ন্যাভিগেশন মেনু

অনিশ্চিত প্রত্যাবাসনে রোহিঙ্গারা অপরাধে জড়িত হচ্ছে : প্রধানমন্ত্রী


প্রত্যাবাসনের দীর্ঘস্থায়ী অনিশ্চয়তায় রোহিঙ্গারা অপরাধমূলক কর্মকান্ডে জড়িত হচ্ছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, ‘রোহিঙ্গারা তাদের প্রত্যাবাসন নিয়ে দীর্ঘ অনিশ্চয়তার কারণে হতাশ হয়ে পড়ছে, যার একটি সম্ভাব্য ঝুঁকি রয়েছে। কারণ, এটি তাদের অনেককে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত হতে প্ররোচিত করছে।’

মঙ্গলবার (২৪ মে) প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশনার (ইউএনএইচসিআর) ফিলিপ্পো গ্র্যান্ডি সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে গেলে শেখ হাসিনা এ কথা বলেন।

বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।

শেখ হাসিনা ইউএনএইচসিআর’কে বলেন, বাংলাদেশ সরকার রাখাইন রাজ্যে যা পাওয়া যায় তার সাথে সামঞ্জস্য রেখে মিয়ানমারের পাঠ্যক্রম ও ভাষার পাশাপাশি দক্ষতা উন্নয়ন কার্যক্রম অনুসরণ করে অনানুষ্ঠানিক শিক্ষার সুবিধা দিচ্ছে।

তিনি বলেন, ১১ লাখের বেশি জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত মিয়ানমারের নাগরিক বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়ার কারণে গভীর বনভূমি কক্সবাজারের উখিয়ার পরিবেশ নষ্ট হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তারা গাছ কাটার মাধ্যমে বনভূমি হ্রাস এবং এলাকার পরিবেশগত বিপর্যয় সৃষ্টি করছে।’

তিনি আরও বলেন, প্রতি বছর ৪৫ হাজার রোহিঙ্গা শিশুর জন্ম হচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাঁর সরকার সব ধরনের সুযোগ-সুবিধাসহ ভাষানচর দ্বীপে রোহিঙ্গাদের জন্য অস্থায়ী আশ্রয়ের ব্যবস্থা করেছে।

তিনি বলেন, ‘আমাদের সরকার এক লাখ রোহিঙ্গাকে সাময়িকভাবে আশ্রয় দেয়ার জন্য ভাষানচরকে সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা দিয়ে গড়ে তুলেছে।’

শেখ হাসিনা আরও বলেন, এ পর্যন্ত ৩০ হাজার রোহিঙ্গাকে অস্থায়ী আশ্রয়ে স্থানান্তর করা হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বিশ্বব্যাপী উদ্বাস্তু, রাষ্ট্রহীন ও বাস্তুচ্যুত ব্যক্তিদের সহায়তায় ইউএনএইচসিআরের ভূমিকার প্রশংসা করেন।

অ্যাম্বাসেডর-অ্যাট-লার্জ এম. জিয়াউদ্দিন, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের (পিএমও) সিনিয়র সচিব মো. তোফাজ্জেল হোসেন মিয়া এবং ইউএনএইচসিআর বাংলাদেশের প্রতিনিধি জোহানেস ভ্যান ডার ক্লাউ উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠকে ফিলিপ্পো গ্র্যান্ডি শেখ হাসিনার আশঙ্কার সাথে একমত হন যে রোহিঙ্গাদের দীর্ঘ অবস্থান তাদের অনেককে অপরাধমূলক কর্মকান্ডে জড়িত হতে প্ররোচিত করবে।

মিয়ানমার সফরের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন শুরু করতে তিনি বর্তমান মিয়ানমার সরকারকে অনুরোধ করেছেন।

তিনি আরো বলেন, ‘মিয়ানমারের বর্তমান সরকার প্রত্যাবাসন শুরু করতে সম্মত হয়েছে’। ‘ইউএনএইচসিআর প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ায় সহায়তা করবে।’

ফিলিপ্পো গ্র্যান্ডি বাংলাদেশর প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন এবং বিপুল সংখ্যক জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেয়ায় সরকারের প্রশংসা করেন।

এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, রোহিঙ্গা ছাড়াও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং আফগানিস্তান ইস্যু বিশ্বব্যাপী শরনার্থীর সংখ্যা বৃদ্ধিতে ভূমিকা রেখেছে।