ন্যাভিগেশন মেনু

লঞ্চের খোলাছাদেই ‘বাসর রাত’


মানুষের বিচিত্র শখ। এই শখ মেটাতে গিয়ে মানুষ কতো কিছুই না করে। বিয়ের পর ফুলশয্যা ‘বাসর রাত’ নিয়ে অনেকেই স্বপ্নের জাল বোনেন। সবার জীবনে স্বর্গ সুখের এ রাত নিয়ে স্বপ্ন ও জল্পনা-কল্পনার শেষ নেই।

কিন্তু স্বপ্ন ভঙ্গ হয়ে যদি মধুময় বাসরের সেই রাত যদি লঞ্চের ছাদে খোলা আকাশের নিচে কেটে যায় তবে এর চেয়ে বেদনার আর কি হতে পারে।

এমনি এক কাণ্ড ঘটেছে বরিশালের উজিরপুরের এক নবদম্পতির জীবনে। যা তাদের মানসপটে চিরকাল ভেসে থাকবে। করোনা কারণে কড়া লকডাউন। তাই ঢাকায় ফেরা তাড়া প্রবল। এজন্য সময়াভাবে নববধূকে নিয়ে ঢাকায় যাওয়ার জন্য লঞ্চে কেবিনে বাসর রাত কাটাতে চেয়েছিলেন বর। কেবিনে টিকিট না পাওয়ায় নতুন বউকে নিয়ে লঞ্চের ছাদে করেই ঢাকার উদ্দেশে রওয়ানা হন এ নবদম্পতি।

বরিশাল নদীবন্দরে নোঙর করে রাখা ঢাকা-বরিশাল রুটের ঢাকাগামী পারাবত-১০ লঞ্চের ছাদে এ চিত্র দেখা যায়। এ সময় সেখানে অন্য যাত্রীরা জড়ো হতে থাকেন। নবনিবাহিত রাসেল উজিরপুর উপজেলার ওটরা ইউনিয়নের বাসিন্দা। তিনি ঢাকায় একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে সেলসম্যান পদে কর্মরত। নববধূ সোনিয়া আক্তারও একই ইউনিয়নের বাসিন্দা।

রাসেলের বোন পারভিন বলেন, বিয়ের কথাবার্তা ঠিক ছিল গত ঈদুল ফিতরের সময়। কিন্তু তখন লকডাউন পড়তে দেখে বিয়ের আয়োজন করা হয়নি। এরপর উভয় পরিবার মিলে কোরবানির ঈদে বিয়ের সিদ্ধান্ত হয়। উভয়ের পরিবার ভেবেছিল ১৪ দিনের লকডাউনের পর ঈদে আর লকডাউন হবে না। লকডাউনের সিদ্ধান্ত আসার পর অনেকেই জানায় শনিবারের পর লকডাউন হবে।

কিন্তু বৃহস্পতিবার দুপুরে তারা নিশ্চিত হয়ে আকদ অনুষ্ঠান করে খাবারের আয়োজন ব্যতিরেকে নতুন বউ নিয়ে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হন। তিনি বলেন, যেতে অনেক কষ্ট হবে, তবে কিছু করার নেই। বর রাসেল বলেন, লঞ্চে কেবিন পেতে অনেক চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছি।

ফলে বাধ্য হয়ে লঞ্চের ছাদে খোলা আকাশের নিচে যেতে হচ্ছে। তবে এটাও একটা অন্যরকম অনুভূতি। যা মানসপটে চিরকাল ভেসে থাকবে।

এস এস