ন্যাভিগেশন মেনু

শালুক কুড়িয়ে জীবিকা চলে তাদের


মৃণাল সরকার মিলু: সিরাজগঞ্জের তাড়াশে বসবাস করেন ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর অনেক মানুষ। তবে নানা প্রতিকূলতায় তাদের সংখ্যা ক্রমেই কমে আসছে। ওঁরাও, মাহাতো, সাঁওতাল, মুড়ারী, রবিদাস, কনকদাস, সিং, তেলী, তুড়ি, বরাইক ইত্যাদি গোত্রভুক্ত তারা। ৮০-৯০ শতাংশ ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর মানুষ ভূমিহীন। তাই গায়ে খেটে কিংবা কৃষিকাজ করে জীবিকা নির্বাহ করতে হয় তাদের। 

পরিশ্রমী এবং প্রতিকূল কাজেও পিছপা হন না বলে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর কৃষকদের বেশ চাহিদাও ছিল অতীতে। বর্তমানে তাদের হাতে তেমন কোনও কাজ না থাকায় তারা বর্ষায় ডুবে যাওয়া মাঠে এখন শালুক কুড়িয়ে তা বাজারে বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করছেন।

সরেজমিনে দেখা যায়, তাড়াশ উপজেলার সদর ইউনিয়নের শ্রীকৃষ্ণপুর, সাস্তান, খুটিগাছা, সোলাপাড়া, বিদীমাগুড়া, মাধাইনগর ইউনিয়নের পৌষার, কালীবাড়িসহ বেশ কিছু এলাকায় ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর নারী-পুরুষরা দলবদ্ধ হয়ে বিলের মধ্যে শালুক কুড়াচ্ছেন।

আদিবাসী কৃষক নিপেন কুমার বলেন, 'এই কৃষিশ্রমিকরাই বীজতলা তৈরি করতেন, শস্য উৎপাদন ও পরিচর্যা থেকে শুরু করে গৃহপালিত পশুও পালন করতেন। এখন কোনও কাজ না থাকায় জীবিকা নির্বাহের জন্য তারা এখন শালুক কুড়াচ্ছেন। শালুক কুড়িয়ে তারা বাড়িতে নিয়ে পরিষ্কার করে গরম পানিতে সেদ্ধ করার পর বাজারে বিক্রি করছেন। প্রতিকেজি শালুক ৭০-৮০টাকা করে বিক্রি হয়।' 

উপজেলার সদর ইউনিয়নের শ্রীকৃষ্ণপুর গ্রামের ময়না রানী বলেন, 'হাতে তেমন কাজ-কাম না থাকায় গ্রামের সবাই মিলে দলবদ্ধ হয়ে শালুক কুড়িয়ে তা বাজারে বিক্রি করি। বিক্রি করে যে টাকা পাই তা দিয়েই সংসার চলে।' 

এ বিষয়ে তাড়াশ সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. বাবুল শেখ বলেন, 'আমার ইউনিয়ন পরিষদ থেকে যখন যে বরাদ্দ পাই তা দিয়ে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর মানুষের সহযোগিতা করি। তবে বর্ষা মৌসুমে তাদের কাজ না থাকায় তারা শালুক কুড়িয়ে জীবিকা র্নিবাহ করেন।'

এমএসএম/এডিবি/