ন্যাভিগেশন মেনু

‘ভাস্কর্য বিরোধিতার শেকড় খুঁজে বের করুন’


বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাঙচুরের ঘটনায় ভাস্কর্য বিরোধিতাকারীদের শেকড় খুজে বের করার আহ্বান জানিয়েছেন বঙ্গবন্ধুর চাচাতো ভাই শেখ কবির হোসেন।

সোমবার (৬ ডিসেম্বর) ভার্চুয়াল মাধ্যমে একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি এ কথা বলেন।

সাক্ষাৎকারে শেখ কবির হোসেন বলেন, বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যের বিরোধিতায় নামা ধর্মান্ধ গোষ্ঠী শেষ পর্যন্ত সত্যি সত্যিই আঘাত হেনেছে! কুষ্টিয়াতে নির্মিতব্য জাতির পিতার ভাস্কর্য ভাঙচুরের ঘটনা তিন দিন পেরিয়ে গেছে। এখন পর্যন্ত এ ঘটনায় চারজনকে আটক করেছে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনী।

তিনি বলেন, ভাস্কর্য মহান ব্যক্তিদের নামেই হয়ে থাকে। সেই হিসেবে বঙ্গবন্ধুর নামে যতো ভাস্কর্য হবে, ততোই ভালো। কারণ জনগণ জানতে পারবে ইনি কে ছিলেন! বঙ্গবন্ধুকে মুছে ফেলারও চেষ্টা করা হয়েছিল। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পরে একটি শক্তি তাকে হত্যা করেছিল। বঙ্গবন্ধুর যে নেতৃত্ব ছিল, সেটি বিশ্বব্যাপী চলে গিয়েছিল।

বঙ্গবন্ধু কিন্তু আঙুলের নির্দেশনায় বাংলাদেশ স্বাধীন করেছিলেন, জনগণ তার কথায় স্বাধীনতা যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। যার যা কিছু ছিল, তাই নিয়ে মানুষ যুদ্ধে নেমে গিয়েছিল। সেজন্যই তার নেতৃত্বে ঈর্ষান্বিত হয়ে, ভয় পেয়ে দেশ স্বাধীনের পর তাকে মেরে ফেলা হলো। এটা একটা পাকিস্তানি চক্রের কাজ। বাংলাদেশ তারা চাইতো না। এটাই তাদের মূল কথা ছিলো। অবশ্য বঙ্গবন্ধু কন্যা নানা ঘাত-প্রতিঘাত প্রতিরোধ করে, জাতির পিতার খুনিদের বিচার করতে পেরেছেন। আশা করি এ মামলার যারা এখনও পলাতক তাদেরও বিচারের আওতায় নিয়ে আসা হবে।

তিনি বলেন,এই যে এখন ভাস্কর্য ভাঙার পেছনে শক্তিটা কাজ করছে, তাদের উদ্দেশ্য তো আসলে ভাস্কর্য ভাঙা নয়। এটা হলো বঙ্গবন্ধুকে অস্বীকার করা, বাংলাদেশকে অস্বীকার করা। এ দেশের স্বাধীনতাকে তারা বিশ্বাস করে না। এটাই কিন্তু তারা চাচ্ছে। এটা কিন্তু আজকের না। অর্থাৎ জাতির পিতাকে যারা হত্যা করেছে, তারই শিকড় বা শক্তি হলো এরা; অনেক গভীরে তাদের অবস্থান। মাঝে-মাঝে তারা মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে।

শেখ কবির হোসেন বলেন, দেখুন, এই ভাস্কর্য বিরোধিতার ইস্যুতে এর শিকড়ে যাদের অবস্থান, তাদের মূলোৎপাটন করতে হলে গোঁড়ায় হাত দিতে হবে। কুষ্টিয়ায় ভাস্কর্য ভাঙার ইস্যুতে শুধু যে চারজনকে পুলিশ ধরেছে। শুধু তাদের বিচার করলেই হবে না। এই ষড়যন্ত্র কারা করেছে, কারা তাদের এই কাজে প্রলুব্ধ করেছে বা নেপথ্যে রয়েছে শিকড় খুঁজে বের করলেই ইন্ধনদাতা পাওয়া যাবে। এর শিকড় বের করা হোক। কোথায় এদের আস্তানা আছে তা বের করা হোক।

তিনি আরও বলেন, আজকে যারা ভাস্কর্য নিয়ে কথা বলছে, তারা কী জানে না মোহাম্মদ আলী জিন্নাহর ভাস্কর্য আছে পাকিস্তানে!

শেখ কবির হোসেন বলেন, রাজনৈতিক কোনো দল যদি ভাস্কর্য বিরোধীদের ইস্যুতে চুপ থাকে। তাহলে বুঝতে হবে তারাও এদের সাথে জড়িয়ে গেছে। সমাজের সবারই এই ইস্যুতে সরব হওয়া প্রয়োজন বলে আমি মনে করি। সরকারের উচিত এই অপশক্তির মূলোৎপাটন করতে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যের বিষয়ে জনগণকেই মূলত সোচ্চার হতে হবে। এক্ষেত্রে যারা বুদ্ধিজীবী তাদেরকেও দায়িত্ব নিতে হবে। এই সময়ে তাদের নীরবতা কোনোভাবেই কাম্য নয়। ভাস্কর্য নিয়ে জনমত গড়তে তাদেরকে এগিয়ে আসতে হবে। কেননা সমাজের মানুষকে বোঝাতে বুদ্ধিজীবীদের একটা বড় ভূমিকা রয়েছে বলে আমি মনে করি।

সিবি/এডিবি