ন্যাভিগেশন মেনু

রোহিঙ্গা গণহত্যা মামলায় কমনওয়েলথ আইনি লড়াইয়ে গাম্বিয়াকে সহায়তা দেবে


কমনওয়েলথ রোহিঙ্গা গণহত্যা মামলার আইনি লড়াইয়ে গাম্বিয়াকে সহায়তা দেয়ার উপায় খুঁজছে এবং কমনওয়েলথ বাংলাদেশের পাশে থাকবে। কারণ তারা বিশ্বের সর্বাধিক সংখ্যক জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত জনগোষ্ঠীকে আশ্রয় দিয়েছে।

কমনওয়েলথের সেক্রেটারি জেনারেল প্যাট্রিশিয়া স্কটল্যান্ড লন্ডনে তার অফিস থেকে এক একান্ত ভার্চুয়াল সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা জানান। এদিকে রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে পাঠানোর পরিস্থিতি রাষ্ট্রসংঘ পর্যবেক্ষণ করছে বলে জানিয়েছেন ঢাকায় নিযুক্ত রাষ্ট্রসংঘের আবাসিক সমন্বয়ক মিয়া সেপ্পো। শনিবার সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি।

রাজধানী ঢাকার ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে আন্তর্জাতিক স্বেচ্ছাসেবক দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক সেমিনারে বক্তব্য রাখেন ঢাকায় নিযুক্ত রাষ্ট্রসংঘের  আবাসিক সমন্বয়ক। অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে মিয়া সেপ্পো বলেন, রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে পাঠানোর পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে রাষ্ট্রসংঘ।

তবে তাদের মায়ানমারে পাঠানোই সঠিক সমাধান।ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের স্থানান্তর প্রসঙ্গে রাষ্ট্রসংঘ বিবৃতিতে জানিয়েছে, বাংলাদেশ সরকার রোহিঙ্গা শরণার্থীদের কক্সবাজার থেকে ভাসানচরে প্রারম্ভিক স্থানান্তরের কাজ সম্পর্কে রাষ্ট্রসংঘ অবগত রয়েছে।

স্থানান্তরের প্রস্তুতিমূলক কার্যক্রমে অথবা শরণার্থীদের শনাক্ত করার প্রক্রিয়ায় রাষ্ট্রসংঘকে সম্পৃক্ত করা হয়নি। স্থানান্তরের সার্বিক কর্মকাণ্ড সম্পর্কে রাষ্ট্রসংঘের কাছে পর্যাপ্ত তথ্য নেই। অবশ্য হিউম্যান রাইটস ওয়াচ ও অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার বিরোধিতার মধ্যেও শুক্রবার প্রথম ধাপে ১৬৪২ জন রোহিঙ্গাকে ভাসানচরে পাঠানো হয়েছে।

ঢাকায় নিযুক্ত রাষ্ট্রসংঘের আবাসিক সমন্বয়ক মিয়া সেপ্পো বলেন, কমনওয়েলথ সচিবালয় আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) রোহিঙ্গা গণহত্যা মামলায় আইনি লড়াইয়ে গাম্বিয়াকে সহায়তার জন্য সংস্থার সদস্য দেশগুলো থেকে আইনজীবীদের একটি বড় টিম গঠনের সম্ভাবনা পর্যালোচনা করে দেখছে।

স্কটল্যান্ড বলেন, কমনওয়েলথের সদস্য কানাডা আইসিজেতে আইনি লড়াইয়ে গাম্বিয়ার সঙ্গে হাত মিলিয়েছে। আর এক্ষেত্রে তার অফিস কমনওয়েলথে বিদ্যমান আইনবিদদের দিয়ে এই পদক্ষেপে সহায়তার পরিকল্পনা করেছে।

তিনি বলেন, কমনওয়েলথ পরিবার এই ইস্যুতে বাংলাদেশের সঙ্গে ‘পূর্ণ সংহতি’ নিয়ে দাঁড়িয়েছে এবং ২০১৩ সালে কমনওয়েলথ সরকারপ্রধানদের বৈঠকে গৃহীত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বাংলাদেশকে সহায়তা দিয়ে যাবে।

কমনওয়েলথের শীর্ষ নির্বাহী রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেয়ার ক্ষেত্রে দৃষ্টান্তমূলক মানবিক দৃষ্টিভঙ্গির জন্য বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভূয়সী প্রশংসা করেন তিনি। গত সপ্তাহে লন্ডনে কমনওয়েলথ সচিবালয় এবং যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশ হাইকমিশনের যৌথ উদ্যোগে একটি উচ্চপর্যায়ের সংলাপের পরে স্কটল্যান্ডের এ মন্তব্য এসেছে।

 মায়ানমার ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট  নির্মম সামরিক অভিযান শুরু করার পর দেশটির রাখাইন রাজ্যের ১.১ মিলিয়নেরও বেশি রোহিঙ্গা তাদের জন্মভূমি ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়। যাদের বেশির ভাগ বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী কক্সবাজার জেলায় আশ্রয় নেয়। গাম্বিয়া গত বছরের নভেম্বর মাসে ওআইসি, কানাডা ও নেদারল্যান্ডসের সহায়তায় আইসিজেতে মায়ানমারের বিরুদ্ধে এ মামলা করে।

গত বছরের ১০-১২ ডিসেম্বর আইসিজে প্রথম শুনানি করে। ২৩ জানুয়ারি আইসিজে ঐতিহাসিক সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে এবং রুল দেয়, এই মামলা চালানোর যথেষ্ট কারণ রয়েছে এবং মায়ানমারকে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ সুরাহা করে সব ধরনের পদক্ষেপ নিতে হবে।

রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে কমনওয়েলথের পরিকল্পনা ছাড়াও প্যাট্রিশিয়া স্কটল্যান্ড কোভিড-১৯ মহামারীতেও বাংলাদেশের ইতিবাচক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বজায় রাখতে সাফল্যের জন্য শেখ হাসিনার নেতৃত্বের প্রশংসা করেন।

 এস এস