ন্যাভিগেশন মেনু

১ম ডোজে ৫৭ লাখ ৬১৯০২ জন,২য় ডোজে ১৮ লাখ ১৫৯৮৭ জন টিকা নিয়েছেন


দেশে গতকাল বৃহস্পতিবার অবধি প্রথম ডোজের টিকা নিয়েছেন ৫৭ লাখ ৬১ হাজার ৯০২ জন এবং দ্বিতীয় ডোজ নিয়েছেন ১৮ লাখ ১৫ হাজার ৯৮৭ জন। দুই ডোজের টিকা প্রদান কার্যক্রম চলমান রয়েছে। প্রথম ডোজের টিকা যেসংখ্যক মানুষ নিয়েছেন তাদের দ্বিতীয় ডোজ দেওয়ার ক্ষেত্রে এখন প্রায় ১০ লাখ ডোজ টিকার ঘাটতি রয়েছে।

সরকার, বেক্সিমকো ও ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটের সঙ্গে চুক্তির পর থেকে দুটি চালানে ৭০ লাখ ডোজ টিকা বাংলাদেশ পেয়েছে গত জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারিতে। এ ছাড়া ভারত সরকার উপহার হিসেবে দিয়েছে ৩২ লাখ ডোজ।

কিন্তু চাহিদা অনুয়ায়ী ভ্যাকসিন না আসায় সরকার উদ্বিগ্ন। এজন্য বাংলাদেশ বিকল্প বাজার খুঁজছে।

ভারত থেকে বাংলাদেশের হাতে এসেছিল ১ কোটি ২ লাখ ডোজ। গতকাল বৃহস্পতিবার আগরতলা-আখাউড়া সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে আসার সময় বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের হাইকমিশনার বিক্রম কুমার দোরাইস্বামী সাংবাদিকদের বলেছেন,বাংলাদেশ যেন টিকার কার্যক্রম চালিয়ে যেতে পারে, ভারতের পক্ষ থেকে সেই সহযোগিতা করা হবে।

এদিকে বৈশ্বিক কোভিড-১৯-এ সংক্রমণ ও উচ্চ মৃত্যু নিয়ে উদ্বিগ্ন বাংলাদেশকে সাহায্য করতে ফের পাশে দাঁড়াল রাশিয়া। করোনাসংক্রমণ মোকাবিলায় বাংলাদেশেই ‘স্পুটনিক ভি’ উৎপাদনে রাশিয়ার সঙ্গে চুক্তি করেছে বাংলাদেশ।

রাশিয়ার সঙ্গে যৌথভাবে টিকা উৎপাদনের পাশাপাশি বাণিজ্যিকভাবেও বাংলাদেশ টিকা কিনবে। তবে বাংলাদেশকে শর্ত দিয়েছে রাশিয়া।ওই টিকা উৎপাদনের ফর্মুলা বাংলাদেশ কাউকে দেখাতে পারবে না। পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বৃহস্পতিবার (২২ এপ্রিল) সাংবাদিকদের এই তথ্য জানান।

রাশিয়ার উদ্ভাবিত ভ্যাকসিন ‘স্পুটনিক ভি’ দেশে উৎপাদন বিষয়ে ড:মোমেন বলেন, ‘আমাদের সঙ্গে যে চুক্তি হয়েছে সেখানে আমরা বলেছি যে, কিছু আমরা ক্যাশ দিয়ে কিনব, আর কিছু এখানে স্থানীয়ভাবে উৎপাদন করব।

তবে এক নম্বর শর্ত হচ্ছে যে, ভ্যাকসিন উৎপাদনের ফর্মুলা অন্য কারও সঙ্গে শেয়ার করা যাবে না।’ মন্ত্রী বলেন, ‘এরই মধ্যে রাশিয়ার সঙ্গে আমাদের ভ্যাকসিন উৎপাদন বিষয়ে সমাঝোতা হয়েছে।

এখানে লাইন মিনিস্ট্রি হিসেবে কাজ করেছে। আর বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত আলাপ করে সমঝোতা করেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রক।’চিন থেকে ভ্যাকসিন কেনা প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, ‘যারা চিনের সঙ্গে ব্যবসা করেন এবং দেশের যে সকল শিক্ষার্থী চিনে পড়াশোনা করছেন তারা চিনের উৎপাদিত ভ্যাকসিন নেওয়ার জন্য আগ্রহ দেখিয়েছে।

কেননা এতে করে চিনের সঙ্গে তাদের কাজ করতে সুবিধা হবে। তাই আমরা কিছু ভ্যাকসিন চিন থেকেও কিনব। এছাড়া চিন আমাদের ৫ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন উপহার হিসেবে দেবে।’

এদিকে সূত্র জানায়- ভারত থেকে বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের টিকা সরবরাহে বিলম্ব হওয়ায় বাংলাদেশে টিকা প্রয়োগের কার্যক্রম ঝুঁকিতে পড়েছে।

ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটের সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী বাংলাদেশে প্রতি মাসে ৫০ লাখ ডোজ করে টিকা আসার কথা থাকলেও গত দুই মাসে কোনো চালান আসেনি।

এদিকে  আন্তর্জাতিক উদ্যোগে গ্যাভি-কোভ্যাক্স ফ্যাসিলিটি বাংলাদেশকে ১ লাখ ৬১০ ডোজ টিকা বিনামূল্যে সরবরাহের আগ্রহ প্রকাশ করেছে। জরুরি প্রয়োজনে করোনাভাইরাসের টিকা পেতে চিনের উদ্যোগে নতুন প্ল্যাটফর্মে যুক্ত হতে রাজি হয়েছে বাংলাদেশ।

‘ইমার্জেন্সি ভ্যাকসিন স্টোরেজ ফ্যাসিলিটি ফর কোভিড ফর সাউথ এশিয়া’ নামের এই প্ল্যাটফর্মের চিন, বাংলাদেশ ছাড়া বাকি চারটি দেশ হলো- আফগানিস্তান, পাকিস্তান, নেপাল ও শ্রীলঙ্কা।পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন বলেন,‘এটা কোনো জোট নয়।যখন যার দরকার হবে, এই ফ্যাসিলিটি থেকে তারা ভ্যাকসিন সংগ্রহ করবে।

রাশিয়া আমাদের টিকা দিতে সম্মতির কথা জানিয়েছে। তবে বাংলাদেশের যে চাহিদা, সেটা তারা পূরণ করতে পারবে না বলে জানিয়েছে। এ জন্য তারা টিকার ফর্মুলা দিতে রাজি হয়েছে।তিনি জানান, বাংলাদেশে টিকা উৎপাদনে সক্ষম এমন একাধিক প্রতিষ্ঠানের নামের তালিকা রাশিয়াকে দেওয়া হয়েছে।

এখন রাশিয়া এক বা একাধিক প্রতিষ্ঠানকে এ ফর্মুলা দিতে পারে। রাশিয়া যৌথভাবে বাংলাদেশে উৎপাদিত টিকা তৃতীয় দেশে রপ্তানির প্রস্তাবও মেনে নিয়েছে বলেও জানান ড. মোমেন।

এস এস