ন্যাভিগেশন মেনু

মনে হলো আজ জেল থেকে মুক্ত হয়েছি:

সাটুরিয়ার স্বাস্থ্যবিধি মেনে সবকটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় খুলেছে


সারাদশের মতো মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলার সবকটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় আজ খুলেছে। প্রায় দেড় বছর পর শ্রেণিকক্ষে ফিরতে পেরে সব শিক্ষার্থীরা আনন্দ উচ্ছাসে মেতে উঠেছে।

রবিবার (১২ সেপ্টেম্বর) সাটুরিয়া উপজেলা শিক্ষা অফিসের অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর মনিকা খাতুন জানিয়েছেন, উপজেলায় মোট ৮০টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং ১০৭টি কিন্ডারগার্টেন স্কুল আছে। এরমধ্যে সবগুলো প্রাথমিক বিদ্যালয় খুলেছে।

উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. মাইনুল ইসলাম বাংলাদেশ পোস্টকে জানান, প্রতিটি স্কুলের শিক্ষাকার্যক্রম স্বাস্থবিধি মেনেই পরিচালিত হচ্ছে।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, 'আমি নিজেও উত্তর কাউন্নারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ কয়েকটি স্কুল পরিদর্শন করেছি এবং সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছি যাতে কোনওভাবেই স্বাস্থবিধি লংঘিত না হয়।'

উপজেলার সাটুরিয়া ইউনিয়নের বাছট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক কাজী নজরুল ইসলাম বলেন, 'আমরা শিক্ষকরা নিজেরা প্রতিটি শিক্ষার্থীর শরীরের তাপমাত্রা থার্মোমিটার দিয়ে পরীক্ষা করে শ্রেণিকক্ষে প্রবেশ করিয়েছি।'

স্কুলের সিনিয়র শিক্ষিকা রাশিদা আক্তার বলেন, 'স্কুল থেকে আমরা প্রতিটি শিক্ষার্থীকে উন্নতমানের মাস্ক সরবরাহ করেছি। তারা যাতে স্কুলের বাইরেও মাস্ক পরিধান করে এবং সব স্বাস্থবিধি মেনে চলে,সেটাও ক্লাসে জানিয়েছি।'

বাছট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তৃতীয় শ্রেণীর শিক্ষার্থী জান্নাতুল ফেরদৌস এতোদিন পর স্কুলে এসেই খেলায় মেতে উঠেছে বন্ধুদের সাথে।

দীর্ঘদিন পর স্কুলে এসে তার প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে বাংলাদেশ পোষ্টকে সে বলে, 'খুবই ভালো লাগছে। সব বন্ধুদের সাথে অনেক দিন পর এক সাথে ক্লাস এবং ক্লাস শেষে খেলতে পারছি। মনে হলো আজ জেল থেকে মুক্ত হয়েছি।'

১৯১৫ সাথে স্থাপিত মানিকগঞ্জ জেলার অন্যতম প্রাচীন এই বাছট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির সভাপতি হিসাবে এই বছরের ২৬ মে থেকে কাজ করছে জাতীয় ইংরেজি দৈনিক বাংলাদেশ পোস্টের বিশেষ প্রতিবেদক হাবিবুল্লাহ মিজান।

তিনি এই প্রতিবেদককে বলেন, 'ম্যানেজিং কমিটির পক্ষ থেকে আমি সভাপতির দায়িত্ব নেওয়ার পরদিন থেকেই সকল স্কুলের সব সম্মানিত শিক্ষক-শিক্ষিকা এবং অভিভাবাকদের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছি। করোনা পরিস্থিতে শিক্ষাকার্যক্রম ভালোভাবে এগিয়ে নিতে স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকা এবং অভিভাবকদের যে কোনও প্রয়োজনে পাশে থাকবো।'

আরেকটি প্রশ্নের জবাবে হাবিবুল্লাহ মিজান বলেন, 'সভাপতি হিসেবে খবরদারি করতে আসিনি, সহায়ক ভুমিকায় কাজ করতেই এসেছি।'

তিনি বলেন, 'আমার দাদা মরহুম জরিফ আলী সরকার এলাকাবাসীকে সাথে নিয়ে ১৯১৫ সালে অজপাড়াগায়ে স্কুলটি প্রতিষ্ঠা করেছেন স্থানীয় মানুষদের মাঝে নিরক্ষরতার অভিশাপ দূর করে সবাইকে শিক্ষার আলোতে আলোকিত করতে। আমার আব্বা অবরপ্রাপ্ত স্কুলশিক্ষক একে এম ফজলুল হকও দীর্ঘদিন সভাপতি হিসাবে এই স্কুলের উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করেছেন। আমি নিজেও এই স্কুলের ছাত্র ছিলাম।'

'আমি স্কুলের সদ্য সাবেক সভাপতি ও স্থানীয় সাটুরিয়া ইউনিয়নের জনপ্রিয় চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন পিন্টু ভাইসহ এলাকার সব গণ্যমান্যদের পরমার্শ নিয়েই বাছট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়কে বাংলাদেশের অন্যতম সেরা স্কুল হিসেবে প্রতিষ্ঠার আপ্রাণ চেষ্টা করবো', যোগ করেন তিনি।     

এইচএম/এডিবি/