ন্যাভিগেশন মেনু

শ্রমিক ছাঁটাইয়ের ঘোষণা দেওয়া হয়নি: বিজিএমইএ


শ্রমিক ছাঁটাইয়ের ঘোষণা দেওয়া হয়নি বলে জানিয়েছে তৈরি পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ।

শনিবার (৬ জুন) গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ওই সংবাদ সম্মেলনের প্রসঙ্গ তুলে সংগঠনটি জানায়, বিজিএমইএ সভাপতি শ্রমিক ছাঁটাইয়ের ঘোষণা দেননি। সংগঠন হিসেবে এ ধরনের ঘোষণা দেওয়ার কোনো সুযোগও নেই। 

তারা বলে, বিজিএমইএ সভাপতি কর্মসংস্থান হ্রাস পাওয়া এবং সম্ভাব্য শ্রমিক ছাঁটাই বিষয়ে তার গভীর উদ্বেগ ও আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। 

বিজিএমইএ সভাপতি রুবানা হক সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে জুন থেকে শ্রমিক ছাঁটাই হবে বলে মন্তব্য করেন। এরপর তা নিয়ে সমালোচনা শুরু হয়। বিভিন্ন সংগঠন এর প্রতিবাদ জানায়। 

তার জবাবে বিজিএমইএ শনিবার সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, চলতি অর্থ বছরের প্রথম দশ মাসে ( জুলাই ২০১৯- এপ্রিল ২০২০) পোশাক শিল্পে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ঋণাত্মক ১৪ শতাংশ, যা গত ৫ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ ঋণাত্মক প্রবৃদ্ধি। 

এ ছাড়া তারা আরও ব্যাখ্যা দেয়, ১ থেকে ২০ মে পর্যন্ত সময়ে এ শিল্পে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ঋণাত্মক ৫৫ দশমিক ৭ শতাংশ। গত মার্চ থেকে এ পর্যন্ত পোশাক শিল্পে ৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের অধিক ক্রয়াদেশ বাতিল হয়ে গেছে। পোশাক শিল্পের আন্তর্জাতিক বাজারগুলো কোভিড-১৯ এর প্রভাবে সংকুচিত হয়ে পড়েছে। কোভিড-১৯ এর কারণে অনেক বড় বড় ক্রেতা দেউলিয়াত্বও বরণ করেছে। 

বিজিএমইএ জানায়, চলমান পরিস্থিতিতে প্রকৃতপক্ষে, কোনো কারখানাই সামর্থ্যের শতভাগ ব্যবহার করতে পারছে না। ৩৫ শতাংশ সক্ষমতায় কারখানা সচল রেখেছে, এমন ঘটনাও আছে। বড় কারখানাগুলোও ৬০ শতাংশের বেশি সক্ষমতা ব্যবহার করতে পারছে না। পোশাক কারখানাগুলো গড়ে ৫৫ শতাংশ সক্ষমতা ব্যবহার করে কোনরকমে উৎপাদন কার্যক্রম চালু রাখছে। জুলাই পরিস্থিতি এখনই অনুমান করা কঠিন। উদ্যোক্তারা আশঙ্কা করছেন, সামনের দিনগুলো পোশাক শিল্পের জন্য আরো চ্যালেঞ্জময় হবে।

বিজিএমইএ জানায়, ম্যাকেঞ্জির তথ্য অনুযায়ী, কোভিড-১৯ এর প্রভাবে ২০২০ সালে পূর্ববর্তী বছরের তুলনায় বিশ্বের পোশাক বাজারে সেলস রেভিনিউ ৩০ শতাংশ অর্থাৎ বাংলাদেশ থেকে পোশাক রপ্তানি ১০ বিলিয়ন ডলার হ্রাস পাবে। বলার অপেক্ষা রাখে না, চলমান পরিস্থিতিতে  উদ্যোক্তারা টিকে থাকার লড়াইয়ে হিমশিম খাচ্ছেন। কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে বিজিএমইএ এর সদস্যভুক্ত কারখানার মধ্যে ৩৪৮টি বন্ধ হয়েছে গত ২ মাসেই। বাকি আছে আর ১৯২৬ কারখানা। পরিস্থিতি অব্যাহত থাকলে বাকী কারখানাগুলো হয় একে একে বন্ধ হয়ে যাবে অথবা কম ক্যাপাসিটিতে (পূর্ন সামর্থ্য ব্যবহার ছাড়াই) টিকে থাকার চেষ্টা করবে দিন বদলের আশায়। এটাই বর্তমান বিশ্বের রূঢ় বাস্তবতা। আমরা সবাই দেখছি, বিশ্বের অন্যান্য দেশগুলোতেও কাজ ও শ্রমিকসংখ্যা বিপুলভাবে কমছে।আমরা শিল্প গড়ি কর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্য। আজকের এই বাস্তবতা আমাদের উদ্যোক্তাদের জন্যও নির্মম। 

সরকার ঘোষিত প্রণোদনার বিষয়ে বিজিএমইএ বলে, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত সহজ শর্ত ঋণের ৫ হাজার কোটি টাকার পুরোটাই সরাসরি শ্রমিকদের ব্যাংক অ্যকাউন্ট বা মোবাইল অ্যকাউন্টে দেওয়া হচ্ছে। পোশাক খাত প্রতিমাসে মজুরি পরিশোধ করে থাকে প্রায় ৪ হাজার কোটি টাকার।

তারা আরও জানায়, সমস্ত তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে কারখানা বন্ধ বা সামর্থ্য কমে যাওয়ার (Capacity reduction) প্রেক্ষাপটে শ্রমিকদের কর্মসংস্থানের কথা ভেবে বিজিএমইএ গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। শুধু পোশাকখাত নয়, সব খাতেই কর্মসংস্থান হ্রাস পাচ্ছে।বিজিএমইএ একান্তভাবে আশা করে, কোনো কারখানা যদি উপরোক্ত পরিস্থিতির শিকার হয়ও, তথাপি মালিক ও শ্রমিক উভয়ই শ্রম আইনের প্রতিশ্রদ্ধা শীল থাকবেন।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে স্বাক্ষর করেন বিজিএমইএ'র ভারপ্রাপ্তসচিব মেজর মো. রফিকুল ইসলাম (অব.)।

ওআ/