ন্যাভিগেশন মেনু

স্বাধীনতা যুদ্ধে শহীদ বুদ্ধিজীবীর সংখ্যা ১২২২


বাংলাদেশে স্বাধীনতা যুদ্ধে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের সংখ্যা এক হাজার ২২২ জনের একটি তালিকা অনুমোদন দিয়েছে সরকার। চলতি ডিসেম্বর মাসের মধ্যেই তা আনুষ্ঠানিকভাবে জানিয়ে দেওয়া হবে।

নয় মাসের সশস্ত্র সংগ্রামের মধ্য দিয়ে বাঙালির বিজয় যখন আসন্ন, তখনই ১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী পরিকল্পিতভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, চিকিৎসক, শিল্পী, লেখক, সাংবাদিকসহ বহু খ্যাতিমান বাঙালিকে বাসা থেকে তুলে নিয়ে হত্যা করে।

নিজেদের পরাজয় নিশ্চিত জেনেই পাকিস্তানি বাহিনী ওই নিধনযজ্ঞ চালায়। তাদের উদ্দেশ্য ছিল স্বাধীনতার পর যেন বাংলাদেশ যাতে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে না পারে- তা নিশ্চিত করা।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মুনতাসির মামুন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মেজবাহ কামাল, গণহত্যা-নির্যাতন আর্কাইভ ও জাদুঘরের ট্রাস্টি চৌধুরী শহীদ কাদের, জাতীয় প্রতিষেধক ও সামাজিক চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান (নিপসম) এর পরিচালক বায়েজিদ খুরশীদ রিয়াজ এবং গণহত্যা-নির্যাতন আর্কাইভ ও জাদুঘরের গবেষক গাজী সালাউদ্দিনও বুদ্ধিজীবীদের তালিকা প্রণয়ন কমিটির সদস্য। বীর মুক্তিযোদ্ধা ও গবেষক অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট কর্নেল কাজী সাজ্জাদ জহির বীর প্রতীক এবং মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. শহীদুল হক ভূঁঞাকে সদস্য হিসেবে কমিটি রাখা হয়েছে।

মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপসচিব রথীন্দ্র নাথ দত্ত কমিটিতে সদস্য সচিবের দায়িত্ব পালন করছেন। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব তপন কান্তি ঘোষকে সভাপতি করে গঠিত ১১ সদস্যের এ কমিটির প্রথম সভায় রবিবার এক হাজার ২২২ ওই তালিকা অনুমোদন দেওয়া হয়। সভা শেষে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক সাংবাদিকদের বলেন, “বুদ্ধিজীবী কারা, তার সংজ্ঞা নির্ধারণের জন্য আমাদের দীর্ঘ আলোচনা হয়েছে।

ঐকমত্য হয়েছে, আগামী সভায় এটা লিখিত আকারে উপস্থাপিত হয়ে অনুমোদতি হবে। মন্ত্রী জানান, ১৯৭২ সালে প্রাথমিকভাবে এক হাজার ৭০ জন শহীদ বুদ্ধিজীবীর একটি তালিকা হয়েছিল। পরে ডাক বিভাগ ১৫২ জন শহীদের ডাকটিকেট প্রকাশ করেছে।

মোট এক হাজার ২২২ জন হয়, সেই তালিকা আমরা অনুমোদন দিয়েছি। বিভিন্ন আবেদন আমাদের কাছে আছে, ভবিষ্যতে হয়ত আরও আবেদন আসবে, সেখান থেকে যাচাই-বাছাই করে অনুমোদন দেওয়া হবে।

প্রাথমিকভাবে এক হাজার ২২২ জন বুদ্ধিজীবীর তালিকা অনুমোদন দেওয়া হলেও এই প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকবে বলে জানান মন্ত্রী।তিনি বলেন, “এক হাজার ২২২ জনের তালিকা ইতিমধ্যে প্রকাশিত হয়েছে, সেগুলোকে আমরা স্বীকৃতি দিয়েছি, এটাই আমাদের প্রাথমিক তালিকা, এই তালিকা চলমান থাকবে।

আমরা আগামী বছর স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর মধ্যে তালিকা সংযুক্ত করে শেষ করব। দীর্ঘদিন চলে গেছে, আর সময়ক্ষেপণ যাতে না হয়। বুদ্ধিজীবীদের তালিকা প্রণয়ন কমিটির সদস্য, একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবির জানান, ২৫ মার্চ থেকে শুরু করে ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত সময়কাল ধরে বুদ্ধিজীবীদের তালিকা করা হবে।

এক মাস পর পরবর্তী সভা হবে। দেরিতে হলেও এই সরকার তালিকা প্রকাশের উদ্যোগ নিয়েছে। বুদ্ধিজীবীদের তালিকা প্রণয়নের প্রক্রিয়াটি এক বছরের মধ্যে শেষ করার সিদ্ধান্ত হয়েছে জানিয়ে শাহরিয়ার কবির বলেন, “কারণ ৩০ লাখ শহীদের তালিকা তৈরি করার চেয়ে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের তালিকা তৈরি করাটা তুলনামূলক সহজ হবে বলে মনে করি।

জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে যারা গবেষণা করেছেন, আঞ্চলিক ইতিহাস লিখেছেন, আমরা সবার সহযোগিতা নেব। এটা একটা আমলানির্ভর কাজ হবে না, যেভাবে মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা হয়েছে।

বাংলাদেশ ডকুমেন্ট, বাংলা একাডেমির বুদ্ধিজীবী কোষ, বাংলাপিডিয়া, ডাক বিভাগ ছাড়াও এর বাইরে আরও তালিকা আছে জানিয়ে শাহরিয়ার কবির বলেন, এই তালিকা ‘অনেক বড় হব ‘ বলে তিনি মনে করেন।

এস এস