ন্যাভিগেশন মেনু

সিলেটে রায়হান হত্যা মামলার বিচার শুরু, পলাতক আসামির বিরুদ্ধে পরোয়ানা


সিলেট মহানগর পুলিশের (এসএমপি) বন্দরবাজার ফাঁড়িতে হেফাজতে রায়হান আহমদ হত্যা মামলার চার্জশিট (অভিযোগপত্র) অবশেষে গ্রহন করেছে আদালত। চার্জশিট দাখিলের প্রায় সাড়ে চার মাসের মাথায় এসে এই হত্যা মামলার বিচারকাজ শুরু হলো।

এদিকে, চার্জশিটভুক্ত পলাতক আসামি আব্দুল্লাহ আল নোমানের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত।

বৃহস্পতিবার (৩০ সেপ্টেম্বর) সকালে অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর আদালতের বিচারক আবুল মোমেন চার্জশিট গ্রহণ করেন। একইসাথে তিনি নোমানের বিরুদ্ধে পরোয়ানা জারি করেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মহানগর পুলিশের আদালত পরিদর্শক প্রদীপ চন্দ্র দাশ।

তিনি জানান, আজ আদালতে চার্জশিট গৃহিত হওয়ার সময় গ্রেপ্তারকৃত সকল আসামি হাজির ছিলেন।

বাদীপক্ষের আইনজীবী এম এ ফজল চৌধুরী জানান, চার্জশিটে নারাজি দেওয়ার মতো তেমন কিছু ছিল না। তাই নারাজি দেওয়া হয়নি। আদালত চার্জশিট গ্রহণ করেছেন। আজ আদালতে রায়হানের মা, স্ত্রী,  চাচাসহ স্বজনরা উপস্থিত ছিলেন।

গেল বছরের ১১ অক্টোবর ভোরে সিলেট শহরের আখালিয়ার এলাকার বাসিন্দা রায়হান আহমদকে বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে নিয়ে নির্যাতন করা হয়। পরে তাকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে তিনি সেখানে মারা যান। পরদিন তার স্ত্রী তাহমিনা আক্তার তান্নী কোতোয়ালি থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।

মামলাটির তদন্তে প্রথমে পুলিশ ছিল। পরে ১৩ অক্টোবর মামলাটি স্থানান্তর করা হয় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) কাছে। গত ৫ মে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআইয়ের পরিদর্শক আওলাদ হোসেন আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। ১ হাজার ৯০০ পৃষ্ঠার প্রতিবেদন দাখিল করা হয়।

যে ছয়জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দেওয়া হয়, তাদের পাঁচজনই পুলিশ সদস্য। তারা হলেন- বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়ির তৎকালীন ইনচার্জ এসআই আকবর হোসেন ভুঁইয়া, এসআই হাসান উদ্দিন, এএসআই আশেক এলাহী, কনস্টেবল টিটুচন্দ্র দাস ও হারুনুর রশিদ।

অভিযুক্ত অপরজন কোম্পানীগঞ্জের আব্দুল্লাহ আল নোমান। তার বিরুদ্ধে ঘটনার পর ভিডিও ফুটেজ গায়েব করার অভিযোগ রয়েছে।

অভিযুক্ত পাঁচ পুলিশ সদস্য কারাগারে থাকলেও নোমান এখনও পলাতক রয়েছেন। ধারণা করা হচ্ছে, সে ভারতে পালিয়ে গেছে।

এদিকে, পুলিশ হেফাজতে রায়হানের মৃত্যুর ঘটনায় ময়নাতদন্ত রিপোর্টে তার শরীরে ১১১টি আঘাতের চিহ্ন থাকার কথা উল্লেখ করা হয়।

প্রসঙ্গত, রায়হান হত্যা ঘটনার পর পালিয়ে যান এসআই আকবর। পরে গেল বছরের ৯ নভেম্বর দুপুরে সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার লক্ষীপ্রসাদ ইউনিয়নের ডোনা সীমান্ত এলাকা থেকে এসআই আকবর হোসেন ভূঁইয়া গ্রেফতার করে পুলিশ। পরদিন, ১০ নভেম্বর তাকে আদালতে হাজির করে সাত দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি চান তদন্ত কর্মকর্তা আদালত সাত দিনের আবেদনই মঞ্জুর করেন। রিমান্ড শেষে ১৭ নভেম্বর তাকে আদালতে হাজির করা হয়। আদালত আকবরকে কারাগারে প্রেরণের আদেশ দেন।

আইএইচ/সিবি/ওআ