ন্যাভিগেশন মেনু

৩ রোহিঙ্গার নামে বাংলাদেশি পাসপোর্ট ইস্যু, ২ পুলিশকে শোকজ


অভিযোগ ছিল দীর্ঘদিন ধরেই যে, রোহিঙ্গারা বাংলাদেশ থেকে পাসপোর্ট বানিয়ে ভারতসহ বিশ্বের নানা দেশে পাড়ি জমাচ্ছে। আর এ কাজে সহায়তা করছে কিছু বাংলাদেশি আর অসাধু পাসপোর্ট আধিকারীকরা।

এবার হাতে-নাতে প্রমাণ মিলল নোয়াখালী আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে। ওই অফিস থেকে তিন রোহিঙ্গা যুবকের নামে পাসপোর্ট ইস্যু করার বিষয়ে তদন্ত শুরু করেছে জেলা পুলিশ।

এ পাসপোর্ট যাচাই-বাছাই করার (ভেরিফিকেশন) দায়িত্বে নিয়োজিত জেলা পুলিশের বিশেষ শাখার (ডিএসবি) দুই কর্মকর্তা এএসআই নুরুল হুদা ও আবুল কালামকে শোকজ করা হয়েছে।

বুধবার বিকেলে বিষয়টি নিশ্চিত করে পুলিশ সুপার মো. আলমগীর হোসেন বলেন, জেলার সেনবাগ উপজেলার ঠিকানা ব্যবহার করে তিন রোহিঙ্গার বাংলাদেশি পাসপোর্ট নেওয়ার ঘটনায় তদন্ত শুরু করা হয়েছে।

পাসপোর্ট ভেরিফিকেশনে যে কর্মকর্তা দায়িত্বে ছিলেন, যারা সার্টিফিকেট সৃজন এবং সত্যায়ন করেছেন প্রত্যেকটি বিষয়ে তদন্ত চলছে।

বিশেষ শাখার (ডিএসবি) কর্মকর্তা এএসআই নুরুল হুদা রোহিঙ্গা দুই ভাই মোহাম্মদ ইউসুফ ও মোহাম্মদ মুসা এবং এএসআই আবুল কালাম অপর রোহিঙ্গা যুবক মোহাম্মদ আজিজের পাসপোর্ট ভেরিফিকেশন কাজে নিয়োজিত ছিলেন।

তাদেরকে শোকজ নোটিশ দেয়া হয়েছে।পুলিশ সুপার আরো জানান, জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপারকে এর তদন্তভার দেয়া হয়েছে। এ ঘটনার পিছনে জড়িত প্রত্যেককে চিহ্নিত করা হবে।

 তদন্ত শেষে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। গত বৃহস্পতিবার (৬ সেপ্টেন্বর) বাংলাদেশি পাসপোটধারী তিন রোহিঙ্গা যুবককে চট্টগ্রামের আকবরশাহ থানা এলাকা থেকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে।

পুলিশের কাছে তারা স্বীকার করে দালাল ধরে নোয়াখালী আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস থেকে পাসপোর্ট করিয়েছে। গ্রেপ্তারকৃত তিনজনের মধ্যে মোহাম্মদ ইউসুফ (২৩) ও তার ছোট ভাই মোহাম্মদ মুসার (২০) বাড়ি মিয়ানমারের মংডুর দুমবাইয়ে এবং মোহাম্মদ আজিজ ওরফে আইয়াজের (২১) বাড়ি মংডুর টালিপাড়ায়।

২০১৭ সালে আরাকানে মায়ানমারের সেনাবাহিনীর অভিযান শুরুর পর তারা পালিয়ে এসে কক্সবাজারের উখিয়ায় খাইয়াংখালী হাকিমপাড়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পে থাকছে। এদিকে নোয়াখালী আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ নুরুল হুদা জানান, জেলা ডিএসবি আবেদনপত্র যাচাই-বাছাই করে রিপোর্ট দেয়ার পরই সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির নামে পাসপোর্ট ইস্যু করা হয়।

 তিন রোহিঙ্গা যুবককে পাসপোর্ট প্রদানের বিষয়ে তদন্ত চলছে। এ ঘটনায় তার অফিসের কেউ জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া গেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।  তবে ভবিষতে এমন ঘটনা যেন না ঘটে তার জন্য সর্তকতা অবলম্বন করা হয়েছে।

এ বিষয়ে কাদরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ কামরুজ্জামান পলাশ জানান, মোহাম্মদ ইউসুফ, মোহাম্মদ মুসা ও মোহাম্মদ আজিজের নামে ২৮ জানুয়ারি ২০১৫ সালে যে জন্ম নিবন্ধন ও নাগরিকত্ব সনদ ইস্যু করা হয়েছে তা ভুয়া।

জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে তা করা হয়েছে। ইউনিয়ন পরিষদের নিবন্ধন রেজিস্টার বা অনলাইনে এর কোনো অস্তিত্ব নেই।