ন্যাভিগেশন মেনু

আজ বিজিবি দিবস, মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা


আজ ২০ ডিসেম্বর। বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) দিবস। দিবসটি উপলক্ষে মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন সীমান্তরক্ষায় নিয়োজিত এ বাহিনীর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মো. সাফিনুল ইসলাম।

রবিবার (২০ ডিসেম্বর) সকাল ৯টায় মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মো. সাফিনুল ইসলাম পিলখানা সদর দপ্তরে বিজিবির রেজিমেন্টাল পতাকা উত্তোলন করেন।

পিলখানায় ‘সীমান্ত গৌরব’-এ মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে পুস্পস্তবক অর্পণ করেন তিনি। 

তিনি বলেন, শ্রেষ্ঠ কোম্পানি ও বিওপি কমান্ডারদের পুরস্কার প্রদান এবং মহাপরিচালকের অপারেশনাল ও প্রশাসনিক ইনসিগনিয়াসহ প্রশংসাপত্র প্রদান করা হবে। করোনাভাইরাস সংক্রমণ জনিত স্বাস্থ্য ঝুঁকি বিবেচনায় ভার্চুয়াল পদ্ধতিতে বিজিবি দিবস-২০২০ এর বিশেষ সভা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। যেখানে বাংলাদেশের সকল প্রান্ত হতে বিজিবি সদস্যরা যুক্ত থাকছেন।

মাগরিবের নামাজের পর পিলখানায় সকল মসজিদে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সীমিত আকারে মিলাদ ও বিশেষ দোয়া করা হবে।

এর আগে বিজিবির নাম ছিল ‘বাংলাদেশ রাইফেলস’ (বিডিআর)। স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালে এ নামকরণ হয়।

বাংলাদেশের স্বাধীনতা পূর্বে যার নাম ছিল ইপিআর অর্থাৎ ইস্ট পাকিস্তান রাইফেলস।

১৭৯৫ সালের ২৯ জুন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের গোড়াপত্তন হয়েছিলো। তখন বাহিনীর নাম ছিলো রামগড় লোকাল ব্যাটালিয়ন। সৈন্যসংখ্যা ছিলো ৪৪৮। ছয় পাউন্ড গোলা, চারটি কামান এবং দুটি অনিয়মিত অশ্বারোহী দল নিয়ে রামগড় লোকাল ব্যাটালিয়ন গঠন করা হয়। সীমান্ত এলাকায় সমস্যা বৃদ্ধির কারণে এ বাহিনী পার্বত্য অঞ্চলের অভিযানে অংশ নেয়।

১৮৬১ সালে পূর্বাঞ্চলের নিয়মিত-অনিয়মিত পুলিশ বাহিনীর এক হাজার ৪৫৪ জনের সমন্বয়ে রামগড় লোকাল ব্যাটালিয়নকে পুনর্গঠিত করে নাম রাখা হয় ফ্রন্টিয়ার গার্ডস। এর সদর দপ্তর ছিলো চট্টগ্রাম। কামরূপ, গোয়ালপাড়া, লক্ষ্মীপুর, সিলেট ও ত্রিপুরা সীমান্ত-ফাঁড়িগুলো এর অন্তর্ভুক্ত ছিল।

আরও পড়ুন: মিলনে বাধা হলো বিজিবি

১৮৭৯ সালে স্পেশাল কোম্পানি নামে এই বাহিনীর তৎকালীন সদস্যরা পিলখানায় প্রথম ঘাঁটি স্থাপন করেন। ১৮৯১ সালে এ বাহিনীকে পুনর্গঠনের মাধ্যমে ফ্রন্টিয়ার গার্ডসের নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় বেঙ্গল মিলিটারি পুলিশ। বেঙ্গল মিলিটারি পুলিশ বাহিনীকে চারটি কোম্পানিতে ভাগ করা হয়। এর স্থায়িত্বকাল ছিল ১৯১৯ সাল পর্যন্ত।

১৯২০ সালে বেঙ্গল মিলিটারি পুলিশ বাহিনীকে পুনর্গঠন করে নাম রাখা হয় ইস্টার্ন ফ্রন্টিয়ার্স রাইফেলস। ইস্টার্ন ফ্রন্টিয়ার্স রাইফেলসকে ১৬টি প্লাটুনে ভাগ করে সীমান্ত রক্ষায় নিরাপত্তার কাজে নিয়োজিত করা হয়। এর স্থায়িত্বকাল ছিল ১৯৪৬ সাল পর্যন্ত।

১৯৪৭ সালে ব্রিটিশ শাসন থেকে ভারত বিভাগের পর ইস্টার্ন ফ্রন্টিয়ার্স রাইফেলসের নাম পরিবর্তন করে নাম রাখা হয় ইস্ট পাকিস্তান রাইফেলস। এর সংক্ষিপ্ত নামকরণ করা হয় ইপিআর। কলকাতা মেট্রোপলিটন আর্মড পুলিশের একটি দল এবং বাঙালি ও পশ্চিম পাকিস্তানের এক হাজার সেনা এ বাহিনীতে যোগ দেয়। দক্ষ নেতৃত্ব ও দিকনির্দেশনার জন্য ইপিআরে সামরিক বাহিনী থেকে সেনা কর্মকর্তাদের নিয়োগ দেওয়া হয়।

দেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৭২ সালের ৩ মার্চ ইপিআর বাহিনীকে পুনর্গঠন করে এর নাম রাখা হয় বাংলাদেশ রাইফেলস (বিডিআর)। ১৯৮০ সালের ৩ মার্চ থেকে এ বাহিনীর স্বীকৃতি হিসেবে সরকার একে জাতীয় পতাকা প্রদান করে। ১৯৯৭ সালের ১৬ মার্চ বিডিআর বাহিনীর জন্য তিন রঙের সংমিশ্রণে ছাপা কাপড়ের ইউনিফর্মের প্রবর্তন করা হয়।

২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি ঢাকার পিলখানা সদর দপ্তরে বিডিআরের কতিপয় বিপদগামী উচ্ছৃঙ্খল সদস্যকর্তৃক ইতিহাসের বিভীষিকাময় নারকীয় হত্যাকাণ্ড ঘটনার পর বিডিআর নাম পরিবর্তন করে বিজিবি (বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড) রাখা হয়।

দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন।

ওয়াই এ/এডিবি