ন্যাভিগেশন মেনু

২০২১ সালে চীনের জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৮.১ শতাংশ


চীনের জাতীয় পরিসংখ্যান ব্যুরো থেকে ১৭ জানুয়ারি প্রকাশিত পরিসংখ্যানে বলা হয়েছে, ২০২১ সালে চীনের জিডিপি’র মোট পরিমাণ দাঁড়ায় ১১৪ দশমিক ৪ ট্রিলিয়ন ইউয়ান, যা ২০২০ সালের তুলনায় ৮ দশমিক ১ শতাংশ বেশি। স্বাভাবিকভাবেই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির দিক দিয়ে চীন বিশ্বের বড় বড় অর্থনীতিগুলো থেকে এগিয়ে ছিল। ২০২১ সালে চীনের অর্থনীতির মোট পরিমাণ ছিল বিশ্বের মোট অর্থনীতির ১৮ শতাংশের বেশি। অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং মহামারী প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে ২০২১ সালে চীন বিশ্বে শীর্ষ স্থানে অবস্থান করছিল। ২০২১ সালে চীনের অর্থনীতির মোট পরিমাণ মার্কিন ডলারে ছিল প্রায় ১৭ দশমিক ৭ ট্রিলিয়ন। এ হিসেবে চীন ছিল বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি। ২০২১ সালে চীনে মাথাপিছু জিডিপি’র পরিমাণ ছিল ৮০ হাজার ৯৭৬ ইউয়ান বা ১২ হাজার ৫৫১ মার্কিন ডলার।

চীনের জাতীয় পরিসংখ্যান ব্যুরোর মহাপরিচালক নিং চি চ্য রাষ্ট্রীয় পরিষদের এক প্রেস ব্রিফিংয়ে বলেন, এতে চীনের বহুমুখী রাষ্ট্রীয় শক্তি, সামাজিক উৎপাদন-শক্তি, ও জনগণের জীবনমান উন্নয়ন প্রতিফলিত হয়েছে। 

তিনি বলেন, “অর্থনীতির মোট পরিমাণ ১১০ ট্রিলিয়ন ইউয়ানে পৌঁছেছে, যা সত্যিই একটি যুগান্তকারী ঘটনা, এবং সেই অনুযায়ী মাথাপিছু জিডিপিও বৃদ্ধি পেয়েছে। এটা বলা যেতে পারে যে, গত বছর চীনে মোট অর্থনীতির পরিমাণের ব্যাপকতা এবং মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি অব্যাহত ছিল। যার অর্থ হলো, চীনের জাতীয় শক্তি ও সামাজিক উৎপাদন-শক্তি বেড়েছে এবং জনগণের জীবনমানও আরও উন্নত হয়েছে। এ থেকে আরও প্রমাণিত হয় যে, চীনে উন্নয়নের একটি শক্তিশালী ভিত্তি আছে। বৈশ্বিক উন্নয়নে চীনের অবদানও এক্ষেত্রে স্পষ্ট।” 

২০২১ সালে চীনে শস্য উৎপাদনেও নতুন রেকর্ড সৃষ্টি হয়েছে। এ বছর শিল্প-উৎপাদন ও পরিসেবা শিল্পে পুনরুদ্ধারের প্রবণতা অব্যাহত ছিল। প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় শিল্প আগের বছরের তুলনায় যথাক্রমে ৭ দশমিক ১, ৮ দশমিক ২ ও ৮ দশমিক ২ শতাংশ বেড়েছে। পণ্যের বিক্রয়ও বেড়েছে উল্লেখযোগ্য হারে। গোটা বছরে ভোগ্যপণ্যের মোট খুচরা বিক্রয় হয়েছে ৪৪ ট্রিলিয়ন ইউয়ান, যা ২০২০ সালের তুলনায় ১২ দশমিক ৫ শতাংশ বেশি। আর স্থায়ী সম্পদে বিনিয়োগের পরিমাণ ২০২০ সালের তুলনায় ৪ দশমিক ৯ শতাংশ বেশি ছিল।

২০২১ সালে পণ্যের আমদানি ও রফতানির মোট পরিমাণ ছিল ৩৯ দশমিক ১ ট্রিলিয়ন ইউয়ান, যা ২০২০ সালের তুলনায় ২১ দশমিক ৪ শতাংশ বেশি।

মহাপরিচালক নিং চি চ্য বলেন, ২০২১ সালে অর্থনীতির ওপর চীনের অভ্যন্তরীণ সাইকেলের ভূমিকা ছিল স্পষ্ট; এসময় অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক সাইকেল পরস্পরকে পুষ্টি যুগিয়ে

দেশের অর্থনীতি আরও শক্তিশালী করেছে। তিনি বলেন, “২০২১ সালে চীনে ভোগ্যপণ্যের মোট খুচরা বিক্রয়ের পরিমাণ ছিল ৪০ ট্রিলিয়ন ইউয়ান; আর স্থায়ী সম্পদে বিনিয়োগের পরিমাণ ৫০ ট্রিলিয়ন ইউয়ান ছাড়িয়ে যায়। অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে অভ্যন্তরীণ ভোগের অবদান ছিল ৭৯ দশমিক ১ শতাংশ, যা ২০২০ সালের তুলনায় ৪ দশমিক ৪ শতাংশ পয়েন্ট বেশি।”

পরিসংখ্যানে আরও বলা হয়েছে, ২০২১ সালে চীনে ভোগ মধ্যম মানে বেড়েছে; কর্মসংস্থান পরিস্থিতি ছিল স্থিতিশীল; শহুরে বেকারত্বের হার হ্রাস পেয়েছে; বাসিন্দাদের আয়ও বেড়েছে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির সাথে তাল মিলিয়ে। ২০২১ সালে শহুরে ও গ্রামীণ বাসিন্দাদের মাথাপিছু আয়ের ব্যবধান কমেছে। 

মহাপরিচালক নিং বলেন, গত বছর চীনে জাতীয় অর্থনীতি অব্যাহতভাবে পুনরুদ্ধার হয়েছে এবং প্রধান প্রত্যাশিত লক্ষ্যগুলো সম্পূর্ণরূপে পূরণ হয়েছে। তিনি বলেন, “২০২১ সালে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার ছিল ৮ দশমিক ১ শতাংশ, যা প্রত্যাশিত লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৬ শতাংশ পয়েন্ট বেশি। শহরাঞ্চলে ১ কোটি ২৬ লাখ ৯০ হাজার মানুষ নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ পেয়েছে, যা প্রত্যাশিত লক্ষ্যমাত্রা ১ কোটি ১০ লাখের চেয়ে বেশি।”

মহাপরিচালক নিং আরও বলেন, সামষ্টিকভাবে দেখলে, ২০২১ সালে চীনের অর্থনীতি বরাবরই স্থিতিশীল ছিল এবং অর্থনীতির পুনরুদ্ধার-প্রক্রিয়া ছিল অব্যাহত। অর্থনীতির উন্নয়ন ও মহামারী প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে চীনের অবস্থান ছিল বিশ্বে শীর্ষ স্থানে। অর্থনীতির প্রধান সূচকগুলো ছিল প্রত্যাশিত লক্ষ্যের চেয়ে ভালো। - তথ্য: সিএমজি