ন্যাভিগেশন মেনু

ধামরাইয়ের রোয়াইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকেরা প্রশিক্ষণে

নৈশ প্রহরি যখন স্কুল চালাচ্ছে

দ্রুত সমাধানের আশ্বাস ইউএনওর


ধামরাই উপজেলার একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকেরা অনুপস্থিত থাকায় দপ্তরি-কাম-নৈশ প্রহরী তিন দিন ধরে শিক্ষা কার্যক্রমের দায়িত্ব পালন করেছেন।

ধামরাই উপজেলার রোয়াইল ইউনিয়নের রোয়াইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে। এ ইউনিয়নে ১০টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে।

এই ঘটনায় উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ও শিক্ষা ব্যবস্থাপকদের উদাসীনতা ও স্বজনপ্রীতিকে দায়ী করছেন অবিভাবক এবং স্থানীয়রা।

বিদ্যালয়ে পাঁচজন শিক্ষক রয়েছে বলে দাবি করা হলেও বিভিন্ন কারণে তাদের কেউই উপস্থিত ছিলেন না। গত রবিবার ও সোমবারের শিক্ষা কার্যক্রম স্কুলের একমাত্র অফিস সহকারী তদারকি করেন। পরবর্তীতে, গত মঙ্গলবার অপরিচিত কয়েকজনকে শিক্ষক হিসেবে ক্লাস নিতে দেখে অনেক অবিভাবক হতবাক হন।

অনুপস্থিতির ব্যাখ্যা করে স্কুলের অফিস সহকারী (দপ্তরি) হযরত আলী জানান যে একজন শিক্ষক পিটিআই প্রশিক্ষণের জন্য দূরে ছিলেন, অন্যজন মাতৃত্বকালীন ছুটিতে ছিলেন এবং আরেকজন আরেকটি স্কুলে ডেপুটেশনে ছিলেন। বাকি দুই শিক্ষক বর্তমানে প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন, তাই অস্থায়ীভাবে স্কুল পরিচালনার দায়িত্ব তার নিজেকেই নিতে হয়েছে বলে প্রহরী আলী দাবী করেন।

স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য নেপাল চন্দ্র পাল এই পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন, উল্লেখ করেন যে শুধুমাত্র দুইজন শিক্ষক প্রশিক্ষণরত থাকায় বিদ্যালয়ের কার্যক্রম অচল হয়ে পড়ে।

যাইহোক, সভাপতি আশুতোষ মন্ডল এবং ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আফরিন সুলতানাসহ স্কুল কর্তৃপক্ষ এই বিপত্তির কথা জেনে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন, অবিলম্বে সমাধান করা হবে বলে জানিয়েছেন।

এদিকে, ধামরাই উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তার কাছ থেকে ব্যাখ্যা নেওয়ার চেষ্টা করায় সাংবাদিকদের পরিস্থিতি নিয়ে প্রতিবেদন না করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে উপজেলা শিক্ষা অফিসার তাজমুন্নাহার-এর সঙ্গে তাঁর ফোন বন্ধ থাকায় যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

একই বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক শাহজাহান মিয়া বাংলাদেশ পোস্টকে বলেন, “আমি চলতি বছরের ৪ জানুয়ারি অবসর নিয়েছি। শিক্ষক স্বল্পতার কারণে আমরা আগে থেকেই চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন ছিলাম; তখন আমিসহ শিক্ষক মাত্র ৫ জন ছিল। আর সব ক্লাস মিলিয়ে শিক্ষার্থীদের সংখ্যা ছিল ১৪০ জন।'' স্কুল খোলার দিনে শিক্ষক না থাকায় তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করেন।

ঢাকা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুল আজিজ বাংলাদেশ পোস্টকে বলেন, “আমি ঘটনাটি শুনেছি এবং ইতিমধ্যে দায়ীদের কাছে কারণ দর্শানোর নোটিশ জারি করেছি”। তিনি বলেন, ঘটনাটি দুর্ঘটনাবশত ঘটেছে, মাত্র একদিনের জন্য ঘটেছে। শিক্ষকরা ৫ দিনের ট্রেনিং সেশনে ছিলেন, এর মধ্যে হঠাৎ স্কুল খুলে দেওয়ায় তারা পরিস্থিতি সামাল দিতে ব্যর্থ হয়। তবে বুধবার যথাসময়ে স্কুলে যান শিক্ষকেরা।

এসব উদ্বেগের প্রতিক্রিয়ায়, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) খান মোঃ আবদুল্লাহ আল মামুন সমস্যাটি সমাধানের জন্য দ্রুত পদক্ষেপের বিষয়ে আশ্বাস দেন।