামি রিয়া ও শৌভিক চক্রবর্তীর সঙ্গে আরও চারজনের জামিনের আবেদনের রায় ঘোষণা করেন।

গত ১৪ জুন মুম্বাইয়ের ফ্ল্যাট থেকে তরুণ বলিউড তারকা সুশান্ত সিং রাজপুতের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। প্রাথমিক ও চূড়ান্ত তদন্তে আত্মহত্যাই বলা হয়েছে। তবে শুরু থেকেই ‘সুশান্তের মৃত্যুর তদন্ত সিবিআই করুক’—নানা মহল থেকে এমন দাবি উঠেছিল। এরপর শীর্ষ আদালতের নির্দেশে একযোগে মামলার তদন্তে নামে সিবিআই।

সুশান্তের মৃত্যুর তদন্তে রিয়া চক্রবর্তীকে গত মঙ্গলবার গ্রেপ্তার করে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ ব্যুরো। অভিযোগ, মাদক চক্রের সঙ্গে রিয়ার যোগাযোগ। 

গ্রেপ্তার হওয়ার পর তাঁর ডাক্তারি পরীক্ষা ও কোভিড পরীক্ষার জন্য নিয়ে যাওয়া হয় মুম্বাইয়ের সিওন হাসপাতালে। মঙ্গলবার রাতে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ বুরোর হেফাজতেই রাখা হয়েছিল তাঁকে। বুধবার তাঁকে স্থানান্তর করা হয় বাইকুলা জেলে।

বেশ কিছু ভারতীয় গণমাধ্যমে বলা হয়, জেলে স্থানান্তর করে রাতেই রিয়াকে সেখানকার নারী সেলে পাঠানো হয়। বর্তমানে সেখানে ১ নম্বর সেলে রাখা হয়েছে তাঁকে। সেখানে স্বাভাবিক নিয়মে জেল কর্তৃপক্ষের দেওয়া সবজি ও ডাল–রুটি খান। মেঝেতে চাটাইয়ে ঘুমিয়ে রাত কাটিয়েছেন তিনি।

রিয়া তাঁর জামিন আবেদনে লিখেছিলেন, তাঁকে জোর করে বয়ানে সই নেওয়া হয়েছে। এমন সব কথা লেখা হয়েছে, যা তিনি বলেননি। রিয়ার আইনজীবীও আদালতে একই কথা বলেন, রিয়াকে দোষ স্বীকার করতে বাধ্য করা হয়েছে। রিয়া কোনো অপরাধ করেননি। তাঁকে অন্যায়ভাবে ফাঁসানো হচ্ছে।

রিয়া এনসিবির জেরার মুখে স্বীকার করেছিলেন যে তিনি হয়তোবা কখনো গাঁজা নিয়েছেন। এই বলিউড নায়িকা এ–ও বলেছিলেন, সুশান্তের কথায় তিনি মাদক সেবন করেছিলেন। রিয়ার হোয়াটসআপ চ্যাট থেকে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ ব্যুরোর কর্মকর্তারা এসব তথ্য পায়। এই চ্যাটে রিয়া তাঁর ভাই শৌভিক চক্রবর্তীর কাছে ড্রাগ চেয়ে পাঠিয়েছিলেন।

এস এস