ন্যাভিগেশন মেনু

সিদ্ধিরগঞ্জে কাউন্সিলরের বালুর ডোবায় পড়ে শিশুর মৃত্যু


নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের ১০নং ওয়ার্ডে ড্রেজারের বালু সংরক্ষণ করতে তৈরি করা একটি কৃত্রিম ডোবায় পড়ে হৃদয় (৬) নামে এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। ওই ডোবাটির মালিক একই ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ইফতেখার আলম খোকন ও তার সহযোগীরা।

শনিবার (১৯ জুন) বিকেলে সিদ্ধিরগঞ্জের ২নং ঢাকেশ্বরী রেইলাইনের পাশে ঘটনাটি ঘটেছে।

রবিবার (২০ জুন) রাতে এলাকাবাসী গণমাধ্যমকে এ ঘটনাটি নিশ্চিত করেন।

হৃদয় নোয়াখালীর মাইজদী থানার পুর্ব মাজরা গ্রামের কাশেম মিয়ার ছেলে। গোদনাইল ভুইয়াপাড়া এলাকায় শাজাহান মিয়ার বাড়িতে ভাড়ায় পরিবারের সাথে থাকতো।   

এলাকাবাসী জানায়, তড়িঘড়ি করে শনিবার রাতে কাউন্সিলর ও তার লোকজন শিশুটির স্বজনদের ম্যানেজ করে শিশুটিকে দাফন করে।

নিহতের পরিবারের সদস্যরা কাউন্সিল খোকনের ভয়ে বলছেন, হৃদয়কে ভূত-পেত্নী থাপ্পর দিয়েছে। এ কারণে ওই ডোবায় তার মৃত্যু হয়েছে। তার গালে পাঁচ আংগুলের চড়ের দাগও রয়েছে বলে উল্লেখ করে স্বজনরা। এরপর থেকেই এলাকাবাসীর মধ্যে ওই ডোবা নিয়ে আতংক সৃষ্টি হয়। 

এলাকাবাসীর অভিযোগ, রাস্তা তৈরির অজুহাতে বাণিজ্যিকভাবে এ ডোবা তৈরি করা হয়।

জানা গেছে, ২নং ঢাকেশ্বরী রেইলাইন থেকে শুরু করে পাঠানতলী জৈনপুরী মাওলানা বাড়ি পর্যন্ত একটি রাস্তার মেরামত কাজের জন্য এবং বিক্রির জন্য বালু স্তুপ করে রাখা হয়েছে।

শীতলক্ষ্যা নদী থেকে ড্রেজারের পাইপ দিয়ে বালু আনার জন্য ২নং ঢাকেশ্বরী রেইলাইন সংলগ্ন মাঠের একপাশে বিশাল একটি ডোবা কাটা হয়। যেখানে পাইপ দিয়ে বালু এনে এই ডোবার মধ্যে প্রথমে সংরক্ষণ করা হয়। ঘটনার দিন বিকেলে ওই ডোবার মধ্যে নেমে শিশুরা খেলাধুলা করছিলো। হঠাৎ ড্রেজারের পাইপের পানি ও বালুর চাপে হৃদয় তলিয়ে যায়। হৃদয়ের মা তাকে খুঁজতে এসে ডোবার পাশে তার সেন্ডেল ও গেঞ্জি পেলেও ছেলেকে খুঁজে পাননি তিনি।

দীর্ঘ সময় পরে হৃদয়ের বাবা কাশেম এসে ওই ডোবায় নেমে হৃদয়কে উদ্ধার করে ভিক্টোরিয়া হাসপাতলে নিয়ে যায়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক হৃদয়কে মৃত ঘোষণা করেন। পরে রাতেই হৃদয়কে পাঠানতলি কবরস্থানে দাফন করেন।

এদিকে এ ঘটনার খবরে গণমাধ্যমকর্মীরা রবিবার রাতে ঘটনাস্থলে ছুটে গিয়ে দেখতে পান মাঠের মধ্যে বালুর বিশাল তিনটি স্তুপ ও অসংখ্য ড্রেজারের পাইপ মওজুদ রয়েছে। পরবর্তীতে সোমবার ঘটনাস্থলে গিয়ে রাতের দৃশ্যপটের উল্টোচিত্র দেখতে পান। মাঠ ফাঁকা। স্তুপকৃত বালুও নেই। নেই ড্রেজারের পাইপও। তবে এ বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে স্থানীয়রা কেউ কিছু বলতে রাজি হয়নি।

এ বিষয়টি জানতে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের (নাসিক) ১০নং ওয়ার্ড কাউন্সিলরের সাথে কথা বললে তিনি জানান, এরকম কোনো ঘটনার কথা তিনি জানেন না। মাঠ কেটে ড্রেজারের বালু সংরক্ষণের বিষয়ে তিনি বলেন, এটা রাস্তার কাজের জন্য তৈরি করা হয়েছে।

এ বিষয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মশিউর রহমান বলেন, এরকম কোনো ঘটনা তিনি জানেন না। কেউ কোনো অভিযোগ দিলে বিষয়টি তিনি দেখবেন।

এমএইচএস/সিবি/এডিবি/