যুক্তরাষ্ট্রের উত্তর ক্যারোলিনায় এক ব্যক্তিকে নেশাগ্রস্ত অবস্থায় গাড়ি চালানোর সন্দেহে গ্রেফতার করে পুলিশ। কিন্তু ওই ব্যক্তি বারবার জানান, তিনি মদ পান করেননি।
পরে পুলিশ ‘ব্রিথালাইজার’ এ তার নিঃশ্বাস পরীক্ষা করে। পরীক্ষায় দেখা যায়, তার রক্তে অ্যালকোহলের পরিমাণ শূন্য দশমিক দুই শতাংশ, যা নির্ধারিত সীমার চেয়ে দুই দশমিক পাঁচ গুণ বেশি। এটি এক ঘণ্টায় ১০ পেগ মদ খাওয়ার সমপরিমাণ।
কিন্তু সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করে লোকটি। তিনি মদ পান করেননি বলেই বারবার দাবি করছিলেন। তবে তাকে বিশ্বাস করছিলেন না চিকিৎসকেরা।
এরপর, ৪০ বছর বয়সী ওই ব্যক্তির ওপর নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালান নিউইয়র্কের রিচমন্ড ইউনিভার্সিটি মেডিক্যাল সেন্টারের গবেষকরা । তাদের পরীক্ষায় প্রমাণ হয়, লোকটি আসলে সত্যি কথাই বলছিলেন। তিনি কোনো ধরনের মদ পান করেননি।
পরীক্ষায় গবেষকরা তার পাকস্থলীতে ‘ইস্ট’ পান। তিনি শর্করা জাতীয় খাবার খেলেই তা পেটে গিয়ে ইস্টের মাধ্যমে মদে পরিণত হয়! সাধারণত গাঁজন প্রক্রিয়ায় শর্করা থেকে মদ জাতীয় পানীয় তৈরি হয়। ওই লোকটির পেটে থাকা ইস্ট গাঁজন প্রক্রিয়ায় শর্করা থেকে মদ তৈরি করছে। এজন্যই মদ পান না করার পরেও তার রক্তে মদ পাওয়া গেছে।
গবেষণা প্রতিবেদনটির প্রধান লেখক ইউনিভার্সিটি অব আলাবামার ইন্টারনাল মেডিসিন বিভাগের প্রধান ফাহাদ মালিক বলেন, মদ্যপ ব্যক্তিদের শরীরের গন্ধ, নিঃশ্বাস, তন্দ্রাচ্ছন্নতা ও চলাফেরার এলোমেলো ভঙ্গি- এর সবই লক্ষ্য করা যায় ওই ব্যক্তির ক্ষেত্রে। কারণ গবেষকরা জানতে পারেন ওই ব্যক্তি এবিএস রোগে আক্রান্ত।
এরকম বেশ কয়েকজন ব্যক্তি পাওয়া গেছে যাদের এবিএস রোগ আছে। পরীক্ষায় তাদের বৃহদান্ত্রে বিয়ার, ওয়াইন ও রুটি তৈরির ইস্টসহ অন্য ছত্রাক থাকার প্রমাণ মিলেছে।
কিন্তু ওই ব্যক্তি এ রোগ নিয়ে জন্মাননি। তিন বছর আগে বুড়ো আঙুলে আঘাত পেয়ে চিকিৎসকের কাছে গেলে চিকিৎসক তাকে অ্যান্টিবায়োটিক দেন। গবেষকরা বলছেন, ওই অ্যান্টিবায়োটিক সেবনের পরই তার বৃহদান্ত্রে ইস্টসহ অন্য ছত্রাক জন্মায়।
গবেষণা প্রতিবেদনটির লেখকরা বলছেন, রক্তে মদের প্রমাণ মিললেও কোনো ব্যক্তি যদি মদ খাওয়ার ব্যাপারটি বারবার অস্বীকার করে, তাহলে চিকিৎসকদের উচিত ওই ব্যক্তির এবিএস রোগ আছে কি-না তা পরীক্ষা করা।
যথাযথ চিকিৎসার মাধ্যমে এই রোগ সারিয়ে তোলা সম্ভব। তবে এনিয়ে আরও গবেষণা হওয়া উচিত বলে জানান তারা।
সিবি/এস এস
আপডেট নিউজ পেতে ভিজিট করুন - আজকের বাংলাদেশ পোস্ট
