ন্যাভিগেশন মেনু

‘অতুল্য’ নিমিশে বিনাশ করছে করোনাভাইরাস’কে


কোন ওষুধ নয়। শুধুমাত্র তিন কিলোগ্রাম ওজনের একটি যন্ত্র। তা দিয়েই করোনাভাইরাস নির্মূল করা হচ্ছে ভারতে।

‘অতুল্য’ তার স্বভাবগতিতে ক্রমাগত তাপ ছড়ায়। আর সেই তাপেই ক্রমে নষ্ট হচ্ছে করোনাভাইরাসের আরএনএ। এভাবে এবার করোনা বিনাশ কাজ চালাচ্ছে ‘অতুল্য’।

বৈজ্ঞানিকরা যন্ত্রটিকে ‘অতুল্য’ নামেই ডাকতে শুরু করেছেন। যেকোনও বস্তুর গায়ে যদি করোনাভাইরাসের চিহ্নটুকুও থাকে, তবে ‘অতুল্য’ তা লোপ করতে প্রস্তুত। আসলে এটি একটি ‘মাইক্রোওয়েভ স্টেরিলাইজার’। এই যন্ত্র দিয়েই ধ্বংস করা হচ্ছে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস। 

সেই প্রমাণ ইতিমধ্যেই পেয়েছেন ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞানীরা। এবার সাধারণ মানুষ যাতে কম দামে ‘অতুল্য’কে ব্যবহার করতে পারেন, সেই উদ্যোগ নিচ্ছে ভারত।

‘অতুল্য’ তৈরির পুরো কৃতিত্ব ভারতের ডিফেন্স ইন্সটিটিউট অব অ্যাডভানসড টেকনোলজির। পুণের এই সংস্থাটি ডিফেন্স রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন বা ডিআরডিও’র আওতায় পড়ে।

কিছুদিন আগেই ডিআরডিও করোনাভাইরাস নষ্ট করার জন্য একটি যন্ত্র আবিষ্কার করেছিল। ওই যন্ত্রটি থেকে অতিবেগুনি রশ্মি বের হয়।

ওই রশ্মিই কিছুক্ষণের মধ্যে কাবু করে ফেলে করোনাভাইরাস। নষ্ট করে ফেলে তার ডিএনএ ও আরএনএ। ওই যন্ত্রের মধ্যে রাখা মোবাইল, ফাইল বা টুপির মতো হালকা বস্তুতে থাকা করোনাভাইরাস নষ্ট হয়ে যেতে পারে।

কিন্তু ওই যন্ত্রটি তৈরির সঙ্গে সঙ্গে বৈজ্ঞানিকরা এমন কোনও যন্ত্র তৈরির পরিকল্পনা করেন, যাতে বিনাশ হবে আরও বেশি ওজনের বস্তুর উপর লেগে থাকা করোনাভাইরাস।

কিন্তু এই ক্ষেত্রে অতিবেগুনি রশ্মি বা আলট্রাভায়োলেট রে’র বদলে তাপকেই ব্যবহার করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সেই পরিকল্পনা অনুযায়ীই ডিফেন্স ইন্সটিটিউট অব অ্যাডভানসড টেকনোলজি তৈরি করেছে ‘মাইক্রোওয়েভ স্টেরিলাইজার’টি।

ভারতবাসীর ঘরে ঘরে রয়েছে মাইক্রোওয়েভ। খাবার গরম করতে এর ব্যবহার অতুলনীয়। আবার অনেকে শিশুদের দুধের বোতল বা অন্য বস্তু গরম করতে মাইক্রোওয়েভ স্টেরিলাইজার ব্যবহার করেন।

বিদেশে ২০ ডলারের মধ্যেও পাওয়া যায় এই ধরনের যন্ত্র। কিন্তু ‘অতুল্য’কে তৈরি করা হয়েছে এমনভাবে, যাতে ভারী বস্তুও তাপের মাধ্যমে স্টেরিলাইজ করা যায়। 

ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের বৈজ্ঞানিকরা জানাচ্ছেন, এই যন্ত্রের সামনের অংশটি অনেকটা চোঙের মতো। ওই চোঙের ভিতর দিয়ে তিন কিলোগ্রাম ওজনের মধ্যে থাকা যে কোনও বস্তু যন্ত্রের ভিতরে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।

যন্ত্রটি চালু করা হলে এক মিনিট ধরে ৫৬ থেকে ৬০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের তাপপ্রবাহ ক্রমাগত বস্তুটির উপর ছড়াতে শুরু করে। ক্রমাগত ছড়ানো এই তাপ সহ্য করতে পারে না করোনাভাইরাস। বিনষ্ট হয়ে যায়। 

তিন কিলোগ্রাম ওজন বিধায় এই যন্ত্রটি বহনযোগ্য। ঘর ও অফিস যেকোনও জায়গায় ব্যবহার করা যায়। যাতে কম দামে সাধারণ মানুষ যন্ত্রটি কিনতে পারেন, সেই চেষ্টা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। 

সূত্র: সংবাদ প্রতিদিন, কলকাতা

এস এস