ন্যাভিগেশন মেনু

সহযোগিতা পেলে বিদেশি বিনিয়োগ বাড়বে দেশে


‘সংশ্লিষ্ট দফতরের কর্মকর্তাদের আন্তরিক সহযোগিতা পাওয়া গেলে বিদেশি বিনিয়োগের পরিমাণ ক্রমান্বয়ে বাড়বে।  এছাড়া, যে সব সেক্টরে বিনিয়োগ করলে অধিক লাভবান হওয়া যায়, সে ব্যাপারেও সংশ্লিষ্ট সেক্টরের গাইডেন্স থাকতে হবে বিদেশি বিনিয়োগকারিদের জন্যে।

তাহলেই শেখ হাসিনা সরকারের ভিশন টুয়েন্টি টুয়েন্টি ওয়ান বাস্তবায়নে আর কোন সমস্যা থাকবে না এবং সেই ধারায় ২০৪১ সালের মধ্যেই বাংলাদেশ উন্নত বিশ্বের তালিকাভুক্ত হতে পারবে -এ অভিমত পোষণ করেছেন যুক্তরাষ্ট্রস্থ ‘বাই ন্যাশনাল চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির নির্বাহী ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. আতিকুর রহমান।

বাংলাদেশ, জাপান, কানাডা, চীন, সিঙ্গাপুর, অষ্ট্রেলিয়া, মেক্সিকো, ব্রাজিল, আর্জেন্টিনাসহ ৫২ দেশের চেম্বার অব কমার্সের সমন্বয়ে গঠিত ‘বাই ন্যাশনাল চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির পক্ষ থেকে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বেশ ক’জন বিনিয়োগকারীকে বাংলাদেশে নেয়ার অভিজ্ঞতার আলোকে আতিকুর রহমান আরো বলেন, ‘সরকারের নীতি-নির্দ্ধারণের সাথে সরাসরি জড়িতদের সাক্ষাৎ পাওয়ায় কঠিন হয়ে পড়ে আমলাতান্ত্রিক জটিলতার কারণে।

অথচ প্রধানমন্ত্রী যখন বিদেশে আসেন, সে সময় অত্যন্ত উদারতা প্রদর্শনের অঙ্গীকার করে থাকেন। এই ব্যবধান দূর করলে অনেক সমস্যার সহজ সমাধান হবে পাবলিক সেক্টরে বিদেশি বিনিয়োগে।

গত রবিবার নিউইয়র্কে ফোবানা কনভেনশনের বিজনেস পর্বে সভাপতিত্ব করেন আতিকুর রহমান। বিভিন্ন দেশে বসবাসরত প্রবাসী ব্যবসায়ীদের মধ্যে শীর্ষস্থানীয় কয়েকজন বক্তব্য রাখেন এই সেমিনারে।

দুবাইভিত্তিক আলহারামাইন পারফিউম গ্রুপ অব কোম্পানির চেয়ারম্যান এবং ম্যানেজিং ডাইরেক্টর এবং এন আরবি-সিআইপি অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মাহতাবুর রহমান নাসির বলেন, ‘প্রাইভেট সেক্টরে আমরা অনেকেই বিনিয়োগ করেছি।

এখনও বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় রয়েছি। তবে সরকারী সেক্টরে বিদেশি বিনিয়োগের দিগন্ত আমরা প্রবাস থেকে যতটা প্রসার ঘটাতে পারবো, তা আর কেউ পারবে না। এই সুযোগটি আমাদের দেয়া উচিত আরো জোরালোভাবে।

এনআরবি বিজনেস ফোরামে সুধীজন। ছবি-এনআরবি নিউজ।

এনআরবি ব্যাংক লিমিটেডের প্রতিষ্ঠাতা-চেয়ারম্যান এবং যুক্তরাজ্যভিত্তিক সীমার্ক গ্রুপের প্রেসিডেন্ট ইকবাল আহমেদ ওবিই বলেছেন, ‘প্রবাসের অভিজ্ঞতায় আমরা মাতৃভূমির কল্যাণে বদ্ধপরিকর।

