ন্যাভিগেশন মেনু

বিশ্বের বিভিন্ন দেশের চেয়ে বাংলাদেশে বিনিয়োগ হবে নিরাপদ সাশ্রয়ী - বিশিষ্ট ব্যবসায়ীরা।

২০৩১ সালের মধ্যে ১০০ বিলিয়ন ডলারের রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রায় বিশ্বের অন্যান্য দেশকে বিনিয়োগের আহ্বান


বাংলাদেশ বিজনেস সামিট উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় দিনে বিশ্বের অন্যান্য দেশকে বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানান বিশিষ্ট ব্যবসায়ীরা।

আন্তর্জাতিক এ বিজনেস সামিটের আয়োজক দেশের ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই রোববার (১২ মার্চ) বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে চলমান বাংলাদেশ বিজনেস সামিটে এ আহ্বান জানিয়ে বলেন,ব্যবসায়িক ধারণা আদান-প্রদান, পারস্পারিক সম্পর্ক গড়ে তুলতেই এ সামিটের আয়োজন করেছে এফবিসিসিআই।

অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, বাংলাদেশ উৎপাদনব্যবস্থায় দক্ষতা আনার চেষ্টা করছে। ৬০ বিলিয়ন থেকে ২০৩১ সালের মধ্যে ১০০ বিলিয়ন ডলারের রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে কাজ করছে সরকার।

পাওয়ার সেক্টরের জন্য এরই মধ্যে কাতার ও সৌদি আরবের সঙ্গে কাজ চলছে। গ্যাসের সমস্যা সমাধানে অভ্যন্তরীণ উৎসকেও গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। সরকার বিনিয়োগবান্ধব করে সব প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। এরই মধ্যে অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিনিয়োগ করেছে চীন, দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপান। আমাদের ১০০ অর্থনৈতিক অঞ্চলের কাজও এগিয়েছে। এরই মধ্যে ওয়ান স্টপ সার্ভিস চালু করেছে বিডা। ই-কমার্স খাতে শৃঙ্খলা এসেছে। ১০০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগে কাজ করছে দেশ। এ বিনিয়োগে অন্যতম সহযোগী হিসেবে কাজ করছে এফবিসিসিআই।

প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান দেশের অবকাঠামো উন্নয়ন, ইকোনমিক জোন, বিনিয়োগকারীদের সুযোগ-সুবিধা বিষয়ে তিনি বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশের চেয়ে সাশ্রয়ী ও নিরাপদ বিনিয়োগ পরিবেশ রয়েছে বাংলাদেশে।

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশে বিনিয়োগ করলে শ্রমিকখাতে সাশ্রয় হবে ৪৭ থেকে ৮৪ শতাংশ। ম্যানেজারস স্যালারিতে সাশ্রয় হবে ৪১ থেকে ৬৯ শতাংশ পর্যন্ত। এছাড়া ৬ থেকে ৮৯ শতাংশ সাশ্রয় হবে পানিতে, বিদ্যুতে সাশ্রয় হবে ১০ থেকে ৫৫ শতাংশ পর্যন্ত।

দুর্নীতির বিষয়েও কথা বলেন সালমান এফ রহমান। বিদেশি ডেলিগেটদের উদ্দেশে তিনি বলেন, সরকার প্রধান (প্রধানমন্ত্রী) এ বিষয়ে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করেছেন। কোনো ধরনের অনিয়মকে ছাড় দেয়া হবে না। আমাদের অবকাঠামো উন্নয়নসহ নানা খাতে সুবিধা বিবেচনায় বাংলাদেশে বিনিয়োগ হবে নিরাপদ।

এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি এ কে আজাদ বলেন, বিশ্বে এখন ম্যানমেড ফাইবারের চাহিদা বাড়ছে। ম্যানমেড ফাইবার খাতে বিনিয়োগের সু্যোগ রয়েছে। এফবিসিসিআইয়ের এমন উদ্যোগ থাকলে ১০০ বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ আনা আরও সহজ হবে। আমাদের দেশে ভালো জব মার্কেট আছে, যেটা অন্য দেশের চেয়ে সাশ্রয়ী। ইকোনমিক জোনে ননস্টপ সার্ভিস শুরু হয়েছে। সুতরাং বলতে পারি এ দেশে নিরাপদে বিনিয়োগ করতে পারেন।

বিদেশি বিনিয়োগকারীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়ে, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেন, আমাদের মেগা প্রকল্প ঘিরে অবকাঠামো উন্নয়ন হয়েছে। পদ্মা সেতু, কর্ণফুলী টানেল, পায়রা সেতুসহ আরও অনেক উন্নয়ন হয়েছে বিনিয়োগ-ব্যবসা সহজ হয়েছে। বিশ্বের মধ্যে সবুজ কারখানা সবচেয়ে বেশি আমাদের দেশে। বিশ্বের সবচেয়ে ক্লিন সবুজ কারখানাও আমাদের দেশে। নিরাপদ কর্মপরিবেশ রয়েছে আমাদের। আসুন আমাদের এখানে, সব সুবিধা রয়েছে, বিনিয়োগ করুন।

উল্লেখ্য যে, এর আগে শনিবার সকাল ১০টায় বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) তিন দিনব্যাপী এই বিজনেস সামিটের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পাশাপাশি একইদিন সামিটের অন্যতম আকর্ষণ বেস্ট অব বাংলাদেশ এক্সপোরও উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী।

বিভিন্ন কৌশলগত বিষয়ে তিনটি প্লেনারি সেশন, ১৪টি প্যারালাল সেশন, বিজনেস টু বিজনেস মিট, নেটওয়ার্কিং সেশন, একটি ওপেন হাউস রিসেপশন এবং আন্তর্জাতিক প্রতিনিধিদের জন্য গাইডেড ট্যুর রয়েছে এ সামিটে।

ঢাকায় আয়োজিত এই সামিটে যুক্তরাজ্য, সৌদি আরব, চীন, ভুটান, সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ সাতটি দেশের মন্ত্রীরা অংশ নিয়েছেন। পাশাপাশি ১২টি বহুজাতিক কোম্পানির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, ১৭টি দেশের ২০০টিরও বেশি বিদেশি বিনিয়োগকারী প্রতিনিধি এবং ব্যবসায়ী নেতারা অংশ নিয়েছেন। প্রতিষ্ঠার ৫০ বছর উদযাপন উপলক্ষে সামিটের আয়োজন করেছে এফবিসিসিআই।