১৯৭১ সালের ৪ মার্চ, এদিন সারাদেশ ছিল হরতালে স্তব্ধ। প্রতিবাদ বিক্ষোভে তপ্ত রাজপথ। সারাদেশে অনুষ্ঠিত হয়েছে গায়েবানা জানাজা। সভা সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিলে বীর বাঙালি নিয়েছে স্বাধীনতার শপথ।
এই দিনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যে কোন মূল্যে সংগ্রাম চালিয়ে যাবার অঙ্গীকার ব্যক্ত করে বেশ কিছু নির্দেশ দেন।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বলেছিলেন, ‘বিশ্ববাসী দেখুক, বাংলাদেশের নিরস্ত্র ছাত্র শ্রমিক জনতা বুলেটের মুখেও কী দুর্দান্ত সাহস ও দৃঢ়তার সঙ্গে নিজেদের অধিকার হরণের ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছে।’
দ্রোহ-ক্ষোভে বঞ্চিত শোষিত বাঙালি তখন ক্রমেই ফুঁসে উঠছিল ঔপনিবেশিক পাকিস্তানি শাসক-শোষকদের বিরুদ্ধে।
সারাদেশে চলছিল হরতাল। ওষুধের দোকান, হাসপাতাল, অ্যাম্বুলেন্স, চিকিৎসক ও সাংবাদিকদের গাড়ি, পানি বিদ্যুৎ গ্যাস সরবরাহ, স্থানীয় টেলিফোন ও বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় টেলিফোন যোগাযোগ, দমকল ও আবর্জনার গাড়ি হরতালের আওতায় আসবে না বলে জানান। পূর্ব পাকিস্তানের টেলিফোন কর্মীরা পশ্চিম পাকিস্তানে ট্রাঙ্কল বুক ও টেলিগ্রাম প্রেরণ থেকে বিরত থাকেন।
গভর্নরের বেসামরিক দায়িত্বে নিয়োজিত মেজর জেনারেল রাও ফরমান আলী কিছু প্রস্তাব নিয়ে গিয়েছিলেন রাতে বঙ্গবন্ধুর বাসভবনে। তাঁর সেই প্রস্তাবের জবাবে বঙ্গবন্ধু বাঙালিরা কিভাবে মারা যাচ্ছে তার বর্ণনা দেন এবং দৃঢ়তার সঙ্গে তাঁর দাবি মেনে নেয়ার কথা বলেন।
এমন সময় সেখানে তাজউদ্দীন আহমদ উপস্থিত হয়ে বলেন, এখন আর এক ছাদের নিচে আমাদের অবস্থান সম্ভব নয়। এরপর আর সেই আলোচনা এগোয়নি।
অন্যদিকে, এদিন রাজারবাগ পুলিশ লাইন ও পিলখানা থেকে ইপিআর এর বাংলাদেশি জওয়ানরা রাজপথে মিছিলকারীদের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করে জয়বাংলা স্লোগান দিতে থাকেন। এবং পূর্ব পাকিস্তান সাংবাদিক ইউনিয়নও আন্দোলনের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে হাজার হাজার মানুষ সামরিক শাসন প্রত্যাহারের দাবি জানান।
ওআ /এডিবি
আরো পড়ুন: