ন্যাভিগেশন মেনু

সৌদি আরবে ‘তুরস্ক বয়কট’ ক্যাম্পেইন, দোকান থেকে উধাও তুর্কি পণ্য


মুসলিম বিশ্বের দুই প্রধান শক্তি সৌদি আরব ও তুরস্কের রাজনৈতিক রেষারেষি এখন বাণিজ্যিক সম্পর্কের ওপর প্রভাব পড়তে শুরু করেছে।

গত মাস থেকে সৌদি আরব এবং তুরস্কের মিডিয়া ছাড়াও আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমে দিনের পর দিন যেসব খবর বেরুচ্ছে, তাতে স্পষ্ট যে সৌদি আরব তুরস্কের এরদোয়ান সরকারকে শায়েস্তা করতে বাজার বন্ধের কৌশল নিয়েছে।

ব্রিটিশ দৈনিক 'ফাইনানসিয়াল টাইমস' এর বরাত দিয়ে বিবিসি এক প্রতিবেদনে বলছে, সৌদি আরব তুরস্কের পণ্য আমদানির ওপর ‘অনানুষ্ঠানিক নিষেধাজ্ঞা‘ জারি করেছে।

তবে, মিডিয়ার প্রশ্নের মুখে সৌদি সরকার বলছে, তুরস্ক থেকে পণ্য আমদানির ওপর রাষ্ট্রীয়ভাবে কোনও নিষেধাজ্ঞা নেই।

কিন্তু সাংবাদিক, পর্যবেক্ষক এবং তুরস্কের ব্যবসায়ীরা নিশ্চিত যে, তুর্কি পণ্য বয়কটের যে ক্যাম্পেইন দ্রুত সৌদি আরবে ছড়িয়ে পড়েছে তার পেছনে দেশটির সরকারের হাত রয়েছে।

সৌদি সরকারের ইচ্ছাতেই যে এই বয়কট ক্যাম্পেইন চলছে, তার প্রথম ইঙ্গিত পাওয়া যায় গত সপ্তাহে, যখন সৌদি খাদ্য এবং ওষুধ নিয়ন্ত্রণ বিভাগ (এসএফডিএ) তুরস্ক থেকে সব ধরনের মাংস, মাছ, ডিম এবং দুধ ও দুগ্ধজাত পণ্য আমদানি স্থগিত করার সিদ্ধান্তের কথা জানায়।

তুরস্কের ইংরেজি সংবাদপত্র দৈনিক সাবাহ এবং আরও কিছু মিডিয়া জানিয়েছে, তুর্কি বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সৌদি এই সিদ্ধান্তের কথা নিশ্চিত করেছে। সরকারের পক্ষ থেকে দেশের রপ্তানি প্রতিষ্ঠানগুলোকে সৌদি আরবের এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।

প্রকাশ্যে এই ‘তুর্কি বয়কট‘ ক্যাম্পেইনের নেতৃত্ব দিচ্ছে সৌদি আরবের শীর্ষ এবং সবচেয়ে প্রভাবশালী ব্যবসায়ী সমিতি - রিয়াদ চেম্বার অব কমার্স।

সমিতির প্রধান আজলান আল-আজলান অক্টোবরের মাঝামাঝি এক বিবৃতি জারী করে 'সৌদি নেতৃত্ব, দেশ এবং সৌদি জনগণের বিরুদ্ধে অব্যাহত বৈরি আচরণের' প্রতিবাদে তুরস্কের তৈরি সব কিছু বর্জনের ডাক দেন।

ওই বিবৃতির মূল বার্তা ছিল - তুরস্কে কোনও বিনিয়োগ নয়, তুরস্ক থেকে কোনও আমদানি নয় এবং তুরস্কে কোনও পর্যটন নয়।

রিয়াদ থেকে রয়টার্স বার্তা সংস্থা জানিয়েছে, সৌদি চেইন সুপারমার্কেটগুলো একে একে বয়কটের এই ডাকে সাড়া দিচ্ছে।

সৌদি আরবের সবচেয়ে বড় সুপারমার্কেট আথায়াম ছাড়াও দানিউব, তামিমি এবং পাণ্ডা চেইন শপ বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে যে তাদের বর্তমান মজুদ শেষ হওয়ার পর তারা তুরস্কে তৈরি কোনো পণ্য বিক্রি করবে না।

অনেক দোকানের সামনে বড় হোর্ডিং টাঙ্গিয়ে তুর্কি পণ্য না কেনার আহ্বান জানানো হচ্ছে। সেই সাথে গত মাস খানেকের ওপর ধরে চলছে সোশ্যাল মিডিয়াতে ‘বয়কট-টার্কিশ প্রডাক্টস‘ হ্যাশটাগে ব্যাপক প্রচারণা।

২০১১ সালে তথাকথিত আরব বসন্তের প্রতি তুরস্কের অকুণ্ঠ সমর্থনের পর থেকে রিয়াদ-আঙ্কারার সম্পর্ক খারাপ হতে শুরু করে। এরপর ২০১৭ সালে সৌদি আরব এবং তার মিত্ররা যখন কাতারের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে, তখন প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান কাতারের সমর্থনে এগিয়ে আসেন।

এরপর ২০১৮ সালে ইস্তান্বুলে সৌদি কনস্যুলেটের মধ্যে সাংবাদিক জামাল খাসোগজির হত্যাকাণ্ডের জন্য প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান যেভাবে সৌদি রাজপরিবারকে দায়ী করেছেন, তাতে দুই দেশের সম্পর্ক তলানিতে গিয়ে ঠেকে। সুত্র: বিবিসি বাংলা

এডিবি/