ন্যাভিগেশন মেনু

ফাঁসির মঞ্চে ভারতে প্রথম নারী


ভারতের ইতিহাসে সাত খুনের অপরাধে উত্তরপ্রদেশের আমরাহর বাসিন্দা শিক্ষিকা শবনমই প্রথম মহিলা বন্দি যার ফাঁসির আদেশ হয়েছে এবং তা কার্যকর হতে যাচ্ছে।

দেশটির রাষ্ট্রপতি শবনমের প্রাণভিক্ষার আবেদন নাকচ করেছেন। ফলে রায় কার্যকরে আর কোনো আইনি বাধা থাকছে না তার।

আমরাহর স্কুল শিক্ষিকা শবনম ডাবল এমএ। ইতিহাস ও ভূগোলে স্নাতকোত্তর ডিগ্রির অধিকারী। প্রেমে পড়েছিলেন গ্রামের দিনমজুর অশিক্ষিত সালিমের। প্রতি রাতে পরিবারের লোকদের ঘুমের ওষুধ খাইয়ে তিনি মিলিত হতেন সালিমের সঙ্গে। দুজনের বিয়েতে আপত্তি ওঠায় ২০০৮ সালের ১৪ এপ্রিলের রাতে খাবারে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে সবাইকে অচেতন করে ফেলে সে। 

মাঝরাতে সেলিম আসতেই শুরু হয় মাস কিলিং। শবনম কুঠার দিয়ে ছিন্নভিন্ন করে হত্যা করেন বাবা, মা, তিন দাদা, এক বৌদি ও ১০ মাস বয়সী ভাইপোকে। সকাল হতেই গোটা গ্রামকে শবনম কেঁদে বলে, দুষ্কৃতীরা বাড়িতে হামলা চালিয়ে সবাইকে মেরে ফেলেছে। কিন্তু, তদন্ত শুরু হতেই ফাঁস হয়ে যায় সমস্ত মিথ্যে। পুলিশি জেরায় দোষ কবুল করে সে। ৭ খুনের তদন্তে নেমে পুলিশ গ্রেপ্তার করে শবনম ও সালিমকে। মূল হত্যাকারী শবনমের ফাঁসির আদেশ হয়। সেই আদেশ এখন কার্যকর হওয়ার পথে।

২০১০ সালে ১৪ জুলাই জেলা ও দায়রা আদালত মৃত্যুদণ্ড দেয় এই প্রেমিক যুগলকে। এই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে গেলেও তাদের আর্জি খারিজ হয়ে যায়। পরে শবনমের প্রাণভিক্ষার আবেদনও খারিজ করেন রাষ্ট্রপতি। ফলে ফাঁসির সাজা বহাল থাকায় মথুরা জেলে চলছে শবনমের প্রাণদণ্ডের প্রস্তুতি।

মহিলা অপরাধীদের ফাঁসির জন্যে ১৫০ বছর আগে মথুরা জেলে ফাঁসির মঞ্চ তৈরি হলেও কখনো সেখানে কারো ফাঁসি হয়নি।

জেলের সিনিয়র সুপারিনটেন্ডেন্ট শৈলেন্দ্রকুমার মৈত্রেয়র কথায়, ”এখনও ফাঁসির দিন চূড়ান্ত নয়। কিন্তু আমরা প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছি। ডেথ ওয়ারেন্ট পেলেই শবনমকে ফাঁসি দেওয়া হবে।”

তিনি আরও জানিয়েছেন, বক্সার থেকে ফাঁসির দড়ি আনানো হচ্ছে। পবন জহ্লাদ ফাঁসিঘর পরীক্ষা করে ফাঁসি দেওয়ার লিভার ও বোর্ডে কিছু পরিবর্তন করার জন্য বলেছেন জেল কর্তৃপক্ষকে।

ওয়াই এ/ওআ