ন্যাভিগেশন মেনু

স্পেশাল ক্যাটল ট্রেনে কোরবানি গরু নিতে পড়বে ৭৫০ টাকা


আমের পর এবার ট্রেনে উঠছে কোরবানির পশু। দক্ষণিাঞ্চলের যশোর, আলমডাঙ্গা, চুয়াডাঙ্গা, ঈশ্বরদী, উল্লাহপাড়া থেকে মাত্র ৭৫০ টাকায় প্রতিটি কোরবানির গরু ঢাকায় যাবে। এই জন্য দুটি স্পেশাল ক্যাটল প্রস্তুত রাখা হয়েছে। ট্রেনে কোরবানি পশুগুলো স্বল্প খরচে ও রাস্তায় ভোগান্তি ছাড়াই, মনোরম ও আরামদায়ক পরিবেশে ঢাকায় নেওয়ার জন্য ইতোমধ্যে সকল প্রস্তুতি শেষ করা হয়েছে। এসব অঞ্চলের গরুর খামারী, ব্যবসায়ী, উপজেলা ও জেলা প্রাণী সম্পদ  কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় করা হয়েছে। ট্রেনে কোরবানির পশু নেওয়ার ব্যাপারে মতবিনিময় সভাগুলো বেশ ফলপ্রসু ও সন্তোষজনক। তাদের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগা রাখা হচ্ছে। 

রেলওয়ে পাকশী বিভাগীয় ব্যবস্থাপক (ডিআরএম) মোঃ আসাদুল হক এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। 

রেলওয়ে পাকশী বিভাগীয় কার্যালয় সুত্রে জানা যায়, বিশ্বের ন্যায় এদেশেও করোনাভাইরাস (কভিড-১৯) মহামারি প্রতিরোধে সরকারী ঘোষণা অনুসারে স্বল্প পরিসরে চলছে ট্রেন। এতে কোটি কোটি টাকা লোকসান গুনতে হচ্ছে রেলওয়েকে। এই কারণে লোকসান কমাতে এবার রেলওয়ে পশ্চিমাঞ্চলের পাকশী বিভাগীয় কার্যালয়ের পক্ষ থেকে স্পেশাল ম্যাংগো ট্রেন চালু করা হয়েছিল। দেশের উত্তরাঞ্চলের রাজশাহী ও চাপাইনবাবগঞ্জ এলাকা থেকে ঢাকা অভিমুখে ট্রেনযোগে নেওয়া হয়েছে আম। এবার আমের পরে আসন্ন কোরবানি ঈদ উপলক্ষে রেলওয়ে পাকশী বিভাগ স্পেশাল ক্যাটল ট্রেন ( কোরবানি পশু আনা নেওয়ার জন্য বিশেষ ট্রেন) চালুর সিদ্ধন্ত গ্রহন করেছে। এই জন্য গরুর খামার মালিক ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে মত বিনিময় করা হয়েছে। ট্রেনে কোরবানি পশু আনা নেওয়ার খরচসহ নানা সুবিধার কথা তাদের সঙ্গে আলোচনা করা হয়েছে। আলোচনা খুবই ফলপ্রসু ও সন্তোষজনক  হয়েছে। রাজি হয়েছে খামার মালিক, ব্যবসায়ী ও পালনকারীরা। 

চুয়াডাঙ্গা, আলমডাঙ্গা, সিরাজগঞ্জ ও উল্লাহপাড়ার গরু ব্যবসায়ী ও কয়েকজন হাটমালিকদের সঙ্গে মুঠোফোনে আলাপ করে জানা যায়, আসন্ন কোরবানি ঈদের আগে দেশে বন্যা দেখা দিয়েছে। ইতোমধ্যেই দেশের বেশ কিছু জেলায় মানুষ পানি বন্ধি হয়ে পড়েছে। দেখা দিয়েছে খাদ্য ও বিশুদ্ধ পানির ঘাটতি। সেখানে পশুখাদ্যেও দেখা দিয়েছে তীব্র সংকট। একই সঙ্গে স্থানীয় পশুহাটগুলোতে পর্যাপ্ত পরিমানে গরু আমদানি হচ্ছে। তবে ক্রেতার রয়েছে তীব্র সংকট। তাই গরু বিক্রয় করার ক্ষেত্রে গরু ব্যবসায়ীরা বেশ বিপাকে পড়েছিল। সেই সেইক্ষেত্রে ট্রেনযোগে গরু ঢাকা ও চট্রগ্রাম অভিমুখে স্পেশাল ক্যাটল ট্রেন চালুর সিদ্ধান্তটি সময়োপযোগি। রেলওয়ের এই সিদ্ধান্তে ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে অভূতোপুর্ব সাড়া পড়বে বলেও সুত্রগুলো দাবী করেছে।

পাকশী রেলওয়ে বিভাগী পরিবহণ কর্মকর্তা (ডিটিও) মোঃ নাসির উদ্দিন জানান, আসন্ন কোরবানি পশু উত্তরাঞ্চল থেকে ঢাকা, চট্রগ্রাম অভিমুখে নিতে দুটি স্পেশাল ক্যাটল ট্রেনের জন্য ওয়াগন প্রস্তুত করা হয়েছে। ট্রেন দুটি কোনরুপ বিলম্ব ছাড়াই অবাধে চলাচলের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে দুটি রেক। তিনি আরও জানান, প্রতিটি ওয়াগনে গরু যাবে ১৬ টি। যার ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে ১২ হাজার টাকা। এই হিসেবে প্রতিটি গরুর জন্য ভাড়া পড়বে মাত্র সাড়ে ৭শ টাকা। নিজের অভিমত ব্যক্ত করে ডিটিও আরও জানান, ট্রাক যোগে কোরবানির পশু (গরু) ঢাকায় নেওয়ার ক্ষেত্রে সাধারণত প্রতিটি ট্রাকে মাত্র ৮/১০ টি গরু নেওয়া সম্ভব হয়। এই ক্ষেত্রে গরু ব্যবসায়ীকে প্রতিটি ট্রাক মালিককে ভাড়া দিতে হয় ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা। তারপরও রাস্তায় নানা রকম হয়রানি। চাঁদা প্রদান। সময় ক্ষেপনসহ নানা বিড়ম্বণা। কিন্তু ট্রেনের ক্ষেত্রে সেইসব সমস্যায় পড়তে হবে না।

রেলওয়ে পাকশী বিভাগীয় ব্যবস্থাপক (ডিআরএম) মোঃ আসাদুল হক জানান, ক্যাটল ট্রেনে কোরবানি পশু নেওয়ার জন্য সকল প্রস্তুতি গ্রহন করা হয়েছে। গরু ব্যবসায়ী, খামারী, উপজেলা ও জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে দফায় দফায় মতবিনিময় সভা করা হয়েছে। তাদের সঙ্গে যোগাযোগ অব্যহৃত রাখা হয়েছে। ডিআরএম আরও জানান, গরুগুলো সাধারণত খামারীদের থেকে ক্রয় করে ব্যবসায়ীরা ঢাকা, চট্রগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের হাটে নেন। তাই ব্যবসায়ীদের সঙ্গেও বারবার আলোচনাসহ সকল সুযোগ সুবিধা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে। ব্যবসায়ীদের থেকেও সন্তোষজনক আশ^াস পাওয়া গেছে। 

ওআ/