ন্যাভিগেশন মেনু

রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে সরিয়ে নেওয়ার বিরুদ্ধে মহল বিশেষের অপপ্রচার


২০১৭ সালে মায়ানমারে সেনা অভিযানের মুখে এ পর্যন্ত সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশের কক্সবাজার জেলার নানাস্থানে অবস্থান করছে। এরআগে এসেছে আরও চার লাখ। মোট ১১ লাখ রোহিঙ্গা নিয়ে বাংলাদেশ কিছুটা হলেও বিব্রতকর অবস্থায় রয়েছে।

এই বিপুল সংখ্যক রোহিঙ্গা কক্সবাজারের টেকনাফসহ আরও ২/৩ স্থানে থাকায় পরিবেশসহ নানা ধরনের সমস্যা তৈরি হয়েছে। এরমধ্যে ভাবতে হবে কক্সবাজার দেশের প্রধান সমুদ্র সৈকত তথা পর্যটন কেন্দ্র।

বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে পর্যটকরা বিশ্বের বৃহত্তম এই সি বিচে বেড়াতে আসেন। বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের দিকে তাকিয়ে সেখানকার পরিবেশের দিকে নজর রাখা সরকারের অন্যতম দায়িত্ব।

বিষয়টি অনুধাবন করেই সরকার রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে সরিয়ে নিতে উদ্যোগী হয়েছেন। কিন্তু বাদ সেধেছে একটি মহল। তারা এ নিয়ে কূটচাল শুরু করেছে। তারা নিজেদের হীনস্বার্থে এটা করছে।  

সরকার ভাসানচরে প্রায় আড়াই হাজার কোটি টাকা খরচ করে রোহিঙ্গাদের জন্য আবাসন ব্যবস্থা করেছে। কিন্তু স্বার্থান্বেষীদের অপপ্রচারে ফলে রোহিঙ্গারা সেখানে যেতে রাজি হচ্ছে না। তারা নানা টালবাহনা শুরু করেছে।

হাতিয়ার চরঈশ্বর ইউনিয়নের ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের আবাসন এবং কর্মসংস্থানের লক্ষ্য নিয়ে কাজ শুরু হয় ২০১৭ সালের নভেম্বরে। ২০১৯ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে এই আশ্রয়ণ প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা। এরইমধ্যে ৮০ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। প্রায় ১ লাখ ২৩ হাজার রোহিঙ্গাকে সেখানে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা থাকলেও তা থমকে আছে রোহিঙ্গাদের আপত্তির মুখে।

আরো পড়ুন: রোহিঙ্গা ইস্যুতে পদক্ষেপ নিতে ফ্রান্সের প্রতি আহ্বান বাংলাদেশের

কিছুদিন আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দাতা সংস্থার কিছু কর্তা ব্যক্তি রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে না যেতে ভুয়া ভয়-ভীতি ও অজুহাত দেখিয়ে ইন্ধন যোগাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, দাতা সংস্থার কর্তারা বিদেশি টাকায় কক্সবাজারে হোটেল-মোটেলে আরাম-আয়াশে থাকেন।

এরপর রোহিঙ্গাদের খোঁজ-খবর নেন। কিন্তু রোহিঙ্গারা ভাসানচরে গেলে দাতা সংস্থার কর্মকর্তাদের সেখানে উন্নতমানের হোটেল-মোটেলে থাকার সুব্যবস্থা পাবেন না। তাই তারা রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে যেতে নিরুৎসাহিত করছেন।

 একই কথা জানালেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল মোমেন। তিনি বলছেন, কিছু বিদেশি দাতা সংস্থা এবং বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থা রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে না যেতে উস্কানি দিচ্ছে। তিনি বলেন, তাদের মতে ভাসানচরে যাওয়ার জন্য নদীপথ ছাড়া আর কোন পথ নেই, তাই তারা নিয়মিত যোগাযোগ করতে পারবে না।

পর্যাপ্ত যোগাযোগ ব্যবস্থা নেই। কিন্তু পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গারা সেখানে গেলেই যোগাযোগ ব্যবস্থা ঠিক হয়ে যাবে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, একবার ভাসানচরে গেলে রোহিঙ্গারা স্বেচ্ছায় সেখানে যেতে চাইবে বলে উল্লেখ করেন।

তিনি বলেন, সেখানে গেলে তারা যাতে মাছ চাষ, হাঁস-মুরগি, গরু ছাগল পালন এবং কৃষি কাজ করতে পারে সেসব ব্যবস্থাই করা হয়েছে। যাতে তারা অর্থনৈতিকভাবে সাবলম্বী হবে পারে। আমার মনে হয় তারা সেখানে একবার গেলে আর আসতে চাইবে না।

তিনি আরো বলেন, ওখানে যে সুন্দর সুন্দর বাড়ি ঘর তৈরি হয়েছে, সেখানে যদি বাংলাদেশের মানুষদের নিতে চাই তাহলে পরের দিনই বহু লোক সেখানে চলে যাবেন।অবশ্য আব্দুল মোমেন বলছেন, কাউকেই জোর করে কোথাও পাঠানো হবে না।