ন্যাভিগেশন মেনু

৩০ মণ ওজনের বরিশালের বস, দাম সাড়ে ১৮ লাখ!


ঈদুল আজহা সামনে রেখে পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জে কোরবানির জন্য ৩০ মণ ওজনের একটি ষাঁড় প্রস্তুত করেছেন এক খামারি। পাঁচ ফুট লম্বা লাল রঙের পাকিস্তানি শাহী ওয়াল জাতের এই ষাঁড়টির বয়স সাড়ে চার বছর। 

উপজেলার সবচেয়ে বড় এই ষাঁড়টির মালিক ভালোবেসে নাম রেখেছেন "বরিশালের বস"। তিনি এর দাম হাঁকাচ্ছেন ১৮ লাখ ৫০ হাজার টাকা।

ইতোমধ্যে স্থানীয় এক ক্রেতা এর দাম ১২ লাখ টাকা বলেছেন বলে জানিয়েছেন ষাঁড়টির মালিক মোঃ ওয়াদুদুজ্জামান। প্রতি বছর কোরবানির ঈদ সামনে রেখে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ওজন এবং দামে আলোচনায় উঠে আসে বিভিন্ন বাহারি নাম ও জাতের ষাঁড়। এবার সে তালিকায় উঠে এসেছে মির্জাগঞ্জের সততা এগ্রো ফার্মে বেড়ে ওঠা বরিশালের বস। পশুটি এবার গাবতলীর হাট মাতাবেন বলে ধারন করছেন এলাকাবাসী। 

বুধবার (১৪ জুলাই) দুপুরে বিক্রির জন্য দেশের সবচেযে বড় পশুর হাট রাজধানীর গাবতলী হাটের উদ্দেশ্যে ট্রাকযোগে রওনা দেয়।

জানা যায়, ৩ বছর আগে ৯৪ হাজার টাকায় দেড় বছর বয়সে ষাঁড়টি দিনাজপুর থেকে কিনে মির্জাগঞ্জে নিয়ে আসেন সততা এগ্রো ফার্মের মালিক মোঃ ওয়াদুদুজ্জামান। এরপর থেকে তিনি গরুটিকে পরম মমতায় লালন পালন করেন। ষাড়টি দেখাশোনার জন্য বাড়িতে রয়েছে আলাদা একজন শ্রমিক। কোন প্রকার রাসায়নিক খাবার এবং মোটাতাজাকরন ইনজেকশন না দিয়ে সম্পূর্ণ দেশিয় ভুট্টা, ধান, ডাল, গমসহ নিজস্ব জমিতে চাষ করা অর্গানিক ঘাস খাইয়ে বড়  করা হয়েছে বরিশালের বসকে। ইতোমধ্যে এর নাম—ডাক চারদিকে ছড়িয়ে পড়ায় প্রতিদিনই তাকে দেখতে বাড়িটিতে ভিড় করছে উৎসুক জনতা।

বরিশালের বস ছাড়াও ২৮ মণ ওজনের পাকিস্তানি শাহী ওয়াল ক্রস এবং নেপালি জাতের আরও ২টি গরু কোরবানীতে বিক্রির জন্য লালন পালন করা হচ্ছে এ ফার্মে। অন্য দুটির নাম দিয়েছেন বরিশালের বস টু এবং বরিশালের বস থ্রি। এদের দাম হেঁকেছেন যথাক্রমে ১৭ লাখ ও ১৫ লাখ টাকা। এ ছাড়াও বিক্রির জন্য বিভিন্ন জাতের আরও ২১টি পশু রয়েছে।

ষাঁড়টির পরিচর্যাকারী কর্মচারী মোঃ খোকন বলেন, এ গরুটিকে তিনবেলা ভুট্টা, ডাল, ধান, গম, দানাদার ও নিজস্ব জমিতে চাষ করা অর্গানিক ঘাস খাইয়ে বড় করা হয়েছে। রোগব্যাধিতে যাতে এটি আক্রান্ত না হয় সে জন্য স্থানীয় পশু চিকিৎসকরা সার্বক্ষণিক ফার্মে এসে খোঁজ খবর নেওয়াসহ পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন নিয়মিত।

সততা এগ্রো ফার্মের পরিচালক রবিউল ইসলাম রুবেল জানান, ‘বরিশালের বসকে ঢাকার গাবতলীতে বিক্রির জন্য নিয়ে যাচ্ছি। এর জন্য সেখানে আমাদের জায়গাও রিজার্ভ করা আছে। এছাড়া মির্জাগঞ্জ ও পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন এলাকা থেকে ক্রেতারা ফার্মে এসে গরু দেখে পছন্দ করে কিনে নিয়ে যাচ্ছেন।'

তিনি বলেন, 'ইতোমধ্যে ১৬ লাখ টাকার ১৭টি গরু বিক্রি করা হয়েছে। আশা করছি গাবতলীর হাটে 'বরিশালের বস' এর ভাল মূল্য পাবো।'

উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ সঞ্জীব কুমার বিশ্বাস বলেন, 'সততা এগ্রো ফার্মে বেড়ে ওঠা ‘বরিশালের বস'কে দেখে অন্যান্য খামারীরাও এ জাতের পশু পালনে আগ্রহ প্রকাশ করছে। উপজেলার ২৮১টি ছোট বড় খামার রয়েছেন। কিন্তু এতো বড় ষাঁড় আর কোন খামারে নেই। উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তরের পরামর্শেই ষাঁড়টি রক্ষণাবেক্ষণ করা হয়েছে।'

এ আর এস/ এস এ/এডিবি/