মাতৃভূমির প্রতি দায়বদ্ধতা রয়েছে সকলেরই। এখন সে সুযোগ তৈরী হয়েছে। তাই সকলেরই উচিত ব্যক্তিগত বিনিয়োগের পাশাপাশি পরিচিত বিদেশি বিনিয়োগকারিদেরকেও বাংলাদেশে নিয়ে যাওয়া।’

যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ফামাক্যাশের প্রেসিডেন্ট এবং সিইও ইঞ্জিনিয়ার ড. সাইফুল খন্দকার বলেছেন, ‘বাংলাদেশ এগিয়ে চলছে দীপ্ত প্র্রত্যয়ে। উন্নয়নের এই ধারাকে ত্বরান্বিত করতে আমরাও প্রবাসের অভিজ্ঞতার সমন্বয় ঘটাতে চাই।

 এ ব্যাপারে সরকারের সংশ্লিষ্ট দফতরকে আরো আন্তরিক হতে হবে। আমলাতান্ত্রিক জটিলতা এবং ‘কানেকশন’ দুর্বলতার পরিবর্তে প্রবাসীদের জন্যে দরকার ওয়ানস্টপ সার্ভিস। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদাত্ত আহবানে সাড়া দিয়ে প্রতিটি প্রবাসী আজ নিজ জন্মস্থানে ফিরতে চাচ্ছেন উন্নয়নের মহাসড়কে উঠা বাংলাদেশ বিনির্মাণে শরিক হতে।’

ইউটিসি অ্যাসোসিয়েটস’র প্রেসিড্টে ইঞ্জিনিয়ার আজিজ আহমেদ, এইমেক্স এলএলসির প্রেসিডেন্ট এবং সিইও তানভির মাহমুদ, ফ্রেশ গ্রুপ অব কোম্পানির মোহামদ আফতাব, সিঙ্গাপুরস্থ বাংলাদেশ বিজনেস চেম্বারের প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ শহিদুজ্জামান, হোস্ট সংগঠন ফোবানার নির্বাহী চেয়ারম্যান মীর হোসেন চৌধুরী, নির্বাহী সচিব জাকারিয়া চৌধুরী, ড্রামা সার্কলের প্রতিষ্ঠাতা এবং ফোবানা হোস্ট কমিটির কনভেনর নার্গিস আহমেদ ও সদস্য-সচিব আবির আলমগীর।

৩৩ বছরের পুরনো এই ফোবানার ৩দিনব্যাপী নানা অনুষ্ঠানমালায় ‘এনআরবি বিজনেস ফোরাম’টি ছিল বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। সে আলোকে মাহতাবুর রহমান এই আয়োজন সামনের সম্মেলনগুলোতে আরো জোরালোভাবে করার অনুরোধ রেখেছেন।

সমাপনী বক্তব্যে আতিকুর রহমান বলেছেন, ‘পরিবর্তিত বিশ্ব পরিস্থিতির আলোকে বিনিয়োগের সনাতনী প্রথা পরিহার করে নতুন নতুন সেক্টরের সন্ধান দিতে হবে সরকারকে। যে সেক্টরের প্রভাব সুদূর প্রসারী হবে সেদিকে আকৃষ্ট করতে হবে সরকারকে।

একইসাথে সমসাময়িক বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে কাজের সংস্থান করা সম্ভব-এমন শিক্ষা-ব্যবস্থা চালু করতে হবে। সার্টিফিকেট ধারী শিক্ষিত যুব শক্তির প্রয়োজন ফুরিয়ে গেছে। এখন দরকার হচ্ছে দক্ষ যুবশক্তি। বিশেষ করে নার্স তৈরী করতে হবে অনেক বেশী। কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারের পাশাপাশি চিকিৎসা-ব্যবস্থায়ও যুগান্তকারি পরিবর্তনে সক্ষম শিক্ষা কারিক্যুলাম চালু করতে হবে।’

এই পর্বে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার প্রবাসীরা অংশ নেন এবং নিজ নিজ মতামত উপস্থাপন করেন।


সূত্র: এনআরবি নিউজ, নিউইয়র্ক থেকে

এস এস